পরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে পথকুকুরের কামড়ের খবর দেখেই আদালত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করে।Supreme Court on stray dogs: রাস্তার কুকুর নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ রাজ্যগুলিকে তিরস্কার করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার আদালত জানায়, রাজ্যগুলির উদাসীনতার কারণে দেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা ও এন ভি আঞ্জারিয়া; তিন বিচারপতির বেঞ্চ বিষয়টি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানান, একের পর এক কুকুরের হামলার খবর আসছে। এই ধরনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। আদালত জানিয়েছে, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা ও দিল্লি পুরনিগমই এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছে। বাকিরা কোনও রিপোর্টই দেয়নি। তাই আগামী সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। আদালত জানায়, নির্দেশ না মানলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জরিমানাও হতে পারে।
বিচারপতি বিক্রম নাথের প্রশ্ন, 'সবাই এখনও রিপোর্ট দিল না কেন? মুখ্যসচিব যেন কারণ ব্যাখ্যা করেন। না হলে জরিমানা লাগু হবে, বলপূর্বক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।' তিনি আরও বলেন, 'সব রাজ্যকেই নোটিস দেওয়া হয়েছিল। আপনারা সংবাদপত্র পড়েন না? সোশ্যাল মিডিয়া দেখেন না? সবাই সব জানে, তবুও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি!'
আদালতের নিজস্ব উদ্যোগেই এই মামলা শুরু হয়। পরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে পথকুকুরের কামড়ের খবর দেখেই আদালত স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করে।
এর আগে আদালত জানিয়েছিল, প্রাণী জন্মনিয়ন্ত্রণ (Animal Birth Control) আইন অনুযায়ী সব রাজ্যকে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ রাজ্যই সেই নির্দেশ মানেনি।
আগের এক নির্দেশে আদালত জানিয়েছিল, নির্বীজকরণ ও টিকা দেওয়ার পর পথ কুকুরদের তাদের পুরনো এলাকাতে ফিরিয়ে দিতে হবে। কেবলমাত্র সংক্রমিত বা পাগলা কুকুরদের শেল্টারে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া প্রকাশ্যে কুকুরদের খাওয়ানোও নিষিদ্ধ করা হয়। নির্দিষ্ট ফিডিং জোন তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিন আদালত জানায়, আগামী ৩ নভেম্বর সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে আদালতে হাজিরা দিতে হবে। আদালতের কথায়, 'আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছি। সব রাজ্যকেই হাজিরা দিতে হবে।'
ইদানিং দেশজুড়ে রাস্তার কুকুরের সমস্যা বড় আকার নিয়েছে। বহু জায়গায় শিশুদের উপর কুকুরের হামলার খবর আসছে। পশুপ্রেমীরাও আদালতের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত। তাঁরা বলছেন, রাস্তার কুকুর ভালবাসলে, তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি কখনই কাম্য নয়। এর জন্য প্রতিটি কুকুরের নির্বীজকরণ করতে হবে। সরকারি উদ্যোগে ছাড়া যা সম্ভব নয়। কারণ এর খরচ কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে টানা মুশকিল। এবার এই বিষয়ে রাজ্য সরকারগুলি কী উদ্যোগ নেয়, এখন সেটাই দেখার।