Eid-Ul-Adha 2025: মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন বকরি ইদ বা ইদ-উল-জুহা তথা ইদ-উল-আযহার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। এই বছর বকরি ইদ কখন উদযাপিত হবে এবং ভারতে কখন বকরি ইদের চাঁদ দেখা যাবে তা নিয়ে মানুষের অধীর আগ্রহ রয়েছে। ইসলামের অন্যতম প্রধান উৎসব বকরি ইদ, ইসলামী ক্যালেন্ডার অনুসারে জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে উদযাপিত হয়। আসুন জেনে নিই বকরি ইদ কবে এবং কেন এটি উদযাপিত হয়।
কোন দিন বকরি ইদ পালিত হবে?
সৌদি আরবে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ভারতে বকরি ইদের দিন। ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুসারে এর আগের মাস জুল হিস্সায় সৌদি আরবে চাঁদ দেখা গিয়েছিল ২৭ মে। সেই হিসেবে সৌদিতে বকরি ইদ পালিত হবে ৬ জুন। সেই হিসেবে ভারতে একদিন পর বকরি ইদ পালিত হবে ৭ জুন শনিবার।
কেন বকরি ইদ পালিত হয়?
ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহর প্রতি আনুগত্য এবং সম্পূর্ণ নিবেদন প্রদর্শনের জন্য বকরি ইদ উদযাপন করা হয়। এটি ত্যাগের উৎসব, যেখানে একজনের প্রিয় জিনিস আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়। নবী ইব্রাহিমের ত্যাগের স্মরণে বকরি ইদ উৎসব পালিত হয়। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহ নবী ইব্রাহিমকে পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন। তারপর তিনি আল্লাহর প্রতি তার নিবেদন প্রদর্শন করে তার পুত্র ইসমাইলকে কুরবানী করার সিদ্ধান্ত নেন। ইসমাইল ছিলেন তার সবচেয়ে প্রিয়। বলা হয় যে, যখন ইব্রাহিম তার পুত্রের কুরবানী শুরু করেন, তখন আল্লাহ তার আনুগত্য দেখে ইসমাইলের পরিবর্তে একটি ভেড়া পাঠান এবং ইসমাইলের জীবন রক্ষা করেন। এই ঘটনা আল্লাহর প্রতি সম্পূর্ণ নিবেদন এবং ত্যাগের চেতনার প্রতীক।
বকরি ইদের গুরুত্ব
এরপর বকরি ইদের দিন মুসলমানরা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করে। এতে কুরবানীর মাংস তিন ভাগে ভাগ করা হয়। প্রথম ভাগটি দরিদ্রদের দেওয়া হয়, দ্বিতীয় ভাগটি আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের কাছে পাঠানো হয় এবং তৃতীয় ভাগটি পরিবারের জন্য রাখা হয়। এ ছাড়া বকরি ইদের দিন নামাজও পড়া হয় এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয়। এছাড়াও, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা একে অপরকে আলিঙ্গন করে।
মুসলিমরা ঐতিহ্যগতভাবে ছাগল, ভেড়া বা উটের মতো পশু এদিন বলি দেন। সেই মাংস পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং অভাবীদের মধ্যে বিতরণ করেন। এই কারণেই ভারতে এই উৎসবকে সাধারণত বকরি ইদ বলা হয়। ইদের সকালে মুসলমানরা মসজিদে বিশেষ নামাজের জন্য সমবেত হন। এরপর কুরবানী করা হয়। দিনটি খাদ্য ভাগাভাগি, শুভেচ্ছা বিনিময় আর দরিদ্রদের সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। এটাই ইসলামী মূল্যবোধ। এই উৎসবটি ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে একটি হজ্জের সমাপ্তির সঙ্গেও মিলে যায়। যারা হজ্জে যান না তাদের জন্য, ইদ উল আযহা ব্যক্তিগত বিশ্বাস, ঐক্য এবং ত্যাগের প্রতিফলন।