উত্তরপ্রদেশের বহারাইচ জেলা বর্তমানে ভয়াবহ নেকড়ের আতঙ্কে তটস্থ। গত দু মাসে এই অঞ্চলে নেকড়ের হামলায় বেশ কয়েকজন আহত ও নিহত হয়েছেন। নেকড়েদের ভয়ঙ্কর তাণ্ডবের সর্বশেষ শিকার হলো এক ২ বছরের শিশুকন্যা, যাকে রবিবার রাতে নেকড়েরা আক্রমণ করে হত্যা করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে আরও দুই মহিলা গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
নেকড়ের আক্রমণের ঘটনাগুলি স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে গভীর আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নেকড়েরা বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ছে এবং আক্রমণ করছে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। গত দু’মাসে ২৫ জনের বেশি মানুষ নেকড়ের হামলায় আহত হয়েছেন, এবং এই ভয়ঙ্কর প্রাণীদের হাতে সাতটি শিশুর মৃত্যু ঘটেছে।
বনদফতর ইতিমধ্যেই ২২টি দল গঠন করেছে নেকড়েদের পাকড়াও করার জন্য, যেখানে রয়েছে শিকারি এবং বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞরা। ড্রোন, নাইট ভিশন এবং অন্যান্য আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে নেকড়েদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪টি নেকড়েকে ধরা সম্ভব হয়েছে, তবে আরও দু'টি নেকড়ে এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছে। শনিবার থেকে ওই দুটি নেকড়েকে আবার দেখা গেছে, কিন্তু বনদফতরের পাতা ফাঁদে তারা ধরা পড়েনি।
বহারাইচের জেলাশাসক জানিয়েছেন, প্রতিবারই নতুন নতুন গ্রাম থেকে নেকড়ের হামলার খবর আসছে, এবং বনদফতর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা কবে এই প্রাণঘাতী আক্রমণ থেকে মুক্তি পাবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে, বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞ যাদবেন্দ্রনাথ ঝালা, যিনি মোদী সরকারের ‘ন্যাশনাল চিতা অ্যাকশন প্ল্যান’ এর প্রধান ছিলেন, মনে করছেন যে এই আক্রমণগুলো নেকড়ের কাজ নাও হতে পারে। তিনি বলেন, নেকড়ে সাধারণত লাজুক প্রকৃতির এবং মানুষকে আক্রমণ করার ঘটনা খুবই বিরল। ঝালা আশঙ্কা করছেন যে কাটার্নিয়াঘাট লাগোয়া জঙ্গলে বাঘ ও চিতাবাঘের আক্রমণে অতীতে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এবং সম্ভবত এই আক্রমণগুলো তাদেরই কাজ হতে পারে। বহারাইচের গ্রামবাসীরা এখন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, কারণ তারা জানেন না কবে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির অবসান হবে।