আগামী ১২ জুলাই, সোমবার রথযাত্রা। ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে মূলত এই উৎসব বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করা হয়। করোনা অতিমারী গত এক বছর ধরে ভিন্ন অনুষ্ঠানের ছন্দপতন ঘটিয়েছে। এবারও বন্ধ পুরীর রথযাত্রা। তবে ভক্ত সমাবেশ না হলেও, নিষ্ঠা করে পালন করা হবে নিয়মকানুন।
বিশেষ তিথিতে ধুমধাম করে রথযাত্রার উৎসব পালিত হয় পুরী, মাহেশ, ইস্কনের মন্দিরে। শুধু তাই নয়, যে সমস্ত মন্দিরে ও বনেদি বাড়িতে জগন্নাথ দেব আছে, সেখানেও ঘটা করে পালন করা হয় এই উৎসব। জগন্নথধাম পুরী ঘিরে প্রচলিত রয়েছে একাধিক কাহিনি। জেনে নেওয়া যাক পুরীর রথযাত্রার কিছু অজানা তথ্য।
স্নান যাত্রার পর নিভৃতবাস থেকে বেড়িয়ে আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথে চড়ে দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে মাসির বাড়ি যান জগন্নাথদেব। এর সাতদিন পরে তাঁরা যখন ফিরে আসেন, সেই উল্টো রথ বা পূর্ণ যাত্রা।
রথযাত্রায় জগন্নাথ, বলরাম, শুভদ্রা ছাড়াও তাঁদের সঙ্গে সহযাত্রী হিসেবে থাকেন অন্যান্য দেব-দেবী। জগন্নাথের সঙ্গে থাকেন মদনমোহন, বলরামের সঙ্গে থাকেন রামকৃষ্ণ এবং শুভদ্রার সঙ্গে থাকেন সুদর্শনা।
ফাসি, ভাউনরা, আসানা মূলত এই তিন ধরনে কাঠের প্রয়োজন হয় রথ নির্মাণে। শোনা যায় পুরীর রথের নির্মাণে ১,১০০ বড় কাঠের প্রয়োজন হয়। যা ১২ ধরনের কাঠ থেকে আসে এবং সেখান থেকেই ৮ ফুটের বিশেষ ৮৬৫ টি গুঁড়ি বেছে নেওয়া হয়।
রথযাত্রায় জগন্নাথ, শুভদ্রা, বলরামের তিনটি আলাদা রথ তৈরি করা হয়। এই রথের আবার আলাদা নাম থাকে। জগন্নাথের রথটির নাম নন্দীঘোষ, বলরামের রথটির নাম তলধ্বজ এবং শুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন।
তিন ভাই বোনের তিনটি রথের চাকার সংখ্যাও আলাদা। জগন্নাথের রথের ১৬ টি চাকা, বলরামের রথে ১৪ টি এবং শুভদ্রার রথের ১২ টি চাকা থাকে।
শুধু তাই নয়, তিনটি রথের রংও আলাদা হয়। জগন্নাথের রথের রং হয় লাল-হলুদ। এটি মূলত বিষ্ণুর পছন্দের রং। অন্যদিকে বলরামের রথের রং লাল-সবুজ এবং শুভদ্রার রথ লাল -কালো রঙের।
তিনটি রথের ঘোড়ারও আলাদা নাম রয়েছে। যেমন জগন্নাথদেবের রথের চারটি ঘোড়ার নাম শঙ্খ, বলহাকা, শ্বেতা, হরিদশ্ব। বলরামের চারটি ঘোড়ার নাম তীব্র, ঘোড়া, দীর্ঘশর্মা, স্বরনাভ। শুভদ্রার চারটি ঘোড়ার নাম রুচিকা, মোচিকা, জিতা ও অপরাজিত।
ঘোড়ার রঙও হয় ভিন্ন। জগন্নাথের রথের জন্য থাকে সাদা রঙের ঘোড়া, বলরামের রথের জন্য কালো এবং শুভদ্রার রথের জন্য লাল রঙের ঘোড়া থাকে।