Jagannath Rath Yatra: রথের দড়ি ছুঁতে পারলেই জীবনে বিরাট প্রাপ্তি হয়? ব্যাখ্যা দিলেন নৃসিংহপ্রসাদ

জগন্নাথদেবের রথের রশিতে একবার টান দিতে পারলেই জীবনের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সত্যিই কি তাই? রথের দড়িতে টান দিলে কী হয়? ব্যাখ্যা করলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি।

Advertisement
রথের দড়ি ছুঁতে পারলেই জীবনে বিরাট প্রাপ্তি হয়? ব্যাখ্যা দিলেন নৃসিংহপ্রসাদরথের মাহাত্ম ব্যাখ্যা নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির
হাইলাইটস
  • রথের রশিতে একবার টান দিতে পারলেই জীবনের সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি?
  • রথের দড়িতে টান দিলে কী হয়?
  • ব্যাখ্যা করলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি

প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। অপেক্ষার প্রহর গুনছেন ভক্তরা। শুক্রবার, ২৭ জুন গড়াবে জগন্নাথদেবের রথের চাকা। আর সেই রথের দড়িতে টান দিতে আকুল হয়ে উঠছেন ভক্তরা। জগন্নাথ ভক্তরা বিশ্বাস করেন, রথের রশি জীবনে অন্তত একবার টানার সুযোগ হলে মোক্ষলাভ সম্ভব। কী রয়েছে এই রশিতে? সত্যিই কি এটি একবার ছুঁলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি মেলে? ব্যাখ্যা দিলেন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি। 

রথের মাহাত্ম

কেবলমাত্র রথের রশি নয়, পূর্ণ রথেরই রয়েছে মাহাত্ম। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, 'আত্মানং রথিনং বিদ্ধি শরীরং রথমেব তু। নিজের আত্মাকে রথী বলে মানা হয়। অর্থাৎ রথ যাঁর আছে। আমাদের অন্তরাত্মা, যিনি ভিতরে রয়েছেন, তা হচ্ছে অঙ্গুষ্ঠ মাত্র পুরুষ। অর্থাৎ সেই অন্তর্যামী, যিনি সমস্ত কিছুর সাক্ষী থাকেন কিন্তু কোনও কিছুর সঙ্গে জড়ান না। তবে তিনি ছেতন এবং আত্মা, যাঁর সঙ্গে পরমাত্মার মিল হয়। তিনিই আমি। এই যে বোধ, যেখানে আত্মাকে-অন্তর্যামীকে ধরে রাখা হয়, সেটিই হল রথ। সেই রথকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় মোক্ষের দিকে।' তিনি আরও বলেন, 'যখন জগন্নাথদেবের রথযাত্রা হচ্ছে, আমরা সমস্ত কিছু ছেড়ে রথে টানতে চলে যাচ্ছি। রশের রশি ধরতে যাচ্ছি।' 

কেন রশি ছোঁয়ার আগ্রহ ভক্তদের?

কিন্তু ঠিক কী কারণে ভক্তরা রথের রশি ছোঁয়ার জন্য আকুল হয়ে ওঠেন? নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, 'এমনি এমনি তো রথের রশিতে টান দেওয়া হচ্ছে না, রথটাকে চালনা করার জন্যই তা করা হয়। নইলে রশির কোনও মানে নেই। রশি এখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হল রথটাকে চালানো।' 

কোন দিকে চালানো হচ্ছে রথ?

নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ির ব্যাখ্যা, 'যখন কেউ জগন্নাথের রথ চালাচ্ছেন, আত্মা যে অন্তরে রয়েছে তাঁর খোলস হচ্ছে রথ। শরীর হচ্ছে রথ। শরীরটা যাঁর, যে আত্মা শরীরক অবলম্বন করে বসে আছেন, তিনি হচ্ছেন রথী। গুণ আছে যাঁর গুণী, ধন আছে যাঁর ধনী, তেমনই রথ আছে যাঁর তিনি রথী। শরীরটাকে রথ হিসেবে ধরে যদি আমরা জগন্নাথের রথ চালাই, তাহলে মুক্তির দিকে-মোক্ষলাভের উদ্দেশে আমরা নিজেদের চালনা করব। এইখানেই রশের রথির গুরুত্ব।' তাঁর সংযোজন, 'ঠিক যেমন আত্মাকে আমরা স্পর্শ করতে পারি না, তেমনই জগন্নাথের বিগ্রহকেও আমরা স্পর্শ করতে পারি না। তার মানে আমরা যে কর্ম করি, সেটাই হচ্ছে রথের রশি। ভাল কর্ম আমরা করতে পারলে মোক্ষলাভ করতে পারব। জগন্নাথকে চালনা করছি মানে সুকর্ম করার চেষ্টা করছি। রথের রশি টেনে চালানোর চেষ্টা করছি। যাচ্ছি পুরীতে গুণ্ডিচা মন্দিরের উদ্দেশে। অর্থাৎ বলা যেতে পারে ওই গুণ্ডিচা মন্দিরের মোক্ষ লুকিয়ে রয়েছে।'

Advertisement

'হাসেন অন্তর্যামী...,' ব্যাখ্যা ইতিহাসবিদের

'রথ ভাবে আমি দেব, পথ ভাবে আমি, মূর্তি ভাবে আমি দেব, হাসেন অন্তর্যামী...।' একথার ব্যাখ্যা করে নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, 'রথ কিন্তু দেবতা নয়। রবীন্দ্রনাথের কথার মধ্যেও তা স্পষ্ট। হাসেন অন্তর্যামী অর্থাৎ তাঁকেই আমরা মোক্ষলাভের উদ্দেশে চালাচ্ছি। রথের রশি ধরে টানার সময়ে তাঁর কথাই ভাবছি।'

 

POST A COMMENT
Advertisement