ফের বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের মন্তব্যে বিতর্ক। দিল্লির সাহিত্য উৎসবের মঞ্চ থেকে পহেলগাঁও হামলা নিয়ে তিনি বলেন, 'যতদিন ইসলাম ধর্ম থাকবে ততদিন সন্ত্রাসবাদ থাকবে।'
নির্বাসিত এই লেখিকার মতে, ১৪০০ বছর ধরে ইসলামের কোনও পরিবর্তন হয়নি। যতদিন না এই ধর্মের পরিবর্তন হচ্ছে এটি সন্ত্রাসবাদের জন্ম দিতেই থাকবে। পহেলগাঁও হামলার ঘটনাকে তিনি ২০১৬ সালে ঢাকায় হোলি আর্টিজেন বেকারি হামলার সঙ্গে তুলনা করেন। তসলিমার কথায়, 'ঢাকায় মুসলিমদের হত্যা রা হয়েছিল কারণ তাঁরা কলমা পড়তে পারেননি। এমনটাই হয় যখন ভক্তি মানবতার থেকে বড় হয়ে দাঁড়ায়।'
গত ২২ এপ্রিল জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয় ভূস্বর্গ। পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হন ২৬ পর্যটক। প্রত্যক্ষদর্শী পরিজনরা অনেকেই জানিয়েছেন, বেছে বেছে হিন্দুদের গুলি করে জঙ্গিরা। তাঁদের কলমা পড়তে বলা হয়। যাঁরা পড়তে পারেনি তাঁদের গুলি করা হয়েছে।
তসলিমা বলেন, 'ইউরোপে গির্জাগুলিকে জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে। আর মুসলিমরা চতুর্দিকে মসজিদ নির্মাণ করে চলেছেন। হাজার হাজার মসজিদ রয়েছে অথচ তাঁদের আরও চাই। মাদ্রাসা তুলে দেওয়া উচিত। একটা নয়, শিশুদের সমস্ত বই পড়ার অধিকার থাকা উচিত।'
১৯৯৪ সাল থেকে নির্বাসনে রয়েছেন ৬২ বছরের তসলিমা। সুইডেন এবং আমেরিকার পর বর্তমানে দিল্লিতে বাস করেন তিনি। তসলিমার কথায়, 'আমি আমেরিকার স্থায়ী নাগরিক, ১০ বছর সেখানে ছিলাম। তবে সর্বদাই বহিরাগত মনে হয়েছে নিজেকে। কলকাতায় এসে ঘরে ফিরেছি মনে হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ থেকে আমায় বের করে দেওয়া হলেও দিল্লিই দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে যায়। আমার নিজের দেশ যা আমায় দিতে পারেনি, ভারত তা দিয়েছে। আই লভ ইন্ডিয়া। এটাই আমার ঘর।'
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও হা হুতাশ করতে শোনা যায় লেখিকাকে। তিনি বলেন, 'প্রত্যেক সভ্য দেশে একটি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি থাকা উচিত। ভারতেও থাকা উচিত। আমি বিষয়টিকে সমর্থন করি। তবে ইসলামের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ চায় ধর্মের ভিত্তিতে অধিকার পাক সকলে। সংস্কৃতির নাম করে যদি মহিলাদের নিরাপত্তার সঙ্গে সমঝোতা করতে হয় তবে সেই সংস্কৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা উচিত। যে সমাজ নিজেদের অর্ধেক নাগরিককে সুরক্ষা দিতে পারে না সেই সমাজ ব্যর্থ।'