উত্তরাখণ্ডের চমোলি জেলার তপোবন গ্রামের কাছে পাহাড়ি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটা সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়া গাড়ি আর তার ভেতরে এক মহিলার পোড়া দেহ ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে। গাড়িটা আবার রেজিস্টার্ড হয়েছে দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকে। কে এই মহিলা? কীভাবে এখানে এলেন? এসব প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা, তবে পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
রবিবার সকালে খবর ছড়িয়ে পড়ে—চমোলির যোশীমঠ-মলারি মোটর রোডে তপোবনের কাছে একটা জ্বলে যাওয়া গাড়ির ভিতরে একটা মৃতদেহ পাওয়া গেছে। খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় এবং মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
চমোলির এসপি সর্বেশ পাওয়ার জানিয়েছেন, সকাল ৭টার দিকে খবর আসে যে চাঞ্চড়ি গ্রামের কাছে একটি পোড়া গাড়ির ভিতরে দগ্ধ দেহ পাওয়া গেছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখে, একটি মহিলার দেহ সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। দৃশ্যটা এতটাই বিভৎস যে প্রথমে বোঝাই যায়নি এটা নারী না পুরুষ।
এখনো পর্যন্ত ওই মহিলার পরিচয় জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বোঝা যাবে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে বলছে, এটি আত্মহত্যা, দুর্ঘটনা, না কি পরিকল্পিত খুন—সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হল—যে গাড়িতে দেহটি পাওয়া গেছে, সেটা কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে রেজিস্টার্ড। পুলিশ ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরুর RTO-র সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, গাড়ির মালিক এবং তার পরিচিতদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় কিছু মানুষ বলছেন, শনিবার একটি ছেলে ও মেয়েকে এই মারুতি রিটজ গাড়িতে তপোবনের আশপাশে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। এমনকি শুক্রবারও এই গাড়িটিকে যোশীমঠ এলাকায় দেখা গেছে। তাই অনুমান করা হচ্ছে, এই ভয়ানক ঘটনা সম্ভবত শনিবার রাতেই ঘটেছে।
পুলিশ এখন এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে, পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দিও নেওয়া হচ্ছে। একাধিক দিক থেকে তদন্ত চলছে—খুন, আত্মহত্যা, না দুর্ঘটনা—সব সম্ভাবনাই খোলা রাখা হয়েছে।
এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পাহাড়ের শান্ত পরিবেশে এমন এক বিভীষিকাময় দৃশ্য কেউ ভাবতেই পারেনি। কে এই মহিলা, কী ছিল তার সঙ্গে থাকা যুবকের পরিচয়, কেনই বা এমন পরিণতি—এই সব প্রশ্নের উত্তর এখনও অন্ধকারেই। এখন দেখার পালা, পুলিশের তদন্ত কোন দিকে মোড় নেয়।