Uttarkashi Tunnel Collapse: উত্তরকাশীতে ধসের নীচে আটকে পড়া একচল্লিশ জন শ্রমিক এখনও অন্ধকার এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। চরধাম হাইওয়ে প্রকল্পের কাছে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্বারের সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার, টানেলের উপরের অংশের খননকাজে গতি বৃদ্ধির আশা করা হয়েছিল। তবে তার আগে এখানে ১০ দিন ধরে আটকে থাকা শ্রমিকদের কাছে আজ প্রথমবার বোতলে করে খিচুড়ি পাঠানো হয়েছে। ৬ ইঞ্চি চওড়া পাইপে করেই এই খাবার তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার সকালে গভীর সন্ধ্যায় এখানে সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কিন্তু মঙ্গলবার এখানে কোনও খনন ও বোরিং কাজ শুরু করা যায়নি। তবে সুড়ঙ্গের ওপরে যাওয়ার রাস্তায় একটি ড্রিলিং মেশিন দেখা গেছে যেখান থেকে মোটামুটি ৮১ মিটার গভীরে ধসের নীচে চাপা পড়ে আটকে রয়েছেন ৪১ জন শ্রমিক।
মঙ্গলবার সকালে প্রথমবার বিশেষ সিসিটিভি ক্যামেরায় উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে ধসে পড়া সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের মুখ দেখা যায়। উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে ছয় ইঞ্চি চওড়া পাইপলাইন পাঠানোর একদিন পর ক্যামেরায় শ্রমিকদের দেখা পাওয়া বড় সাফল্য হিসাবেই দেখছেন উদ্ধারকারীরা।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আটা হাসনাইন বলেন, টানেলের ভেতরে পর্যাপ্ত জল, অক্সিজেন আর আলো রয়েছে। সেখানে আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারকে আপাতত ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যে রাজ্যগুলি থেকে শ্রমিকরা এসেছে সেই রাজ্যগুলির প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেখানে বসানো চার ইঞ্চি পাইপের মাধ্যমে প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলছেন শ্রমিকের পরিবার পরিজনরা। প্রতি ঘণ্টায় পাইপের মাধ্যমে ওই শ্রমিকদের কাছে পানীয় জল, খাবার পাঠানো হচ্ছে।
চর ধাম সাইটগুলির মধ্যে সংযোগ উন্নত করার জন্য ১২,০০০ কোটি টাকার পরিকাঠামো পরিকল্পের অংশ, দিপাবলীর (১২ নভেম্বর) ভোরে সিল্কিয়ারার প্রবেশদ্বার থেকে ১৬০ মিটার দূরত্বে সুড়ঙ্গটি ভেঙে পড়ে। ওই দিন থেকেই ধসের নীচে আটকে রয়েছেন ৪১ শ্রমিক।
রুট ১: হরাইজন্টাল ড্রিলিং
ন্যাশনাল হাইওয়ে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (NHIDCL) এর একটি দল সিল্কিয়ারা দিক থেকে টানেলের মুখ থেকে খনন কাজ পুনরায় শুরু করবে। প্রথমে এটি ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে ২২ মিটার খনন করার পরে শুক্রবার একটি বাধা পায়। এটি ছিল প্রথম রেসকিউ (অনুভূমিক) পাইপ, যার দিকে কাজটি চ্যালেঞ্জের সঙ্গে পরিপূর্ণ ছিল। শ্রমিকদের এই ৯০০ মিটার চওড়া পাইপ থেকে বেয়ে উঠতে হয়েছিল। কিন্তু উদ্ধারকারীরা শুধুমাত্র ২২ মিটার ড্রিল করার পর অগার মেশিনটি পাথরে ভেঙে যাওয়ায় ড্রিলিংয়ের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রুট ২: ড্রিলিং ফ্রম সাইডওয়েস
একটি বিকল্প জীবন রক্ষাকারী উদ্ধারের প্রস্তুতির জন্য, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডকে (RVNL) টানেলের প্রবেশপথের বাঁ দিকে ২৮০ মিটার দূরত্বে মাইক্রো-ড্রিলিং করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই অপারেশনের জন্য নাসিক ও দিল্লি থেকে যন্ত্রপাতি পাঠানো হয়েছে। এই অনুভূমিক টানেলটি ১.২ মিটার চওড়া এবং ১৭০ মিটার দীর্ঘ হবে।
রুট ৩: ভার্টিকাল ড্রিলিং ফ্রম অ্যাবভ
একটি ১.২ মিটার প্রশস্ত গর্ত সুড়ঙ্গের উপরে থেকে উল্লম্বভাবে খনন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রবেশদ্বার থেকে ৩২০ মিটার দূরত্বে তৈরি করা হবে। এই অপারেশনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাতলুজ জল বিদ্যুত নিগম (SJVN) এবং খনন শুরু করার প্রথম মেশিনটি ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে গুজরাত এবং ওড়িশা থেকে আরও দুটি মেশিন পৌঁছানোর আশা করা হচ্ছে। এটিই আটকে পড়া শ্রমিকদের জন্য প্রধান উদ্ধার টানেল হতে চলেছে।
রুট ৪: সেকেন্ড ভার্টিকাল টানেল ফ্রম টপ
তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কর্পোরেশনকে (ONGC) বারকোটের দিক থেকে ৪৮০ মিটার দূরত্বে টানেলের শেষের দিকে আরেকটি উল্লম্ব টানেল খননের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই টানেলটি প্রায় ৩২৫ মিটার গভীর হবে এবং এই অপারেশনের জন্য মেশিনগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মুম্বাই এবং গাজিয়াবাদ থেকে আনা হয়েছে।
রুট ৫: হরাইজন্টাল রেসকিউ টানেল
তেহরি হাইড্রো ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন প্রচলিত ড্রিল এবং বিস্ফোরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে টানেলের বারকোট প্রান্তের মধ্য দিয়ে একটি ৪৮৩ মিটার সরু-দীর্ঘ টানেল তৈরি করবে। এটি আরেকটি ব্যাকআপ প্ল্যান এবং এর কাজ এখনও শুরু করা বাকি।