Waqf Act: ওয়াকফ আইন সম্পূর্ণভাবে স্থগিত নয়, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট, তবে কিছু শর্তে স্থগিতাদেশ

সম্পূর্ণ আইনে স্থগিতাদেশ দেওয়ার কোনও যুক্তি দেখছে না সুপ্রিম কোর্ট। বদলে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের কয়েকটি অংশে স্থগিতাদেশ দিল দেশের শীর্ষ আদালত।

Advertisement
 ওয়াকফ আইন সম্পূর্ণভাবে স্থগিত নয়, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট, তবে কিছু শর্তে স্থগিতাদেশ

সুপ্রিম কোর্ট সোমবার ওয়াকফ সংশোধনী আইন, ২০২৫ আংশিক স্থগিত রাখার নির্দেশ দিল। যা নতুন এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করা মামলাকারীদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। দেশের শীর্ষ আদালত যে ধারাগুলি স্থগিত করেছে, সেগুলি মূলত কারা ওয়াকফ বোর্ড তৈরি করতে পারে এবং কারা দখল সংক্রান্ত বিরোধ হলে নিষ্পত্তি করবে তা সংক্রান্ত। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট ওয়াকফ বোর্ডগুলির গঠন নিয়েও কিছু পরামর্শ দিয়েছে। 

এদিন নয়া আইনের সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে বৃহত্তর মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্ট উল্লেখ করেছে, পুরো ওয়াকফ আইন স্থগিত রাখার মতো যথেষ্ট কারণ নেই। 

দেশের প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এদিন উল্লেখ করে, 'আমরা দেখেছি যে পুরো আইনটিকেই চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। কিন্তু মূল চ্যালেঞ্জ ছিল ৩(আর), ৩সি, ১৪ ধারাগুলির বিরুদ্ধে। আমরা ১৯২৩ সালের আইন থেকে আইন প্রণয়নের ইতিহাস পর্যালোচনা করেছি এবং প্রতিটি ধারার প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করেছি। তবে পুরো আইন স্থগিত রাখার মতো যুক্তি মেলেনি। যেসব ধারাগুলিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, সেগুলির ক্ষেত্রে আমরা স্থগিতাদেশ দিচ্ছি।' শুনানির সময়ে সুপ্রিম কোর্ট ৩(আর) ধারাটি স্থগিত করে। সেটিতে বলা রয়েছে, যে কোনও ব্যক্তি ওয়াকফ তৈরি করতে চাইলে তাঁকে অন্তত ৫ বছর ধরে ইসলামের অনুসারী হতে হবে। আদালত জানিয়েছে, একজন ব্যক্তি ইসলামের অনুসারী কি না, তা নির্ধারণের জন্য নিয়ম তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এই বিধান স্থগিত থাকবে।'

আইনে উল্লেখ রয়েছে, ওয়াকফ সম্পত্তি আর ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে না, যতক্ষণ না সরকার নিযুক্ত অফিসার তার প্রতিবেদন জমা দেন, যে সেটি আদৌ দখল হয়েছে কি না। বেঞ্চ জানিয়েছে এই ধারা আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে। 

সুপ্রিম কোর্ট ৩সি(৪) ধারাটিও স্থগিত করেছে। এই ধারা জেলাশাসককে ক্ষমতা দিয়েছিল কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি ওয়াকফ হিসেবে ঘোষিত হলে তা সরকারি সম্পত্তি কি না, তা নির্ধারণ করতে এবং সেই সংক্রান্ত আদেশ দিতে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, জেলাশাসককে নাগরিকদের অধিকার নির্ধারণের অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা বিভাজনের নীতির পরিপন্থী। 

Advertisement

প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, কোনও জেলাশাসককে নাগরিকদের অধিকার নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া যায় না। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, আপাতত ৯ ও ১৪ ধারা অনুসারে, ওয়াকফ বোর্ডের সর্বোচ্চ ৩ জন অমুসলিম সদস্য এবং ওয়াকফ কাউন্সিলে মোট সর্বোচ্চ অমুসলিম ৪ জন সদস্যকে অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে। যতদূর সম্ভব এক্স অফিসিও কর্মকর্তা মুসলিম সম্প্রদায়ের হওয়া উচিত ধারা ২৩ অনুসারে। 

তবে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত ধারায় হস্তক্ষেপ করেনি এবং জানিয়েছে, ১৯৯৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন চালু ছিল এবং আবার আবেদন শুরু হয়েছে। এটি কোনও নতুন বিষয় নয়।  

গত ২২ মে, টানা ৩ দিন ধরে দুই পক্ষের যুক্তি শোনার পর ওয়াকফ সংশোধনী আইন, ২০২৫ সংক্রান্ত মামলায় অন্তর্বর্তী রায় সংরক্ষিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সংসদে এ বছরের শুরুর দিকে পাশ হওয়া ওয়াকফ সংশোধনী আইন, ২০২৫-এর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হয়েছিল মামলাগুলি। 

 

POST A COMMENT
Advertisement