পুতিনের পর ভারতে আসছেন জেলেনস্কিরুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের পর এবার ভারত সফরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারসাম্য রক্ষার বার্তা দিতেই এই মাষ্টারস্ট্রোক নয়াদিল্লির। ২০২৬ সালের জানুয়ারিতেই দিল্লি সফরে আসতে পারেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। যদিও দিন তারিখ এখনও স্পষ্ট করা হয়নি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি রিপোর্ট অনুসারে, নয়াদিল্লির তরফে গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের নয়াদিল্লি সফরের আগে থেকেই এই চেষ্টা চলছে বলে সূত্রের দাবি। ভারতীয় ও ইউক্রেনীয় আধিকারিকদের মধ্যে সফরের বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকদফা আলোচনাও হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলেনস্কির এই সফর রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের আবহে উভয় পক্ষের সঙ্গেই ভারতের ভারসাম্যকে আরও জোরদার করবে। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, কূটনৈতিক রাস্তায় বেশ কয়েক মাস ধরে এই নীতি অনুসরণ করছে নয়াদিল্লি। যেমন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২৪-এর জুলাই মাসে মস্কো সফর করে পুতিনের সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু এরপরেই মাত্র এক মাস পরে আগস্টে ইউক্রেন সফর করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রস্তাবিত সফরের সময় নির্ভর করবে বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা কীভাবে এগিয়ে যায় এবং রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে কী ঘটে তার উপর। এছাড়াও, ইউক্রেনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, বিশেষ করে জেলেনস্কির সরকার বর্তমানে একটি বড় দুর্নীতি কেলেঙ্কারির কারণে চাপের মধ্যে রয়েছে। এগুলিও প্রস্তাবিত সফরের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এখন পর্যন্ত মাত্র তিনবার ভারত সফর করেছেন। তাও কমপক্ষে ১৩ বছর আগে। ১৯৯২, ২০০২ এবং সবশেষে ২০১২ সালে কোনও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভারত সফর করেছিলেন। সেই দিক থেকে এই সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
অন্যদিকে, পুতিনের ভারত সফর ইউরোপ গভীরভাবে লক্ষ্য করেছে। বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূত ভারতকে যুদ্ধ বন্ধের জন্য মস্কোর উপর চাপ প্রয়োগের পক্ষেও সওয়াল করেছেন। যদিও ভারত ধারাবাহিকভাবে প্রথম থেকেই বলে আসছে যে, যুদ্ধ বন্ধের ক্ষেত্রে আলাপ-আলোচনা এবং কূটনীতিই একমাত্র পথ।
এমনকী খোদ পুতিনের ভারত সফরের সময়ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে বলেছিলেন, ভারত নিরপেক্ষ নয়, বরং শান্তির পক্ষে। ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে ভারত এই নীতি দীর্ঘদিন ধরেই বজায় রেখেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারত পুতিন এবং জেলেনস্কি উভয়ের সঙ্গেই যোগাযোগ রেখেছে। মোদী কমপক্ষে ৮ বার জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং দুই রাষ্ট্রনেতা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে কমপক্ষে চারবার দেখাও করেছেন। ফলে জেলেনস্কির ভারত সফর মোটেই অসম্ভবও নয়।