উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে মেঘভাঙা বৃষ্টির পর উদ্ধারকার্যে গিয়ে নিখোঁজ ভারতীয় সেনার ১১ জন জওয়ান। তাঁদের মধ্যে একজন জুনিয়র কমিশনড অফিসারও রয়েছেন। এছাড়াও এক জন আহত হয়েছেন। তাঁর চিকিৎসা চলছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তরকাশীতে থাকা সেনা ক্যাম্পেরও।
মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরকাশীর ধরালি এলাকায় মেঘভাঙার ঘটনায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। ধ্বংস হয়ে যায় বহু বাড়িঘর। পাহাড় থেকে নেমে আসা পাথর, কাদা ও জলের তোড়ে নিশ্চিহ্ন হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই পরিস্থিতিতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে উদ্ধারকার্যে নামে সেনা। ইন্দো তিব্বত বর্ডার পুলিশ উদ্ধারকার্য শুরু করে। প্রায় ৩৭টি গ্রামের মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ প্রায় ৫০। তাঁদের খোঁজার চেষ্টা চলছে।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টির পর বন্যা পরিস্থিতি দেখা যায় সেখানে। গ্রামের পর গ্রাম ভেসে যায়। তবে সেই সবের তোয়াক্কা না করেই ১৪ রাজপুতানা রাইফেলস ইউনিটের কমান্ডিং অফিসার এবং জওয়ানরা ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযানে নামেন। বন্যা ও দুর্যোগে বিপদে পড়া নাগরিকদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের থাকার ও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ত্রাণ শিবিরে থাকতে হবে ক্ষতিগ্রস্থদের।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ক্ষীর গঙ্গায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। ধরালি বাজার সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে হর্ষিল হেলিপ্যাড এলাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে আরও অনেকের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের আশঙ্কা, এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে রয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। জেলা প্রশাসনের তরফে দু'টি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে: ০১৩৭৪২২২১২৬ এবং ৯৪৫৬৫৫৬৪৩১। উদ্ধারকাজ চলছে পুরোদমে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টা নাগাদ হঠাৎ বন্যা আসে। ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হয়। প্রায় ৬০-৭০ জনের কোনও খোঁজ নেই এখনও। তাঁদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগও করা যায়নি। আর এক জন জানান, ১০০-রও বেশি মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছে। প্রশাসন উদ্ধারকার্য শুরু করেছে।