জাতীয় পতাকা যে কোনও দেশের জন্য গর্ব, ঐক্য এবং স্বাধীনতার প্রতীক। ভারতও এর ব্যতিক্রম নয়। স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবস ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি অনুষ্ঠানে ভারতীয় পতাকা মঞ্চে থাকে। স্বাধীনতা দিবসে (১৫ অগাস্ট) জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। আর প্রজাতন্ত্র দিবসে পতাকা উন্মোচন করা হয়। যদিও দুটি শব্দ একই রকম শোনাতে পারে, তবে এদের মধ্যে পার্থক্য আছে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট কী?
স্বাধীনতা দিবস (১৫ অগাস্ট)
স্বাধীনতা দিবস ১৯৪৭ সালের সেই দিনটিকে চিহ্নিত করে যখন ভারত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এই দিনে দেশ উদযাপন করে মুক্তি ও স্বাধীনতার চেতনা। জাতীয় পতাকা উত্তোলন এই স্বাধীনতার গভীর প্রতীক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে থাকা থেকে একটি স্বাধীন জাতি হয়ে ওঠার যাত্রাকে নির্দেশ করে পতাকাটি দণ্ডের শীর্ষে উত্তোলন করা হয়। পতাকাটি দণ্ডের নীচে দড়িতে লাগানো থাকে। দড়ি টেনে পতাকা উপরে তোলা হয়। যা একটি স্বাধীন জাতির উত্থানের ইঙ্গিত দেয়। এভাবে পতাকা উত্তোলনকে ইংরেজিতে বলা হয় Hoist।
প্রজাতন্ত্র দিবস (২৬ জানুয়ারি)
প্রজাতন্ত্র দিবস ১৯৫০ সালের সেই দিনটিকে স্মরণ করা হয় যখন ভারতের সংবিধান কার্যকর হয়েছিল। দেশ একটি সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল। এটি আইনের শাসন এবং ভারত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদযাপন। এই দিনে, ভারতের রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপ্রধানের প্রতিনিধিত্ব করে রাজপথে (বর্তমানে কার্তব্য পথ) পতাকা উন্মোচন করেন। পতাকাটি দণ্ডের উপরেই ভাঁজ করা থাকে। দড়ি টেনে পতাকাকে খোলা হলেই সেটি উড়তে থাকে। পতাককে মুক্ত করে দেওয়াকে ইংরেজিতে বলা হয় Unfurl। তার মানে এটা বোঝানো হয় যে ভারত এখন একটি কার্যকর সংবিধান সহ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত, সম্পূর্ণ শাসিত প্রজাতন্ত্র। রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে সংবিধানের অধীনে আইনের শাসনের পবিত্রতা এবং সকল নাগরিকের সমতার প্রতিনিধিত্ব করেন। স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলন এবং প্রজাতন্ত্র দিবসে পতাকা উন্মোচনের মধ্যে পার্থক্য কেবল আনুষ্ঠানিক পার্থক্য নয়। এটি এই দুটি জাতীয় ঘটনার অনন্য ঐতিহাসিক ও প্রতীকী গুরুত্ব প্রতিফলিত করে।