তামিলনাড়ুতে অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ বিজয়ের সমাবেশে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃতদের পরিবার ও আহতদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০,০০০ টাকা সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। শনিবার তামিলনাড়ুর করুরে অভিনেতা বিজয় একটি মেগা সমাবেশ করেছিলেন। রাস্তা এবং আশপাশের এলাকায় প্রচুর ভিড় জড়ো হয়েছিল। রাত নামতে না নামতেই ভিড় আরও বাড়তে থাকে। ভিড়ের চাপে সেখানে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। এখনও পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। বহু মানুষ আহত হয়েছেন।
সমাবেশস্থলে জুতো ও চপ্পল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল। খুঁটি ভাঙা ছিল, কাগজপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে তাঁরা কোনও রাজনৈতিক সমাবেশে এত মানুষের মৃত্যু কখনও দেখেননি। তাঁরা বিশ্বাস করেন যে বিজয়ের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করা এই ট্র্যাজেডির মূল কারণ। কারণ, হাজার হাজার মানুষ সমাবেশস্থলে জড়ো হয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে, অনুষ্ঠানটি ছিল একটি উদযাপন অনুষ্ঠান। কিন্তু অভিনেতা বিজয় মঞ্চে তাঁর ভাষণ শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই জনতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। যার ফলে অনেকেই চাপা পড়ে যান। ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে ১৬ জন মহিলা এবং ১০ জন শিশু। আহতদের চিকিৎসা চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, লোকজন বিজয়ের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করতেই পদপিষ্টের ঘটনা শুরু হয়। কেউ কেউ টিনের বেড়া সরাবার চেষ্টা করলে অনেকেই পড়ে যান। ভিড়ের মধ্যে আটকে পড়ে তাঁরা বুঝতে পারছিলেন না কী হচ্ছে। তারা সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শুরু করেন, কিন্তু সরু রাস্তা ও বিশাল ভিড় পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তোলে।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন রাতে করুরে পৌঁছে আহত এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি নিহতদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। আহতদের চিকিৎসার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সকল সহায়তার আশ্বাস দেন। প্রশাসন করুর জেলা হেল্পলাইন নম্বরও চালু করেছে। যাতে ক্ষতিগ্রস্তরা সহায়তা পেতে পারেন। এম কে স্ট্যালিন এই ঘটনাকে সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের সবচেয়ে ভয়াবহ ট্র্যাজেডির একটি বলে বর্ণনা করেছেন এবং অবসরপ্রাপ্ত হাইকোর্টের বিচারপতি অরুণা জগদীশনের নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা করেছেন। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য তিনি চেন্নাইতে একটি জরুরি বৈঠক করেছেন। এদিকে, অভিনেতা-রাজনীতিবিদ বিজয়ের বাসভবনের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
করুর জেলা পুলিশ দলের তামিলাগা ভেটরি কাজ়াগম (টিভিকে) দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে বিবেচিত আনন্দ এবং টিভিকে-র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমারের বিরুদ্ধে পৃথক এফআইআর দায়ের করেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় দলীয় নেতাদের ভূমিকা নিয়ে কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে।