অপারেশন সিঁদুরের পরে প্রথমবার জম্মু ও কাশ্মীর সফরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি শ্রীনগরের বাদামিবাগে চিনার কর্পস-র সদর দফতর যান। সেনা ও বিমান বাহিনীর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়াও পাকিস্তানি সেনার ছোড়া গোলাগুলি পরিদর্শন করেছেন। বক্তব্য রাখতে গিয়ে পাকিস্তানকে তুলোধোনা করেন রাজনাথ। তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে জঙ্গি দমনে ভারত যে কোনও দূর পর্যন্ত যেতে পারে। এছাড়াও পাকিস্তানের পরমাণু ব্ল্যাকমেলিংকে ভারত ভয় পায় না বলেও জানিয়েছেন।
রাজনাথ বলেন, 'পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারানো সকল নিরীহ নাগরিক এবং 'অপারেশন সিঁদুর'-এর সময় শহিদ হওয়া আমাদের সেনাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। আমি আমাদের আহত সেনাদের সাহসকে স্যালুট জানাই এবং ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি যে তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুস্থ হয়ে উঠুন। আপনাদের সেই শক্তি আমি অনুভব করতে পেরেছি, যা শত্রুদের ধ্বংস করেছিল। সীমান্তের ওপারে পাকিস্তানি পোস্ট এবং বাঙ্কার ধ্বংস করার পদ্ধতি শত্রুরা কখনও ভুলবে না। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে মানুষ সাধারণত উত্তেজনায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু আপনারা উৎসাহ, বিবেক বজায় রেখেছেন এবং বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে শত্রুর লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছেন। আজ আমি এখানে কেবল প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নয়, একজন নাগরিক হিসেবেও এসেছি। আমি সমগ্র দেশের শুভকামনা, প্রার্থনা এবং কৃতজ্ঞতা বয়ে নিয়ে আপনাদের মাঝে এসেছি। এক অর্থে আপনারা বুঝতে পারছেন যে আমি আপনাদের মাঝে একজন ডাকপিয়ন হিসেবে এসেছি এবং দেশবাসীর কাছ থেকে একটি বার্তা নিয়ে এসেছি। বার্তাটি হল, 'আমরা আমাদের বাহিনীর জন্য গর্বিত'।'
রাজনাথ বলেন, 'আপনাদের মনে থাকবে যে প্রায় একুশ বছর আগে এই পাকিস্তানই ইসলামাবাদে অটলজির সামনে ঘোষণা করেছিল যে তাদের মাটি থেকে আর সন্ত্রাসবাদ রফতানি করা হবে না। কিন্তু পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এবং আজও করছে। এখন তাদের এর জন্য চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। আর এই খরচ ক্রমাগত বাড়বে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সংকল্প আজ কতটা দৃঢ়, তা অনুমান করা যায় যে আমরা তাদের পরমাণু ব্ল্যাকমেলের দিকেও মনোযোগ দেইনি। গোটা বিশ্ব দেখেছে যে পাকিস্তান কত দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে ভারতকে বেশ কয়েকবার পরমাণু হুমকি দিয়েছে। আজ শ্রীনগরের মাটি থেকে আমি সমগ্র বিশ্বের সামনে এই প্রশ্নটি উত্থাপন করতে চাই, এমন একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং দুর্বৃত্ত জাতির হাতে কি পরমাণু অস্ত্র নিরাপদ? আমি বিশ্বাস করি যে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার তত্ত্বাবধানে (International Atomic Energy Agency) নেওয়া উচিত।'