রাস্তায় ট্র্যাফিক জ্যামে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে শত শত গাড়ির হর্ন বাজার বিকট শব্দে বিরক্ত হয়েছেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। তবে এবার সেই কানে তীক্ষ্ণ বাজা হর্নের বদলে হয়তো ভেসে আসবে সানাই, বাঁশি, তবলা বা বেহালার সুর। এমনই অভিনব পরিকল্পনার কথা জানালেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়কমন্ত্রী নীতিন গড়করি।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী জানান, যানবাহনের হর্নকে আরও শ্রুতিমধুর করতে কেন্দ্র একটি নতুন আইন আনার পরিকল্পনা করছে। তিনি বলেন, "আমরা চাই, রাস্তার হর্নের শব্দ আরও স্নিগ্ধ হোক। তাই ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রের সুর যেমন বাঁশি, সানাই, তবলা, বেহালা, হারমোনিয়াম যেন হর্নে ব্যবহার হয়, সেই উদ্যোগ নিচ্ছি।"
শব্দ দূষণ রোধই মুখ্য উদ্দেশ্য
গাড়ির হর্ন থেকে যে বিকট আওয়াজ তৈরি হয়, তা শুধু বিরক্তিকরই নয়, জনস্বাস্থ্যের উপরেও এর প্রভাব ফেলে। শারীরিক ও মানসিক সমস্যার জন্ম দেয় এই অতিরিক্ত শব্দ দূষণ। সেই দিকটি ভেবেই হর্নের স্বরকে ‘সুরেলা’ করে তোলার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র। গড়করি বলেন, এই পরিকল্পনা কার্যকর হলে শব্দ দূষণ অনেকটাই কমবে এবং সাধারণ মানুষও স্বস্তি পাবেন।
পরিবহণ খাতেই মূল দূষণের উৎস
মন্ত্রী জানান, দেশের মোট বায়ু দূষণের প্রায় ৪০ শতাংশের জন্য দায়ী পরিবহণ খাত। সেই কারণে কেন্দ্র পরিবহণে ইথানল ও মিথানল জাতীয় জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর দিকে মন দিচ্ছে। পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহ দিতে নানা পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে।
গাড়ি শিল্পে ভারত এখন বিশ্বের তৃতীয়
মন্ত্রী এদিন ভারতের অটোমোবাইল শিল্পের অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০১৪ সালে যেখানে দেশের গাড়ি শিল্পের মূল্য ছিল ১৪ লক্ষ কোটি টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ২২ লক্ষ কোটি টাকা। তিনি বলেন, “আজ আমরা জাপানকে পিছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম গাড়ির বাজার হয়ে উঠেছি। আমাদের সামনে এখন শুধু আমেরিকা ও চিন।”
‘হর্ন প্লিজ’ বদলে ‘মিউজিক প্লিজ’?
হর্নে যদি সত্যিই সানাই বা তবলাও বাজে, তাহলে গাড়ির পিছনে লেখা ‘হর্ন প্লিজ’ বদলে ভবিষ্যতে দেখা যেতে পারে ‘মিউজিক প্লিজ!’ এমনই রসিক মন্তব্য করেও শেষ করেন মন্ত্রী। এখন শুধু অপেক্ষা, এই সুরেলা হর্ন আইন কত দ্রুত বাস্তবায়িত হয় এবং ভারতের রাস্তায় কেমন বদল আনে।