scorecardresearch
 

Bhoot Chaturdashi 2022 : ভূত কয় প্রকার ও কী কী? জানুন তেনাদের কাণ্ডকারখানা

আজ রবিবার ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi 2022)। এছাড়াও এই দিনটি কালী চৌদাস, রূপ চৌদাস এবং নরক চতুর্দশী হিসাবেও পালিত হয়। পুরাণ মতে দৈত্যরাজ বলি স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখলের পর অসুরদের অত্যাচার শুরু হয়। অবশেষে বলিকে থামানোর জন্য ভগবান বিষ্ণু বামন অবতারে তাঁর কাছে তিন পা জমি চান। দৈত্যরাজ তাতে রাজি হন। এরপর বিষ্ণু বামন অবতারে দুই পা স্বর্গ ও মর্ত্যে দিলেন। আর এরপর নাভি থেকে বের হওয়া তৃতীয় পা বলির মাথায় দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দিলেন পাতালে।

Advertisement
প্রতীকী ছবি প্রতীকী ছবি
হাইলাইটস
  • আজ ভূত চতুর্দশী
  • বাংলা সাহিত্যেও অনেক ভূতের উল্লেখ রয়েছে
  • জানুন তাঁদের সম্পর্কে

সোমবার দীপাবলি (Diwali 2022)। আর তার ঠিক আগেরদিন, অর্থাৎ আজ রবিবার ভূত চতুর্দশী (Bhoot Chaturdashi 2022)। এছাড়াও এই দিনটি কালী চৌদাস, রূপ চৌদাস এবং নরক চতুর্দশী হিসাবেও পালিত হয়। পুরাণ মতে দৈত্যরাজ বলি স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখলের পর অসুরদের অত্যাচার শুরু হয়। অবশেষে বলিকে থামানোর জন্য ভগবান বিষ্ণু বামন অবতারে তাঁর কাছে তিন পা জমি চান। দৈত্যরাজ তাতে রাজি হন। এরপর বিষ্ণু বামন অবতারে দুই পা স্বর্গ ও মর্ত্যে দিলেন। আর এরপর নাভি থেকে বের হওয়া তৃতীয় পা বলির মাথায় দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দিলেন পাতালে। বামন অবতারে বিষ্ণুকে চিনতে পারলেও নিজের কথা রাখতে পাতালেই প্রবেশ করেন বলি। যার জেরে বিষ্ণু বলিকে প্রতি বছর পৃথিবীতে পুজো পাওয়ার আশীর্বাদ দেন। কছিত আছে, তারপর থেকেই কালীপুজোর আগের রাতে রাজা বলি পাতাল থেকে পৃথিবীতে পুজো নিতে আসেন। আর তাঁর সঙ্গে আসে শত-সহস্র ভূত, প্রেতাত্মা ও অশরীরিরা। আবার কারও কারও মতে, এই দিন চামুণ্ডারূপে মা কালী চোদ্দজন ভূতকে সঙ্গে নিয়ে অশুভ শক্তিকে দূর করতে পৃথিবীতে আসেন। 

এতো গেল ভূত চতুর্দশীর কথা। তবে বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্য ও উপনাস্যাসেও বহু ভূতের উল্লেখ পাওয়া যায়, যা রীতিমতো বারেবারে কাঁটা দিয়েছে গায়ে। চলুন একবার মনে করা যাক, বাঙলা সাহিত্য তথা বাঙালি জীবনের আষাঢ়ে গল্পে কোন কোন ভূতের কথা শোনা গিয়েছে।

ব্রহ্মদৈত্য - ছোট বেলা থেকে মা-ঠাকুমাদের কাছে ব্রহ্মদৈত্যের নাম খুব শোনা গিয়েছে। সাধারণত এঁরা হলেন ব্রাহ্মণ ভূত। সাদা ধুতি ও পৈতাধারী অবস্থায় এনার ঘুরে বেড়ান। এঁদের বাস বেলগাছে। ব্রহ্মদৈত্য অত্যন্ত দয়ালু ও উপকারী ভূত বলেই গণ্য হন। 

পেত্নি -  যে সমস্ত মহিলারা অবিবাহিত অবস্থায় মনে কোনও আশা-আকাঙ্খা নিয়ে মারা যান, তাঁরাই নাকি মৃত্যুর পর পেত্নি হন। পেত্নী শব্দটি সংস্কৃত প্রেতিনী শব্দ থেকে এসেছে। এঁরা অত্যন্ত বদমেজাজী। পেত্নিরা যে কোন রূপ ধারণ করতে পারেন, তবে এঁদের পায়ের পাতা ও আঙুল পেছনের দিকে ঘোরানো থাকে।

Advertisement

শাকচুন্নি - এই শব্দটি সংস্কৃত শব্দ শঙ্খচূর্ণী থেকে এসেছে। হিন্দু বিবাহিত মহিলারা মৃত্যুর পর কখনও কখনও শাকচুন্নি হয়ে যান। এঁরা মূলত সাদা শাড়ি এবং হাতে শাঁখা পরেন। লোকগাথা অনুসারে এনাদের বাস শেওড়া গাছে। 

নিশি - শোনা যায়, ভূতদের মধ্যে অন্যতম ভয়ংকর হল এই নিশি। অন্যান্য ভূত সাধারণত নির্জন এলাকায় মানুষকে একা পেলে আক্রমণ করে। কিন্তু নিশি গভীর রাতে শিকারকে তাঁর প্রিয় মানুষের কন্ঠে নাম ধরে ডাকে এবং বাইরে বের করে নিয়ে যায়। আজও কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, নিশির ডাকে সাড়া দিয়ে মানুষ সম্মোহিত হয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে পড়লে আর কখনও ফিরে আসেন না। লোকগাথা অনুসারে, নিশিরা কোনও মানুষকে তিনবারের বেশি ডাকতে পারে না। তাই গ্রাম বাংলায় কেউ কেউ মনে করেন, রাতে তিনবারের বেশী ডাকলেই ঘর থেকে বেরনো উচিত। তাতে নাকি নিশির আক্রমণের ভয় থাকে না।

মামদো ভূত - বিশেষ এক সম্প্রদায়ের মানুষ নাকি মৃত্যুর পর মামদো ভূতে পরিণত হন। এই ভূতের দেহে গঠনও অদ্ভূত। কোমরের নীচের অংশ ক্রমশ সরু। এঁদের কোনও পা নেই। এঁরা বাতাসে ভেসে থাকেন। এঁদের কারও মাথায় টুপি এবং লম্বা লম্বা দাড়ি দেখতে পাওয়া যায়। সাধারণত কবরস্থানে ও তার আশেপাশে থাকা বড় গাছে মামদো ভূতেদের বাস বলে বিশ্বাস করা হয়। 

মেছোভূত - এই ধরণের ভূতেরা মাছ খেতে পছন্দ করে। মেছো শব্দটি এসেছে মাছ থেকে। মেছো ভূতের বাস সাধারণত গ্রামের কোনও পুকুরপাড়ে বা জলাশয়ের ধারে। মাঝে মাঝে তাঁরা নাকি গৃহস্থের রান্নাঘর বা জেলেদের নৌকা থেকেও মাছ চুরি করে, বা কেউ মাছ নিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ও নির্জন স্থান বুঝে আক্রমণ চালান।

স্কন্ধকাটা - এই ভূতেদের মাথা নেই। সাধারণত রেলে মাথা দিলে বা কোনও দুর্ঘটনায় মাথা কেটে মৃত্যু হলে তাঁরা নাকি স্কন্ধকাটা হয়ে যান। এই প্রজাতির ভূতেরা নিজেদের মাথা খুঁজে বেড়ান। 

এছাড়াও চোরাচুন্নি, পেঁচাপেঁচি, দেও, গেছোভূত, আলেয়া, বেঘোভূত, কানাভুলো, ঝেঁয়ো পেত্নি, ডাকিনী, গোভূত-সহ আরও বহু ভূত-পেত্নির উল্লেখ রয়েছে বিভিন্ন শিশু ও কিশোর সাহিত্যে। 

(Disclaimer : প্রতিবেদনটি সাধারণ গল্প ও লোকগাথা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে লেখা, কোনও অন্ধবিশ্বাসকে উৎসাহ দেওয়া এর উদ্দেশ্য নয়।)

আরও পড়ুনমৃত বালিকাকে বাঁচিয়ে তুলেছিলেন! জানুন ভবাপাগলার আরও অলৌকিক কাহিনি


 

Advertisement