সিকিম থেকে দিব্যি সীমান্ত পার হয়ে এ রাজ্যে ঢুকছেন সে রাজ্যের সাধারণ মানুষ। পর্যটক থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিতে হর হামেশাই তারা আসছেন শিলিগুড়ি। বিশেষ করে তাদের যে কোনও জিনিস কিনতে হলেই শিলিগুড়িতে না আসলে গতি নেই। অথচ এদিক থেকে কেউ ওপাশে যেতে গেলে তাদের কড়া বিধিনিষেধ শুরু হয়ে যাচ্ছে।
সিকিমের একচোখা নীতি নিয়ে ক্ষোভ
দীর্ঘদিন ধরেই তাদের এই একচোখা নীতি চলছিল। বিশেষ করে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে তাদের ওয়ান-ওয়ে কড়াকড়ি ক্রমশ কঠোর থেকে কঠোরতম হয়ে চলছে। সে দিক থেকে নির্বিচারে এ রাজ্যে মানুষ থাকলেও এদিক থেকে ঢুকতে গেলে তাদের শুরু হচ্ছে নানা রকম টালবাহানা, হেনস্থা।
এদিন সিকিমে ঢোকা নিয়ে শুরু হয় বচসা
রবিবার এ রাজ্য থেকে সেখানে কাজ করতে যাওয়া বিভিন্ন হোটেলের কর্মচারী থেকে শুরু করে অন্যান্যদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তারপরই শুরু হয় বচসা। সরকারিভাবে বলা রয়েছে প্রত্যেকের একটি করে টিকার ডোজ নেওয়া থাকলে, তাদের ঢুকতে দেওয়া হবে। অথচ প্রত্যেকের একটি করে টিকা দেওয়া থাকলেও তাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
প্রত্যেকের কাছে সরকার নির্দেশিত সমস্ত নথি রয়েছে
পাশাপাশি তাদের প্রত্যেকের কাছেই আরটিপিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট করেছে। তা সত্ত্বেও এ দিন ওই সমস্ত লোকেদের সিকিম-এ ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন হোটেলের প্রায় আড়াইশো কর্মী আরটিপিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট এবং একটি করে টিকা নিয়ে তার সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও তাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
রাত পর্যন্ত কোনও রকম সহায়তা করা হয়নি
রাত পর্যন্ত তাদের কোনও রকম বিকল্প বন্দোবস্ত করা হয়নি। এমনকী তাঁদের ফিরে আসার জন্য কোনও রকম বন্দোবস্ত করেনি সিকিম সরকার। যা নিয়ে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। পর্যটন মহল থেকে শুরু করে সমস্ত দিকে। এই বিষয়টি নিয়ে তারা রাজ্যের পর্যটন দপ্তর এর দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন সর্কিটের বেঙ্গল পার্টের স্টেকহোল্ডাররা।
সিকিম থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানান সিকিম থেকে পশ্চিমবঙ্গের ঢোকার পদ্ধতি পর্যটনের ক্ষেত্রে অনেকটা শিথিল। সেক্ষেত্রেও সমস্ত রকম বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে । কিন্তু এতটা জটিল এবং নীতিহীন নয়। এ বিষয়টি দ্রুত হস্তক্ষেপ করে সমাধান করা না হলে ধীরে ধীরে সিকিম থেকে সমস্ত রকম ব্যবসা এবং পর্যটন গুটিয়ে নিতে হবে বাইরের ব্যবসায়ীদের বলে মনে করছেন অনেকেই। তাতে আখেরে ক্ষতি সিকিমেরই। এ বিষয়টি সিকিম সরকার বুঝতে পারছে না।
গাড়ির ক্ষেত্রেও চুক্তি মানে না সিকিম
একই রকম সমস্যা তৈরি হয় গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রেও। দীর্ঘদিন ধরেই সিকিম এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে একটি রেসিপ্রোকাল চুক্তি রয়েছে। যার মাধ্যমে দু'রাজ্যের গাড়ি দু'রাজ্যে চলাচল করতে পারবে। কিন্তু সিকিম বরাবরই চুক্তি লঙ্ঘন করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সিকিমের গাড়ি ঘুরে বেড়ালেও নির্দিষ্ট এলাকা ছাড়া ভাড়ার গাড়ি তো বটেই, প্রাইভেট গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হয় না। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে। তার উপর করোনা পরিস্থিতিতে নতুন করে এই ধরনের পরিস্থিতির ফলে তারা ভবিষ্যতে পর্যটকদের যেতে উৎসাহ নাও দিতে পারে বলে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।