রতন টাটার উইলে সবার নজর কাড়ল এক বিশেষ নাম—মোহিনী মোহন দত্ত। আর তারপর থেকেই সবার প্রশ্ন, কে ইনি? কেন তাঁকে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা মূল্যেরও বেশি সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করে গেলেন রতন টাটা?
জমশেদপুরের এক তুলনামূলকভাবে অপরিচিত শিল্পপতি-ব্যবসায়ী মোহিনী মোহন দত্ত(Mohini Mohan Dutta)। তাঁকে রতন টাটার উইলে ₹৫০০ কোটিরও বেশি অঙ্কের সম্পত্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে The Economic Times। এই ঘোষণার পর গোটা ব্যবসায়িক মহলে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে। রতন টাটা বরাবরই ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অত্যন্ত প্রাইভেসী মেনে চলতেন। ফলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে কারা ছিলেন, কার সঙ্গে তার সম্পর্ক কেমন, সেই ধারণা আমজনতার একেবারেই নেই বললেই চলে।
মোহিনী মোহন দত্ত বর্তমানে আশির কোঠায় রয়েছেন। ১৯৬০-এর দশকের শুরুর দিকে জমশেদপুরের ডিলার্স’ হোস্টেলে তাঁর সঙ্গে প্রথমবার রতন টাটার আলাপ হয়। তখন রতন টাটার বয়স ছিল মাত্র ২৪ বছর। টাটার পারিবারিক ব্যবসার বিরাট দায়িত্ব সামলানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই আলাপই মোহিনী মোহন দত্তের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
মোহিনী মোহন দত্তের কর্মজীবনের শুরু তাজ গ্রুপে। পরে চাকরি ছেড়ে তিনি Stallion Travel Agency নামের একটি ট্র্যাভেল কোম্পানি খোলেন। আর তাতে প্রায় ৮০% শেয়ার ছিল টাটা ইন্ডাস্ট্রিজের। টাটা গোষ্ঠীর সুপরামর্শে বিপুল হারে ব্যবসা বৃদ্ধি পায় মোহিনী মোহন দত্তের। দেশের অন্যতম বড় ট্যাভেল এজেন্সি হয়ে যায় সেটি।
টাটা ইন্ডাস্ট্রিজ ওই ব্যবসার ৮০% শেয়ার ধরে রেখেছিল। পরে টাটা ক্যাপিটাল সেটা অধিগ্রহণ করে এবং পরে দেশের অন্যতম বড় ট্রাভেল এজেন্সি থমাস কুক (ইন্ডিয়া)-কে বিক্রি করে দেয়। বর্তমানে মোহিনী মোহন দত্ত TC Travel Services-এর একজন ডিরেক্টর। এর পাশাপাশি টাটা গ্রুপের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারহোল্ডার তিনি।
টাটা পরিবারের ঘনিষ্ঠমহলের দাবি, মোহিনী মোহন দত্ত রতন টাটার ছেলের মতো ছিলেন। সম্ভবত সেই কারণেই স্নেহের মোহিনী মোহন দত্তকে সম্পত্তির একটি বড় অংশ লিখে গেছেন রতন টাটা। উল্লেখ্য, উইল এবং সংযুক্ত নথিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে রতন টাটা কখনও বিয়ে করেননি বা কোনও দত্তক সন্তান গ্রহণ করেননি।
মোহিনী মোহন দত্তের মেয়ে Tata Trusts-এ প্রায় এক ১০ বছর কাজ করেছেন। বাবার মতো তাঁরও কর্মজীবন শুরু হয় Taj Hotels থেকে। ২০২৪ সালে মুম্বইয়ের NCPA-তে রতন টাটার জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি অতিথি হিসেবে এসেছিলেন। এই অনুষ্ঠানে শুধুমাত্র টাটা পরিবারের সবচেয়ে কাছের মানুষরাই আমন্ত্রিত ছিলেন। এর থেকেই বোঝা যায় তাঁরা টাটা পরিবারের কতটা কাছের ছিলেন।
ইকোনমিক টাইমসে রতন টাটার উইলে সম্পত্তির বন্টন উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও bangla.aajtak.in সেই উইলের তথ্য যাচাই করেনি।ET-র প্রতিবেদন অনুযায়ী,
বর্তমানে এই উইল বোম্বে হাইকোর্টে প্রোবেটের অপেক্ষায় রয়েছে।