scorecardresearch
 

Year Ender 2022: মোদী-মমতা থেকে কেজরিওয়াল, রাজনীতির রঙ্গমঞ্চে বছরভর কে কোথায়?

Year Ender 2022: কারও উত্তরণ হয়েছে কারও আবার অবনমন! বছর শেষে বাংলা ডট আজতক ডট ইনের বিচারে এমনই ১০ রাজনীতিককে রাখা হল ক্রমপর্যায়ে। 

Advertisement
year Ender Political Leaders year Ender Political Leaders
হাইলাইটস
  • কারও উত্তরণ হয়েছে কারও আবার অবনমন!
  • ক্রমপর্যায়ে ১০ রাজনীতিককে রাখা হল।

সাধারণ মানুষের মতো রাজনীতিকদেরও সময়ও বদলায়। কারও সুসময় কারও প্রতি আবার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হন না। ২০২২ সাল শেষের মুখে। এ বছরও দেশের রাজনীতিকদের জীবনে দেখা দিয়েছে উত্থান-পতন। কারও উত্তরণ হয়েছে কারও আবার অবনমন! বছর শেষে বাংলা ডট আজতক ডট ইনের বিচারে এমনই ১০ রাজনীতিককে রাখা হল ক্রমপর্যায়ে। 
       
নরেন্দ্র মোদী- সেই ২০১৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে তাঁর সুসময়। তা আজও অব্যাহত। মাঝে ২০২১ সাল ততটা ভাল যায়নি। পশ্চিমবঙ্গে হারতে হয়েছে। প্রায় ২০টি জনসভা করেছিলেন। এই প্রথম দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রী বাংলার নির্বাচনে এত প্রচার করেছেন। তা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি। ভরাডুবি রয়েছে পদ্ম শিবিরের। ২০২২ সালে সেই হার সুদে-আসলে পুষিয়ে নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। বছরের শুরুতেই উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে প্রথা ভেঙে দ্বিতীয়বার সরকারে ফিরেছে বিজেপি। বিজেপি একাই জিতেছে ২৫৫টি আসন। অন্যদিকে, গোয়া, উত্তরাখণ্ড, মণিপুরেও ক্ষমতা ধরে রেখেছে গেরুয়া শিবির। আর কে না জানে! উত্তরপ্রদেশ দিয়েই দিল্লির তখতে পৌঁছনো যায়। সে রাজ্যে রয়েছে ৮০টি লোকসভা আসন। বিধানসভা ভোটে জয়ের পর নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন,'২০২৪ সালের কী হতে চলেছে তা-ও স্পষ্ট হয়ে গেল।' বছরের শেষেও মোদীর দুহাতেই লাড্ডু। আড়াই দশক শাসন করেও গুজরাতে রেকর্ড আসন জিতে ফিরেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর সেটা হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর মুখেই। গুজরাতে তিনিই ছিলেন বিজেপির মুখ। এর মধ্যে হিমাচলপ্রদেশ ও দিল্লির পুরসভা অবশ্য হারাতে হয়েছে বিজেপিকে। তবে সবমিলিয়ে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে ২০২২ সালে শীর্ষে থাকবেন তিনিই। 
  
অরবিন্দ কেজরিওয়াল- অন্না হাজারের দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলন থেকে তাঁর উত্থান। ২০১২ সালে শুরু করেন আম আদমি পার্টি। ১০ বছরের মধ্যেই সেই দল পেয়েছে জাতীয় দলের স্বীকৃতি। ২০২২ সালে মোদীর পরেই থাকবেন তিনি। দিল্লির পর পঞ্জাবেও সরকার গঠন করেছে আপ। গোয়ায় ২টি আসন জিতেছে। ভোটের হার ৬.৭৭ শতাংশ। ৫টি আসন এসেছে গুজরাতে। ১২.৯২ শতাংশ ভোট পেয়েছে কেজরিওয়ালের দল। বিরোধী পরিসরে এখনই তিনিই হয়ে উঠেছেন অন্যতম প্রধান মুখ। ২০২৪ সালে বিরোধী জোট করলে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে অস্বীকার করা যাবে না। 

Advertisement

দ্রৌপদী মুর্মু-ভারতের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত হলেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি এখন রাজনীতিক নন। তবে রাজনীতির সঙ্গে তাঁর অভিন্ন যোগ। বিরোধী জোটের যশবন্ত সিন্‌হাকে হারিয়ে রাষ্ট্রপতি হয়েছেন ওড়িশার দ্রৌপদী মুর্মু। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জের সাঁওতাল পরিবারের সন্তান তিনি। ১৯৯৭ সালে বিজেপির টিকিটে ওড়িশার রায়রংপুর পুরসভার কাউন্সিলর হন দ্রৌপদী। শুরু হয় রাজনৈতিক জীবন। ২০০০ সালে রায়রংপুর পুরসভারই চেয়ারপার্সন হন। মন্ত্রীও হয়েছেন তিনি। ২০১৫ সালে দ্রৌপদী মুর্মু ঝাড়খণ্ডের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেন। তাঁর উত্থানও চমকপ্রদ। 

যোগী আদিত্যনাথ- গোবলয়ে অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। তাঁর জমানায় উত্তরপ্রদেশে সুশাসন ফিরেছে বলেও দাবি করেন যোগী আদিত্যনাথ। সাধারণ মানুষও আস্থা রাখলেন যোগীর প্রতি। প্রথা ভেঙে দ্বিতীয়বার নির্বাচন জিতলেন। আর মুখ্যমন্ত্রীও হলেন। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়ায় গতবারের চেয়ে সামান্য আসন কমলেও ক্ষমতায় ফিরতে তা বাধা হয়নি। লোকসভা ভোটে মোদীকে জিততে গেলে যোগীর রাজ্যের ফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই কাজেই মোদীর ভরসার দাম দিয়েছেন যোগী। 

মল্লিকার্জুন খাড়গে- সীতারাম কেশরি ছিলেন শেষ অ-গান্ধী কংগ্রেস সভাপতি। তার ২৪ বছর পর জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে। গান্ধী পরিবারের বিশ্বস্ত তিনি। ভোটাভুটিতে পরাস্ত করেন শশী থারুরকে। খাড়গের নেতৃত্বেই লোকসভা ভোটে লড়াই করবে কংগ্রেস। মোদীকে হারাতে সব দলকেই স্বাগত জানিয়েছেন খাড়গে। এ বছরটা নিশ্চিতভাবে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম সেরা বছর।

একনাথ শিন্ডে- মহারাষ্ট্রে যাবতীয় সমীকরণ বদলে দিয়েছেন শিবসেনার বিদ্রোহী শিবিরের নেতা একনাথ শিন্ডে। বিদ্রোহী বিধায়কদের সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। তাঁর ডেপুটি বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ। একনাথের বিদ্রোহে ক্ষমতা হারিয়েছেন বালাসাহেবপুত্র উদ্ধব ঠাকরে। সাধারণ পরিবারের একনাথ শিন্ডে অল্প বয়সেই অটো রিকশা চালাতে শুরু করেন। ২০০৪ সালে প্রথম মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটে জেতেন। তার পর ২০০৯, ২০১৪ এবং ২০১৯ সালেও জয়লাভ করেন একনাথ।  

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- ২০২১ সালটা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বার প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। ২০২২ সালে গোয়ায় লড়েছিল তাঁর দল। তবে সাফল্য আসেনি। কিন্তু বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে এখনও তিনি এগিয়ে। ২০২৪ সালে বিরোধী জোটেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন তিনি।      

মহম্মদ সেলিম- লোকসভা ভোটের পর বিধানসভাতেও শূন্য আসন পেয়েছে সিপিএম। এমতাবস্থায় দলের হাল ধরেছেন মহম্মদ সেলিম। তিনিই এখন দলের রাজ্য সম্পাদক। সেলিম রাজ্য সম্পাদক হওয়ার পর নানা ইস্যুতে সিপিএমের আন্দোলন নজর কেড়েছে অনেকের। বালিগঞ্জে উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে তারা।             

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী- দাদা রাহুল গান্ধীর চেয়ে এ বছর খানিকটা এগিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। উত্তরপ্রদেশে দলের প্রচার মুখ ছিলেন। ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। তবে নজর কেড়েছে প্রিয়াঙ্কার প্রচার। হিমাচলপ্রদেশেও দলের প্রচারের দায়িত্ব ছিলেন সনিয়া তনয়া। তাতে সফল হয়েছেন।         

রাহুল গান্ধী- ২০২২ সালেও রাহুল গান্ধীর পারফরম্যান্স নিম্নগামী। শুরুতেই উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের। গুজরাতে দাঁড়াতেই পারেনি রাহুলের দল। হিমাচলে কংগ্রেস জিতলেও সেখানে প্রচারে যাননি রাহুল গান্ধী। গুজরাটে ভোটের সময় তিনি ব্যস্ত ছিলেন ভারত জোড়ো যাত্রায়। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে, ২০২৪ সালে কীভাবে মোদীর বিরুদ্ধে লড়বেন রাহুল? বিরোধীরাও কি তাঁকে মেনে নিতে পারবে? 

আরও পড়ুন- মোদীর নিরাপত্তা থেকে কংগ্রেসে অ-গান্ধী প্রেসিডেন্ট, দেশের রাজনীতি বছরভর ঘটনাবহুল

Advertisement

Advertisement