বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে কোনও স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ,নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের পিছনে যুক্তি এবং বাস্তববোধ রয়েছে। হারের নির্বাচনের আগেই এই ধরনের কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিচারপতিদের বেঞ্চ- কেন বিহারে নির্বাচনের ঠিক আগে ভোটার তালিকায় সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বিরোধীদের দাবি, ভোটার তালিকায় সংশোধনের নামে বৈধ ভোটারদের বাদ দিয়ে বিজেপির সুবিধা করে দেওয়ার ফন্দি। পরের বছর বাংলায় ভোট। বিহারের পর বাংলার ক্ষেত্রেও একই ধরনের সংশোধন-নির্দেশিকা জারি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশনকে বিরত রাখতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয় একাধিক মামলা। ওই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি শুধাংশু ধুলিয়া এবং জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চের মত,'আপনাদের এই কর্মসূচি সমস্যার বিষয় নয়। কিন্তু প্রশ্নটা হল সময়... কেন নভেম্বরে বিহার নির্বাচনের আগেই এটা করতে হল? কেন অন্যান্য নির্বাচনে এটা হয় না?
ভোটার তালিকায় সংশোধন নিয়ে আপত্তির কিছু নেই বলে মনে করে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ,'ভোটার তালিকা যাচাই করা মোটেও ভুল নয়। এর মধ্যে নিশ্চিত করা হয়, অন্য দেশের নাগরিকরা ভোটার তালিকায় যেন না থাকেন। সংবিধান মেনেই কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এর পিছনে বাস্তববোধ রয়েছে। ওরা তারিখ ঠিক করে দিয়েছে কারণ,সেই সময় থেকে সব তথ্য কম্পিউটারে রয়েছে। ফলে তা যুক্তিগ্রাহ্য'।
ভোটার তালিকা যাচাইয়ে যে ১১টি নথি চেয়েছে নির্বাচন কমিশন, তার মধ্যে আধার কার্ড নেই। মামলাকারীর আইনজীবী অভিষের সিঙ্ঘভি বলেন,'গোটা দেশকে আধারের নামে পাগল করে দেওয়া হল। অথচ এখন বলা হচ্ছে, এটা প্রামাণ্য নথি নয়'। সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বলের কথায়,'আমরা নাগরিক কিনা সেটা বলার ওরা (নির্বাচন কমিশন) কে? ওদের প্রমাণ করতে হবে আমি নাগরিক নই'।
আধারকে কেন রাখা হল না? সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নে নির্বাচন কমিশন জানায়,'নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে আধার ব্যবহার করা যায় না'। সেই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী জানান, 'ভোটার তালিকা সম্পূর্ণ যাচাইয়ের পর চাইলে আদালত দেখতে পারে'।