দুর্গাপুজো এসে গেছে। কুমোরটুলি থেকে বেশিরভাগ মাতৃ প্রতিমা মণ্ডপে এসে গেছে। আলোর রোশনাইতে সেজে উঠেছে কলকাতা শহর ও রাজ্যের অলিগলি। উৎসবপ্রেমী বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ এই দুর্গা পুজো।
আশ্বিন মাসে প্রায় দশ দিন ধরে দুর্গাপুজোর উৎসব পালিত হয়। যদিও প্রকৃত অর্থে, উৎসব শুরু হয় ষষ্ঠীর দিন থেকে। দুর্গাপুজোর পাঁচ দিন মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী এবং বিজয়া দশমী হিসেবে পরিচিত।
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, ষষ্ঠীর দিন দেবী দুর্গা তাঁর সন্তান- সরস্বতী, লক্ষ্মী, গণেশ এবং কার্তিককে নিয়ে মর্তে অবতরণ করেন। মহাষষ্ঠীর প্রাক্কালে দুর্গার বোধনের পর সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান শুরু হয়। পুজো প্যান্ডেল,মন্দির, বনেদিবাড়ি এমনকি যেখানে দুর্গার আরাধনা করা হয়, সর্বত্র ঢাকের তালে মেতে ওঠেন সকলে। সপ্তমীতে মহাপুজো হয়। সূর্য ওঠার আগেই, একটি কলাগাছ পবিত্র গঙ্গার জলে স্নান করিয়ে, তারপর এটিকে নববধূর (কলা বউ) মতো নতুন শাড়ি পরানো হয়।
আরও পড়ুন: অঞ্জলি, সন্ধিপুজো থেকে বলিদানের শুভ সময়! জানুন মহাষ্টমীর নির্ঘণ্ট
মহাসপ্তমীর তারিখ (Maha Saptami Date)
* ১২ আশ্বিন, ইং ২৯ সেপ্টেম্বর, সোমবার
মহাসপ্তমীর নির্ঘণ্ট (Maha Saptami Nighanta)
* পূর্বাহ্ন সকাল ১০। ৪৪। থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর বেলা ১২। ২৮ পর্যন্ত থাকবে সপ্তমী তিথি।
* দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন ও সপ্তম্যাদিকল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা প্রশস্তা।
নবপত্রিকা স্নান
প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম কলাবউ। এই নবপত্রিকা স্নানকে অনেকে কলা বউ স্নানও বলে থাকেন। সূর্য ওঠার আগেই, একটি কলাগাছ পবিত্র গঙ্গার জলে স্নান করিয়ে, তারপর এটিকে নববধূর (কলা বউ) মতো নতুন শাড়ি পরানো হয়। 'নবপত্রিকা' শব্দটির আক্ষরিক অর্থ ৯ টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকা ৯ টি গাছের পাতা নয়, আসলে ৯ টি উদ্ভিদ। যেগুলি হল - কদলী বা রম্ভা (কলা), বিল্ব (বেল), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, দাড়িম্ব (দাড়িম), অশোক, ধান ও মান।
আরও পড়ুন: ৫ বড় গ্রহ অবস্থান পাল্টাবে! অক্টোবরে পদোন্নতি, টাকা প্রাপ্তি ৫ রাশির জাতকদের
নবপত্রিকার ৯টি উদ্ভিদ আসলে দুর্গার ৯টি বিশেষ রূপের প্রতীকরূপে কল্পনা করা হয়। এই ৯ দেবী হলেন রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, জয়ন্ত্যাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী উমা, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ডা ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী। এই ৯ দেবী একত্রে 'নবপত্রিকাবাসিনী নবদুর্গা' নামে পূজিতা হন। যার মূল মন্ত্র "নবপত্রিকাবাসিন্যৈ নবদুর্গায়ৈ নমঃ"।
২০২৫-এ দেবী দুর্গার আগমন
২০২৫ সালে দেবী দুর্গার আগমন গজে, যার অর্থ বসুন্ধরা শস্য শ্যামলা হবে।
২০২৫-এ দেবী দুর্গার গমন
দেবীর গমন দোলায়, যা মহামারী বা মড়কের প্রতীক। ফলে বলা যায়, এবার দুর্গার আগমন শুভ হলেও, গমন অশুভ ইঙ্গিত দিচ্ছে।