আসামের কিংবদন্তি গায়ক জুবিন গর্গের রহস্যমৃত্যুর তদন্তে বড় অগ্রগতি। বুধবার নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মহন্ত এবং গায়কের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, সিঙ্গাপুরে আটক মহন্তকে প্রথমে দিল্লি আনা হয়, সেখান থেকে কড়া নিরাপত্তায় গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, শর্মাকে গুরুগ্রামের একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাকেও গুয়াহাটিতে স্থানান্তরিত করা হবে।
এর আগে গত সপ্তাহে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দুইজনের বিরুদ্ধেই লুকআউট নোটিশ জারি করা হয়েছিল। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘোষণা করেছিলেন, ৬ অক্টোবরের মধ্যে মহন্ত ও শর্মাকে তদন্ত দলের সামনে হাজির হয়ে বয়ান দিতে হবে।
জুবিনের মৃত্যু তদন্তে ইতিমধ্যেই আসাম সরকার ১০ সদস্যের একটি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করেছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিশেষ ডিজিপি এমপি গুপ্তা। শর্মার গুয়াহাটি বাসভবনে তল্লাশি চালিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দও করেছে দল।
জানা যায়, ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরের লাজারাস দ্বীপে ডুবে মৃত্যু হয় ৫২ বছর বয়সি এই জনপ্রিয় শিল্পীর। যদিও প্রাথমিকভাবে এটিকে স্কুবা ডাইভিং দুর্ঘটনা বলা হয়েছিল, গায়কের স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া গর্গ দাবি করেন, সাঁতার কাটার সময় খিঁচুনি ওঠার কারণে এই মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধতেই আসামে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করা হয়।
ঘটনার পর থেকে জুবিন ভক্তরা ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই শেখর জ্যোতি গোস্বামী নামে এক সংগীতশিল্পীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে, তদন্ত এগিয়ে নিতে ভারত সরকার সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স ট্রিটি (MLAT) প্রয়োগ করেছে। দু’জন আসাম পুলিশকর্মী সিঙ্গাপুরে গিয়ে প্রমাণ সংগ্রহ করছেন।
আসামের সর্বত্রই এখন শোক এবং ক্ষোভের আবহ। ভক্তরা একবাক্যে চাইছেন, জুবিন গর্গের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন হোক এবং দোষীদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।