সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়া নিয়ে এবার নাম না করে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিল আফগানিস্তান। সেখানকার তালিবান সরকারের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ভারতে রয়েছেন। ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই তিনি নাম না করে পাকিস্তানকে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দেন। মুত্তাকি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে আফগানিস্তানের মাটিকে অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।
শুক্রবার হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ক্লোজ ডোর মিটিং করেন মুত্তাকি। বৈঠকে তালিবান মন্ত্রী ভারতকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে আফগানিস্তান তার ভূখণ্ড কোনও দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেবে না, যা সরাসরি পাকিস্তানের দিকে ইঙ্গিত করে। বৈঠকের পর এক সাংবাদিক বৈঠকে মুত্তাকি জানান যে জয়শঙ্করের সঙ্গে তাঁর আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। উভয় পক্ষ বাণিজ্য, উন্নয়ন এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়াতে সম্মত হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আফগানিস্তানে উন্নয়ন প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ার এবং সম্প্রসারণের ভারতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও বন্যার সময় ভারতের মানবিক সহায়তার জন্যও মুত্তাকি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মুত্তাকি ঘোষণা করেন যে দুই দেশ একটি যৌথ বাণিজ্য কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কমিটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের অসুবিধাগুলি সমাধানের জন্য কাজ করবে। ২০২১ সালের অগাস্টে তালিবানের ক্ষমতায় ফিরে আসার ফলে আফগানিস্তান ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের গতি বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। এই কমিটি অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বকে আরও বাড়াতে কাজ করবে।
নিরাপত্তার ব্যাপারে পাকিস্তানকে পরোক্ষভাবে হুমকি
তালিবানের বিদেশমন্ত্রী মুত্তাকি বলেছেন যে আফগান সরকার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, 'আমরা নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমরা আফগান মাটিকে কোনও দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেব না। উভয় পক্ষই এই বিষয়ে যোগাযোগ রাখবে।'
পাকিস্তান এবং তার মদদপুষ্ট জঙ্গিরা এর আগেও ভারতের বিরুদ্ধে আফগান মাটি ব্যবহার করেছে। ভারত তালিবানের কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরে। তারপরেই তালিবানের বিদেশমন্ত্রী ভারতকে এই আশ্বাস দিয়েছেন। পাকিস্তান সম্পর্কে পরোক্ষ মন্তব্যে মুত্তাকি পেরিয়ে আসা থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন যে এই ধরনের কৌশল কোনও সমস্যার সমাধান করবে না। তিনি আরও বলেন, 'আফগান জনগণের ধৈর্য এবং সাহসকে চ্যালেঞ্জ করা উচিত নয়। যদি কারও সন্দেহ থাকে, তাহলে ব্রিটেন, সোভিয়েত রাশিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে জিজ্ঞাসা করা উচিত।' তবে, মুত্তাকি সুর নরম করে বলেন যে ভারত ও পাকিস্তান, দুই দেশের সঙ্গেই শান্তিপূর্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায় আফগানিস্তান। কিন্তু এটা একতরফাভাবে সম্ভব হবে না।