জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জুবিন গর্গের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে নেমে অসম পুলিশ গ্রেফতার করেছে তাঁর ম্যানেজার সিদ্ধান্ত শর্মাকে। তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং হত্যার মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলায় নাম রয়েছে জুবিনের ফেস্টিভ্যাল অর্গানাইজার শ্যামকানু মহন্তও।
CID-র SIT যে তদন্ত রিপোর্ট জমা করেছে তাতে উল্লেখ রয়েছে প্রত্যক্ষদর্শী শেখর জ্যোতি গোস্বামীর কথাও। তিনি জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুরের প্যান প্যাসিফিক হোটেলে অদ্ভূত আচরণ করছিলেন জুবিনের ম্যানেজার। তাঁর অভিযোগ, সিদ্ধান্ত শর্মা জোর করে ইয়টের কন্ট্রোল নাবিকের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। যাত্রীদের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিয়েছিল সে। প্রত্যক্ষদর্শী এমনও বিস্ফোরক দাবি করেছেন, যখন জুবিন জলের মধ্যে কার্যত খাবি খাচ্ছিলেন, তখন এই সিদ্ধান্ত শর্মাই সকলকে চিৎকার করে বলেছিলেন, 'ওকে যেতে দাও'।
জ্যোতি গোস্বামী তদন্তকারীদের আরও জানিয়েছেন, জুবিন সাঁতারে পটু ছিলেন। জুবিনই নাকি সিদ্ধার্থ এবং জ্যোতিকে সাঁতার শিখিয়েছিলেন। ফলে ডুবে মারা যাওয়ার প্রশ্নই আসছে না। জ্যোতির আরও দাবি, সিদ্ধান্ত শর্মা এবং শ্যামকানু মহন্ত একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করে জুবিনকে বিষ খাইয়েছেন। এমনকী সেদিনের ইয়ট পার্টির ভিডিও কোথাও শেয়ার করতে নিষেধ করেছিলে জুবিনের ম্যানেজার। সূত্রের খবর, জুবিনের মৃত্যু তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি তাঁর ম্যানেজার।
জুবিন গর্গের রহস্যমৃত্যু ঘিরে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। গায়কের অকাল মৃত্যুর শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই এই মৃত্যু নিয়ে উঠে আসে একাধিক প্রশ্ন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শুক্রবার বলেছেন, 'গত মাসে সিঙ্গাপুরে রাজ্যের সাংস্কৃতিক আইকন জুবিন গর্গের মৃত্যুর তদন্তের জন্য গুয়াহাটি হাইকোর্ট একজন বর্তমান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনুরোধের ভিত্তিতে গুয়াহাটি হাইকোর্ট জুবিন গর্গের মৃত্যুর তদন্তের জন্য বিচারপতি সৌমিত্র শইকিয়ার নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। শনিবার কমিশন গঠন করা হবে। যাঁদের কাছে কিছু প্রমাণ বা ঘটনা রয়েছে, তাঁদের কমিশনের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি’।