প্রতীকী ছবি চলছে বিয়ের মরসুম। সব ধর্মের বিয়েতে নানা রকম রীতিনীতি- নিয়মকানুন থাকে। তার মধ্যে হিন্দু বিয়েতে বহু শতাব্দী ধরে পালন করা হয়ে আসছে, এমন অনেক রীতিনীতি রয়েছে। বিশ্বাস করা হয় যে, বিয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত ছোট-বড় প্রতিটি ঐতিহ্য সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। বর- কনের দাম্পত্য সুখ ও মঙ্গল কামনার সঙ্গে মূলত এই সব নিয়মকানুন জড়িত। বাঙালি হিন্দু বিয়েতে আবার এমন অনেক রীতি রয়েছে, যা বাঙাল ও এদেশীয়দের মধ্যে আলাদা।
এগুলির পাশাপাশি, শাস্ত্রে কিছু রীতিনীতি বাধ্যতামূলক বলে বিবেচিত হয়। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হল, সব বিয়ের রীতিনীতির সময় কনে, বরের বাম পাশে বসেন। এই রীতি শুধুমাত্র একটি সাংস্কৃতিক বিশ্বাসই নয়, সেই সঙ্গে বৈদিক ঐতিহ্য এবং বিবাহিত জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত।
বরের বাম পাশে কনের বসার রীতি
ঐতিহ্যগতভাবে, বিশ্বাস করা হয় যে বিয়ের সময় কনে, বরের বাম পাশে বসলে বিয়ে সম্পূর্ণ হয়। হিন্দু শাস্ত্রে স্ত্রীকে বামাঙ্গিনী বলা হয়, যার অর্থ স্বামীর বাম পাশে, তার হৃদয়ের কাছাকাছি অবস্থিত। এই বিশ্বাস অনুসারে, বিয়েতে কনে বরের বাম পাশে বসে থাকা মানে, তিনি সর্বদা তার হৃদয়ের কাছাকাছি থাকবেন, তাদের সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং সম্প্রীতি নিশ্চিত করবেন।
এই দেব-দেবীর সঙ্গে সম্পর্কিত
শাস্ত্র অনুসারে, দেবী লক্ষ্মী সর্বদা ভগবান বিষ্ণুর বাম পাশে বসেন। এই কারণেই দেবী, ভগবান শিবের বাম পাশ থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটি অর্ধনারীশ্বর রূপে প্রতিফলিত হয়, যেখানে শিব এবং শক্তি একই দেহের দুটি অংশ হিসাবে উপস্থিত হন। এই কারণেই বিয়ের অনুষ্ঠানে কনের বরের বাম পাশে বসে থাকার প্রথা রয়েছে।
জ্যোতিষশাস্ত্রীয় দৃষ্টিভঙ্গি
জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, সপ্তম ঘর বিয়েকে, নবম ঘর ভাগ্যকে এবং একাদশ ঘর লাভকে প্রতিনিধিত্ব করে। অনেক পণ্ডিতের মতে, কনের ঘরে প্রবেশ এবং বরের বাম পাশে বসে সৌভাগ্য এবং আর্থিক লাভের সম্ভাবনা জোরদার করে। তাই, আজও এই ঐতিহ্যকে শুভ বলে মনে করা হয়।