পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠছে।-কোলাজপাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। হরিয়ানার হিসারের বাসিন্দা জ্যোতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে গোপন তথ্য আদান-প্রদানে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তাঁর বাবা হরিস মালহোত্রা দাবি করেছেন, তাঁর মেয়ে শুধুমাত্র ইউটিউব কনটেন্ট তৈরির উদ্দেশ্যে পাকিস্তান গিয়েছিল, আর সবরকম সরকারি অনুমতি নিয়েই সীমান্ত পেরিয়েছিল।
সংবাদ সংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হরিস বলেন, “জ্যোতি ইউটিউবের জন্য বিভিন্ন দেশে ভিডিও বানাত। পাকিস্তানেও গিয়েছিল সেই কারণেই। দিল্লিতে গিয়ে ভিসা করিয়েছিল। ওখানে হয়তো তার কিছু বন্ধু রয়েছে, তাদের সঙ্গে ফোনে কথা বললে দোষ কী?”
তবে হরিয়ানা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, জ্যোতি দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানি নাগরিক আহসান-উর-রহিম ওরফে ‘দানিশ’-এর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছিল। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, ২০২৩ সালে দিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশনে ভিসা করাতে গিয়েই প্রথম আলাপ হয় ওই ব্যক্তির সঙ্গে। পরবর্তী সময়ে দুইবার পাকিস্তানে গিয়ে সেখানে তাঁর থাকার ব্যবস্থা, নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে সাক্ষাৎ ও অন্যান্য ব্যবস্থাও করা হয়।
এই মামলায় হরিয়ানা পুলিশ জ্যোতির মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, পাসপোর্ট এবং ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে। জ্যোতির বাবার অভিযোগ, “আমাদের পুরো পরিবারকে বিপদে ফেলা হয়েছে। আমাদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে। শুধু চাই, আমাদের ফোনগুলো ফেরত দেওয়া হোক।”
হিসারের ডিএসপি কমলজিৎ জানিয়েছেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির নতুন ধারা BNS 152 এবং সরকারি গোপনীয়তা আইনে জ্যোতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর ডিভাইস থেকে বেশ কিছু সন্দেহজনক তথ্যও উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। বর্তমানে তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
এই ঘটনা ফের প্রমাণ করল, ইউটিউব বা সোশ্যাল মিডিয়াকে সামনে রেখে অনেক সময়েই বিদেশি গুপ্তচর সংস্থাগুলি ভারতীয় নাগরিকদের টার্গেট করছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, পর্যটন বা কনটেন্ট নির্মাণের আড়ালে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচারের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে – যা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।