পুতিনের মেনুতে কী কী থাকবে? ২৩তম ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারত সফরে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ৪ বছরের মধ্যে এটিই তার প্রথম ভারত সফর। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। এই ধরনের হাই প্রোফাইল অতিথির আপ্যায়নের জন্য সর্বদাই ধুমধাম করে আয়োজন করা হয়। নিরাপত্তার বেষ্টনীতে মোড়া থাকে গোটা কর্মসূচি। আর তাই সাধারণ মানুষের সেই সমস্ত কর্মসূচি নিয়ে আগ্রহও থাকে তুঙ্গে। সকলেই জানতে চাইছেন রুশ প্রেসিডেন্ট এ দেশে এসে কী খাবেন? তাঁর জন্য মেনুতে কী কী রাখা হচ্ছে?
উল্লেখ্য, পুতিনের পছন্দ, কঠোর খাদ্যাভ্যাস এবং নিরাপত্তা বিধি বিবেচনা করে একটি বিশেষ এবং অত্যন্ত সুরক্ষিত মেনু সাজানো হয়। রান্নার ক্ষেত্রেও মানা হয় বিশেষ প্রোটোকল। পুতিনের খাবার পৃথক ভাবে প্রস্তুত করা হয় এবং প্রতিটি খাবার একাধিকবার চেখে পরীক্ষা করা হয়।
এবারের সফরে ভ্লাদিমির পুতিন দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্তে নৈশভোজ সারবেন বৃহস্পতিবার। রুশ রুচিসম্পন্ন অথচ ভারতীয় স্বাদে ভরপুর এবং পুতিনের স্বাস্থ্যবিধির কথা মাথায় রেখেই এবারের মেনু সিলেক্ট করা হয়েছে। এই সফরের আগে তাঁর পূর্ববর্তী সফরগুলিতে পুতিনের জন্য কী ধরনের ভোজ প্রস্তুত করা হয়েছিল তা বারবার ফিরে দেখা হয়।
২০১৪ সালের ভারত সফরের মেনু
২০১৪ সালে ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় আয়োজিত নৈশভোজে স্পষ্টতই কাশ্মীরি প্রভাব প্রতিফলিত হয়েছিল। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, সেবার নৈশভোজ শুরু হয়েছিল কাশ্মীরি জাফরন ভিত্তিক পানীয় কাহওয়া দিয়ে। তাঁকে হাক কা শাকও দেওয়া হয়েছিল। যা পালং শাকের মতো সবুজ পাতার নিজস্ব রসে রান্না করা হয়।
সেবার সফরে আমিষ খাবার বিশেষ মেনুও ছিল। পুতিনকে দেওয়া হয়েছিল গলৌটি কাবাব। যা নরম এবং হালকা মশলা দিয়ে রাঁধা হয়েছিল। এছাড়াও পাতে পরিবেশন করা হয় মুর্গ ধানিওয়াল কোরমা, যার অর্থ ধনেপাতার গ্রেভিতে মুরগি কষা। খাবারে বাদামের তেল দিয়ে রাঁধা মাশরুম, পনির এবং নাইজেলা বীজ দিয়ে তৈরি সবজিও ছিস। ডেজার্টে ছিল গোলাপ ক্ষীর, চিজকেক ও তাজা ফল।
২০১৮ সালের ভারত সফর
ভ্লাদিমির পুতিনের ২০১৮ সালের ভারত সফরের সময়ে হায়দারবাদ হাউসেও একটি জাঁকজমকপূর্ণ নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছিল। রাঁধুনিরা পুতিনের নিরাপত্তা, স্বাদ এবং পছন্দ বিবেচনা করে বিভিন্ন ধরনের নিরামিষ এবং আমিষ খাবার প্রস্তুত করেছিলেন। মেনুতে ছিল হালকা পার্সলে এবং পনিরের সসের সঙ্গে পরিবেশিত স্যামন ফিলে। পিঁয়াজ, জাফরন এবং মশলা দিয়ে বাজা ভেড়ার মাংস। যা ঐতিহ্যবাহী মোঘল স্টাইলে রান্না করা হয়েছিল। সঙ্গে ছিল ক্রিমি সসে মুরগি কষা। নিরামিষ খাবারগুলিও কম আকর্ষণীয় ছিল না। তালিকায় ছিল তরমুজের ক্রিম স্যুপ, স্প্রাউট এবং মিষ্টি তেঁতুল দই সহ মুচমুচে পেস্ট্রি, আমের সঙ্গে পরিবেশিত পদ্ম-শশা এবং মসুর ডালের কাবাব। মাখানি গ্রেভিতে তৈরি পনির এবং মটরশুঁটি, কালো ছোলা দিয়ে তৈরি বাসমতি ভাত, মৌসুমী সবজি এবং অ্যাসপারাগাস। কঠোর নিরাপত্তা এবং বিশেষ খাদ্য-পরীক্ষা প্রক্রিয়ার করণে পুতিন এগুলির মধ্যে কোন খাবার খেয়েছিলেন, তা জানা যায়নি।
পুতিন কী খেতে পছন্দ করেন?
ভারতে পুতিনের ভোজ জমকালো হলেও তার দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস বেশ সহজ সরল। পুতিন প্রায়শই তার সকাল শুরু করেন পরিজ এবং কটেজ পনির দিয়ে। তা তিনি খান মধুর সঙ্গে। তিনি ডিম ভাজা এবং তাজা ফলের রস পান করেন। প্রোটিনের জন্য তিনি মাছ খেতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে পছন্দ স্মোকড স্টারজন, যা তিনি লেবু এবং মাখনের সঙ্গে খান। পুতিন ছোটবেলা থেকেই ভেড়ার মাংস পছন্দ করেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট খুব কম মিষ্টি খান। সাধারণত টমাটো, শশার স্যালাড পছন্দ করেন। তিনি কেফির নামে একটি দুগ্ধজাত পানীয় পান করেন। মাঝে মাঝে পেস্তা আইসক্রিমও খান।