World's Richest Beggar: উস্কোখুস্কো চুল। মুখে কয়েক সপ্তাহের না কাটা দাঁড়ি। রোদে গায়ের রঙ পুড়ে তামাটে হয়ে গিয়েছে। পরনের পোশাক নোংরা, ছেঁড়া-ফাটা। ভিক্ষুককে দেখে মায়া হল। ৫ টাকা দান করেন। কিন্তু জানতেও পারলেন না, এই ভিক্ষুক সম্পত্তির নিরিখে বড়-বড় ব্যবসায়ীকেও টেক্কা দেবেন।
বিশ্বের ধনীতম ভিক্ষুক
ভিক্ষুক আর ধনীতম। দুই শব্দ কোনওভাবেই পাশাপাশি কল্পনা করা যায় না। কিন্তু বাস্তব কল্পনার চেয়েও আজব। বিশ্বের ধনীতম ভিখারির শিরোপা পেলেন মুম্বইয়ের ভরত জৈন। ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে তাঁর স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে মোট সম্পত্তির অঙ্ক ৭.৫ কোটি টাকা। মুম্বইয়ের রাস্তায় ভিক্ষা করেই এই বিপুল টাকা, সম্পত্তি করেছেন তিনি।
রিপোর্ট অনুযায়ী, হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম ভরতের। পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। সেখানে পড়াশোনা তো বিলাসিতা! ফলে অল্প বয়স থেকেই ভিক্ষাবৃত্তিতে প্রবেশ করেন। আর আজ তাঁর 'নেট ওয়ার্থ' দাঁড়িয়েছে ৭.৫ কোটি টাকা।
ব্যস্ত জায়গায় ভিক্ষা
ভিক্ষা করতে বেরিয়ে গেলেই তো হবে না! বেশি মানুষের ভিড় আছে, এমন জায়গাতেই বেশি 'আয়' করা যাবে। আর সেই অভিজ্ঞতা থেকেই নির্দিষ্ট কিছু স্থানেই ভিক্ষা করেন ভরত জৈন। প্রথমটি হল মুম্বইয়ের বিখ্যাত ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস রেল স্টেশন (CSMT)। মাঝে মাঝে আবার আজাদ ময়দানে ভিক্ষা করেন।
মুম্বই এমনিতেই স্বচ্ছল শহর। সেখানে মানুষ সহজেই ৫-১০ টাকা ভিক্ষা দিয়ে দেন। তাছাড়া বিদেশি পর্যটকরাও অনেক টাকা দান করে দেন। এভাবে ভরত ঘণ্টায় প্রায় ২০০ টাকারও বেশি আয় করে ফেলেন।
সারাদিনে মোট ১০ ঘণ্টা 'ডিউটি' করেন। ফলে দিনে গড়ে ২,০০০-২,৫০০ টাকা আয় করে ফেলেন। অর্থাত্, মাসে ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা আয় করে ফেলেন এই পেশাদার ভিক্ষুক।
ফ্ল্যাট, দোকান
কথায় বলে, টাকা এলে মানুষের জেল্লা এসে যায়। কিন্তু ভিক্ষার পেশায় তো জেল্লা এলে চলবে না! তাই এখনও আগের মতোই ছেঁড়া ফাটা পোশাক, দাড়ি নিয়েই ঘুড়ে বেড়ান ভরত। এভাবে আয়ের বেশিরভাগ টাকাই জমিয়ে ফেলেন। আবার দুঁদে ব্যবসায়ীর মতো সেগুলি বিনিয়োগও করেন।
মুম্বইতে ১.২ কোটি টাকার একটি 2BHK ফ্ল্যাট আছে ভরতের নামে। এর পাশাপাশি থানেতে দু'টি দোকান ঘরের মালিক তিনি। সেখান থেকে মাসে ৩০,০০০ টাকা করে ভাড়া পান।
স্ত্রী, দুই ছেলে, ভাই এবং বাবাকে নিয়ে ভরতের পরিবার। দুই ছেলেকে নামী ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পড়িয়েছেন। পরিবারের বাকি সদস্যরা একটি স্টেশনারি দোকান চালান। সকলের বারণ সত্ত্বেও এখনও ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়তে পারেননি ভরত। আর ছাড়বেনই বা কেন!