'I Love Muhammad' আন্দোলন ঘিরে অশান্তি, দেশজুড়ে কেন এই ইস্যুতে মিছিল করছেন মুসলিমরা?

উন্নাওয়ে মিছিল চলাকালীন পুলিশের উপর ইটবৃষ্টির অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে মোতায়েন থাকা মহিলা পুলিশদের হাত থেকে লাঠিও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সেই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। 

Advertisement
'I Love Muhammad' আন্দোলন ঘিরে অশান্তি, দেশজুড়ে কেন এই ইস্যুতে মিছিল করছেন মুসলিমরা?  Rally
হাইলাইটস
  • দেশের একাধিক রাজ্যে চলছে 'I Love Muhammad' আন্দোলন
  • কী এই আন্দোলন? জানুন

'I Love Muhammad' আন্দোলনে উত্তাল উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও তেলাঙ্গানা। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের উন্নাও, বরেলি, কৌশাম্বী, লখনউ, মহারাজগঞ্জ, তেলাঙ্গানার হায়দরাবাদ ও উত্তরাখণ্ডের কাশীপুরে এই আন্দোলন চলছে। রাস্তায় নেমেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। তাদের মিছিল ঘিরে কোনও কোনও জায়গায় অশান্তি হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের অভিযোগও উঠেছে। 

উন্নাওয়ে মিছিল চলাকালীন পুলিশের উপর ইটবৃষ্টির অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে মোতায়েন থাকা মহিলা পুলিশদের হাত থেকে লাঠিও ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সেই ঘটনা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। 

কিন্তু হঠাৎ কেন 'I Love Muhammad' আন্দোলন? এর সূত্রপাত আসলে কানপুরে। সেখানে ৫ সেপ্টেম্বর মুসলিমদের এক ধর্মীয় মিছিলে 'I Love Muhammad' সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয়েছিল। তার প্রতিবাদ করা হয় হিন্দুদের তরফে। তাই নিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। 

পুলিশের ভূমিকা

কানপুরে 'I Love Muhammad' সাইনবোর্ড ঘিরে এই বিবাদে মধ্যস্থতা করতে আসে পুলিশ। উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা। কানপুর পুলিশের ডিসিপি দীনেশ ত্রিপাঠী জানান, সরকারি নিয়ম অনুসারে ধর্মীয় মিছিল পুরোনো নিয়ম মেনেই করতে হয়। সেখানে নতুন ঐতিহ্য অন্তর্ভুক্ত করা যায় না। তবে সেদিন সেই মিছিলের সময় কয়েকজন যেখানে সাইনবোর্ড থাকে সেই স্থান থেকে সরিয়ে নতুন জায়গায় স্থাপন করে। তাই নিয়েই বিরোধ। পরে যদিও পুলিশের হস্তক্ষেপে পুরোনো জায়গাতেই সাইনবোর্ড বসানো হয়। ডিসিপি আরও জানান,  'I Love Muhammad' সাইনবোর্ড নিয়ে কোনও মামলা দায়ের হয়নি। শুধু হিন্দু ও মুসলিম পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ করেছে। 

কানপুরের মুসলিম পক্ষের অভিযোগ, তাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। হিন্দুদের তরফেও একই দাবি করা হয়। দুই পক্ষের অভিযোগ শোনার পর পুলিশের তরফে মীমাংসা করা হয়। 

পুলিশের FIR ও নতুন বিবাদ 

এরপর ৯ সেপ্টেম্বর কানপুর পুলিশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগে ২০ জনেরও বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। রাওয়াতপুর থানার দায়ের করা এই মামলায় ১৫ জন অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীর নাম রয়েছে। 

Advertisement

আসাদউদ্দিনের বক্তব্য 

এদিকে কানপুরের ঘটনা নিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর মিম প্রধান তথা সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে কানপুর পুলিশকে ট্যাগ করে লেখেন, I Love Muhammad বলা অপরাধ নয়। যদি বলা অপরাধ, এটা কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে তিনি শাস্তি মাথা পেতে নিতে প্রস্তুত।' তিনি আরও অভিযোগ করেন, পুলিশ প্ররোচিত হয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। যা অনুচিত। 

পুলিশের পাল্টা বয়ান 

কানপুর পুলিশ দাবি করে,  'I Love Muhammad' লেখার জন্য কারও বিরুদ্ধে FIR করা হয়নি। মিছিলের সময় অন্য ধর্মের ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার আইনি পদক্ষেপের পথে হেঁটেছেন তদন্তকারীরা। 

এই ঘটনার পর থেকেই এই আন্দোলনের সমর্থনে মুসলিমরা মিছিল বের করছে। উন্নাওতেও মিছিল বের করা হয়েছিল। সেখানে সংঘর্ষ হয়। এদিকে এই আন্দোলন নিয়ে বিজেপি ও সমাজবাদী পার্টি একে অপরের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে।  সপার মুখপাত্র আমিক জামাই পুলিশের সমালোচনা করেন। গোটা ঘটনার দায় পুলিশের উপর চাপিয়ে তাঁর অভিযোগ, বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।  'I Love Muhammad' বা 'I Love Ram' বলা অপরাধ নয়। পাল্টা দেয় বিজপি। দলের মুখপাত্র রাকেশ ত্রিপাঠী বলেন, 'উত্তর প্রদেশে কেউ যদি পুলিশের গায়ে হাত দেয়, আইন ভাঙার চেষ্টা করে তাহলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ যা করেছে তা একদম সঠিক পদক্ষেপ।' 

সতর্ক পুলিশ

কানপুর ও উন্নাওয়ে ঝামেলার পর 'I Love Muhammad' আন্দোলন দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। অশান্তির সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।  উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জেও একটি প্রতিবাদ মিছিল বের হওয়ার আগেই আটকে দেয় পুলিশ। বিক্ষোভে যোগদানকারী ৬০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে FIR করে পুলিশ। কৌশাম্বীতে আটকও করা হয় অনেককে। 

POST A COMMENT
Advertisement