১৭ অক্টোবর আকাশে উড়বে দেশে তৈরি স্বদেশীয় যুদ্ধবিমান তেজস এমকে১এ। হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল) ১৭ অক্টোবর তাদের নাসিক প্ল্যান্ট থেকে এই যুদ্ধবিমানের প্রথম উড়ান শুরু করবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। তিনি তেজস প্রকল্পের তৃতীয় উৎপাদন লাইনের উদ্বোধনও করবেন। এইচটিটি-৪০ প্রশিক্ষণ বিমানের দ্বিতীয় লাইনটিও চালু করা হবে। তবে, এই বিমানগুলি হাতে পাওয়ার জন্য ভারতের বিমান বাহিনীকে (আইএএফ) আরও অপেক্ষা করতে হবে।
নাসিক থেকে প্রথম উড়ান: বিশেষ কী?
নাসিক হল এইচএএল-এর তৃতীয় উৎপাদন কেন্দ্র। যেখানে তেজস বিমান তৈরি হচ্ছে। ১৭ অক্টোবর তেজস এমকে১এ-এর প্রথম উড়ান একটি মাইলফলক হবে। এইচএএল ইতিমধ্যে দশটি বিমান তৈরি করেছে এবং পরীক্ষা চালিয়েছে। একটি বিমান নাসিক থেকে ডেলিভারি জন্য প্রস্তুত। তবে, প্রথম উড়ানের পরের পরীক্ষা এবং অস্ত্র ফিটিং বাকি রয়েছে। অতএব, প্রথম বিমান পেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে ভারতীয় বিমান বাহিনীর।
ডেলিভারিতে দেরি: মূল কারণ: ইঞ্জিন?
IAF এক বছরেরও বেশি সময় ধরে Tejas Mk1A-এর জন্য অপেক্ষা করছে। ডেলিভারি চার চতুর্থাংশ (প্রায় এক বছর) দেরিতে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল আমেরিকান কোম্পানি জেনারেল ইলেকট্রিক (GE) থেকে F-404 ইঞ্জিনের ডেলিভারিতে বিলম্ব। HAL এখনও পর্যন্ত মাত্র চারটি ইঞ্জিন পেয়েছে। এই মাসে আরও দুটি ইঞ্জিন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৩০ সেপ্টেম্বর চতুর্থ ইঞ্জিন এবং সেপ্টেম্বরে তৃতীয়টি সরবরাহ করবে আমেরিকান সংস্থাটি। উৎপাদন বাড়াতে HAL-এর অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে দুটি ইঞ্জিনের প্রয়োজন।
F-404 ছাড়াও, দশটি F-414 ইঞ্জিন ইতিমধ্যেই এসেছে। আরও ৯৭টি Tejas ইঞ্জিনের জন্য ১১৩টি F-404 ইঞ্জিনের চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। খরচ নিয়ে আলোচনা শেষ হয়েছে এবং কেবল চুক্তি স্বাক্ষর বাকি রয়েছে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (CCS) চুক্তিটি অনুমোদন করেছে। HAL কর্তারা বলছেন যে ইঞ্জিন সরবরাহ ঠিক থাকলেই বিমানের ডেলিভারি সময়ে হবে।
৩ অক্টোবর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং বলেন যে তেজস এমকে১এ-এর জন্য অপেক্ষা করা আর খাবারের জন্য অপেক্ষা করা ক্ষুধার্ত মুখ এক। আগে জানানো হয়েছিল যে অক্টোবরে দুটি বিমান সরবরাহ করা হবে, কিন্তু তা এখনও নিশ্চিত নয়। এই দেরি ভারতীয় বিমান বাহিনীর শক্তির উপর প্রভাব ফেলছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা: কতটি বিমান এবং কখন?
৮৩টি তেজস এমকে১এ এখন ২০২৯ সালের মধ্যে সরবরাহ করার কথা রয়েছে। ২৫ সেপ্টেম্বর ৯৭টি অতিরিক্ত বিমানের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এগুলি ২০২৭-২৮ সালে সরবরাহ শুরু হবে এবং ২০৩৩-৩৪ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। যা ভারতীয় বিমান বাহিনীকে শক্তিশালী করবে।
তেজস Mk1A কী এবং এটি কেন গুরুত্বপূর্ণ?
তেজাস হল হালকা যুদ্ধ বিমান (LCA)। এটি ভারতের প্রথম দেশীয় যুদ্ধ বিমান। Mk1A হল এর আপগ্রেডেড সংস্করণ, উন্নত রাডার, ইঞ্জিন এবং অস্ত্র সহ। এটি ওজনে হালকা কিন্তু আরও শক্তিশালী।
কেন বিলম্ব হচ্ছে? ইঞ্জিন আমদানি করা হয়। সাপ্লাই চেনে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু HAL বাকি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
লাভ কী? দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হলে আমদানি কমবে এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। ভারতীয় বিমানবাহিনী আধুনিক জেট পাবে, যা শত্রু বিমানের মোকাবিলা করবে। এই প্রকল্প ভারতের প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করবে।