সামনেই মহাশিবরাত্রি। এই দিনটি শিব ভক্তদের জন্য বিশেষ। এছাড়া সোমবারকে ভগবান শিবের দিন বলে মনে করা হয়। এই দিনে ভোলেনাথের পুজো করা হয়। তিনি তাঁর ভক্তদের কখনও নিরাশ করেন না। আসুন জেনে নিই শিব ৫টি প্রতীক ও তাদের মহিমা সম্পর্কে।
রুদ্রাক্ষের অর্থ হল
এটা বিশ্বাস করা হয় যে রুদ্রাক্ষের উৎপত্তি শিবের অশ্রু থেকে। রুদ্রাক্ষ প্রাচীনকাল থেকেই অলঙ্কার হিসেবে, সুরক্ষা, গ্রহের শান্তি এবং আধ্যাত্মিক লাভের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মোট ১৭ ধরনের রুদ্রাক্ষ প্রধানত পাওয়া যায়, তবে ১২ মুখী রুদ্রাক্ষ বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। রুদ্রাক্ষ কব্জি ও গলায় পরা যেতে পারে। জপমালা হিসাবেও ব্যবহার করা হয়। এটি গলায় ধারণ করা সবচেয়ে ভাল।
কব্জিতে ১২টি, গলায় ৩৬ টি এবং জপমালায় ১০৮টি রূদ্রাক্ষের দানা পরতে হবে। তবে কেউ চাইলে একটি রুদ্রাক্ষও পরতে পারেন, তবে এই রুদ্রাক্ষটি হৃদয় পর্যন্ত হওয়া উচিত এবং একটি লাল সুতোতে থাকা উচিত। কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী বা যেকোনো সোমবার রুদ্রাক্ষ পরা যেতে পারে। ফাল্গুন কৃষ্ণ চতুর্দশী অর্থাৎ শিবরাত্রিতে রুদ্রাক্ষ পরা উত্তম।
রুদ্রাক্ষ পরার আগে শিবকে উৎসর্গ করতে হবে এবং ওই জপমালা বা রুদ্রাক্ষের উপর মন্ত্রটি জপ করতে হবে। যারা রুদ্রাক্ষ পরিধান করেন তাদের সাত্ত্বিক থাকা উচিত এবং তাদের আচরণ শুদ্ধ রাখা উচিত, অন্যথায় রুদ্রাক্ষ উপকারী হবে না।
ডমরু
ভগবান শিব নৃত্য ও সঙ্গীতের প্রবর্তক। শিবের ডমরুতে শুধু সাত সুর নয়, এতে বর্ণমালাও রয়েছে। শিবের ডমরু বাজানো আনন্দ ও মঙ্গলের লক্ষণ। তিনি ডমরু বাজিয়ে যেমন খুশি তেমনি ডমরু শুনেও আনন্দিত হন। তাই ডমরু বাজিয়ে বাড়িতে নিয়মিত শিবের পুজো করা হলে গৃহে কখনও অমঙ্গল হয় না।
ত্রিশূল
জগতের যে শক্তিই হোক না কেন - দৈহিক, ঐশ্বরিক বা ভৌতিক, শিবের ত্রিশূলের সামনে দাঁড়াতে পারে না। শিবের ত্রিশূল প্রতিটি মানুষকে তার কর্ম অনুসারে শাস্তি দেয়। ঘরে সুখ-সমৃদ্ধির জন্য প্রধান দরজার উপরে ঠিক মাঝখানে একটি ত্রিশূল রাখুন বা তৈরি করুন। ত্রিশূল আকৃতি তখনই পরিধান করুন যখন আপনার মন, বাক্য এবং কাজের উপর আপনার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে।
ত্রিপুন্দ্র
সতগুণ, রজোগুণ এবং তমোগুণ এই তিনটি গুণকে নিয়ন্ত্রণ করার কারণে শিব ত্রিপুন্দ্র তিলক ব্যবহার করেন। এই ত্রিপুন্দ্র সাদা চন্দন কাঠ দিয়ে তৈরি। শিবের ভক্ত যে কোন ব্যক্তি ত্রিপুন্দ্র ব্যবহার করতে পারেন। ত্রিপুন্দ্রের মাঝখানে একটি লাল বিন্দু শুধুমাত্র বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা উচিত। ধ্যান বা মন্ত্র জপের সময় ত্রিপুন্দ্র প্রয়োগের ফল অত্যন্ত শুভ হয়।
ছাই
ভগবান শিব এই জগতের সমস্ত আকর্ষণ থেকে মুক্ত। তাঁর কাছে এই জগৎ, আসক্তি আর মায়া সবকিছুই ছাই-ভস্ম ছাড়া আর কিছুই নয়। একদিন ভস্মীভূত হয়ে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, ছাই এর প্রতীক। শিবকেও ভস্ম দিয়ে অভিষিক্ত করা হয়, যা বৈরাগ্য এবং জ্ঞানের দিকে পরিচালিত করে। ঘরে ধূপকাঠির ছাই দিয়ে ভগবান শিবকে অভিষেক করা যেতে পারে। তবে মনে রাখবেন মহিলাদের কিন্তু ছাই দিয়ে অভিষেক করা উচিত নয়।