খতম নকশাল কম্যান্ডর হিদমা।তার নাম শুনলেও চিন্তায় পড়ে যেতেন দুঁদে সেনাকর্তারা। দীর্ঘদিন গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিয়ে বেড়িয়েছে সে। অবশেষে মঙ্গলবার নিরাপত্তা বাহিনীর অপরাশেনে খতম হল কুখ্যাত নকশাল কম্যান্ডার মাদভি হিদমা(৪৩)(Madvi Hidma)। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কিষেণজির পর নকশালদের সবচেয়ে বড় নেতা ছিল এই হিদমাই। তার মাথার দাম ছিল ৪৫ লক্ষ টাকা। ২০১৩ র নৃশংস দরভা ভ্যালি গণহত্যা থেকে শুরু করে ২০১৭ র ভয়াবহ সুকমা হামলা; প্রায় ২৬টি ভয়ঙ্কর নাশকতার মাস্টারমাইন্ড ছিল এই নকশাল নেতা।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি ছত্তিসগড়-অন্ধ্রপ্রদেশের সীমানা লাগোয়া অল্লুরি সীতারাম জেলার জঙ্গলে সার্চ অপারেশন শুরু হয়। গ্রেহাউন্ডস বাহিনীর বিশেষ প্রশিক্ষিত জওয়ানরা তন্ন তন্ন করে জঙ্গলে তল্লাশি শুরু করেন। সেই সময় আচমকাই নকশালদের ঘাঁটি পৌঁছে যান তাঁরা। শুরু হয় ভয়ঙ্কর গুলির লড়াই, বিস্ফোরণ। গ্রেহাউন্ডসদের গুলিতে খতম হয় ছয়জন নকশাল। তাঁদের মধ্যে একাধিক শীর্ষ কম্যান্ডার আছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে তা এখনও সরকারিভাবে কনফার্ম করা হয়নি।
মাদভি হিদমা
• আসল নাম: সন্তোষ
• জন্ম: ১৯৮১, পূর্বতন সুকমা(ছত্তিশগড়)
• পদ: নকশালদের সবচেয়ে আগ্রাসী ইউনিট, পিএলজিএ ব্যাটালিয়ন নং ১ এর প্রধান। তার খোঁজ পেতে ৫০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
• সিপিআই(মাওবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিল।
• হিদমার পাশাপাশি তার দ্বিতীয় স্ত্রী রাজে (রাজাক্কা)ও এদিন নিহত হয়েছে।
একের পর এক নাশকতা:
• ২০১০ দান্তেওয়াড়া অ্যাটাক: ৭৬ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন।
• ২০১৩ সালের ঝিরাম উপত্যকা গণহত্যা: কংগ্রেসের বড় নেতা সহ ২৭ জন নিহত হন।
• ২০২১ সালে সুকমা বিজাপুর সংঘর্ষ: ২২ জন নিরাপত্তা কর্মী শহিদ হন।
নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন জানালেন অমিত শাহ
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ এর মধ্যে হিদমাকে খতম করার জন্য ডেডলাইন দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিনের সাফল্যের পর নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সূত্রের খবর, আপাতত হিদমার ঘাঁটির আশেপাশে লাগাতার সার্চ অপারেশন চলবে। এখনও(প্রতিবেদন লেখার সময়) মাঝে মাঝেই গুলির শব্দে কেঁপে উঠছে গোটা বনাঞ্চল। গত কয়েকদিন ধরেই ওই এলাকায় নকশালদের খোঁজে নেমেছিলেন সেনা জওয়ানরা। পুরোটাই গোয়েন্দাদের দেওয়া গোপন খবরের ভিত্তিতে। শুরু হয় বিশেষ অভিযান। আপাতত রীতিমতো জঙ্গলের প্রতিটি ইঞ্চি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গিয়েছে। সেনাবাহিনীর ভাষায় একে বলে, 'কম্বিং মেথড'। অর্থাৎ, যেভাবে উকুন ভর্তি চুলে চিরুনি চালিয়ে পোকা বের করে আনা হয়, ঠিক সেভাবেই জঙ্গলের প্রতিটি অংশ খতিয়ে দেখা হবে।