scorecardresearch
 

Naihatis Boroma Puja: ১০০ কেজির গয়না পরেন, ১০১ তম বর্ষে নতুন চমক, নৈহাটির 'বড়মা'র নামের মাহাত্ম্য জানেন?

আগামী সপ্তাহে কালী পুজো। বাংলায় আরও এক বিখ্যাত ও জাগ্রত দেবী কালী হলেন নৈহাটির বড়মা। নৈহাটি বড়মার পুজোয় এবার ১০১ তম বর্ষ। এই পুজোয় প্রতি বছর অগণিত মানুষের ভিড় হয়। এবারের পুজোয় থাকছে নতুন চমক। কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এবারের সুউচ্চ কালী প্রতিমা তৈরীর কাজ। দিন কয়েক আগেই প্রতি বছরের মতো এবছরও সংস্কার করা হয় বড় মা কালীর কাঠামোটি। তার উপরই বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় মূল কাঠামোর অংশ।

Advertisement
অলৌকিক ক্ষমতা আছে বলেন ভক্তরা অলৌকিক ক্ষমতা আছে বলেন ভক্তরা


আগামী সপ্তাহে কালী পুজো।  বাংলায় আরও এক বিখ্যাত ও জাগ্রত দেবী কালী হলেন নৈহাটির বড়মা। নৈহাটি বড়মার পুজোয় এবার ১০১ তম বর্ষ। এই পুজোয় প্রতি বছর অগণিত মানুষের ভিড় হয়। এবারের পুজোয় থাকছে নতুন চমক। কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এবারের সুউচ্চ কালী প্রতিমা তৈরীর কাজ। দিন কয়েক আগেই প্রতি বছরের মতো এবছরও সংস্কার করা হয় বড় মা কালীর কাঠামোটি। তার উপরই বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় মূল কাঠামোর অংশ।

প্রসঙ্গত, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও পৌঁছে গিয়েছে জাগ্রত নৈহাটির বড় মা কালীর মাহাত্ম্যের কথা। প্রতিবছরই তাই লক্ষাধিক ভক্ত সমাগম ঘটে বড় মা কালীর পুজো দেখতে। নৈহাটি অরবিন্দ রোডে মৃৎশিল্পীদের হাতে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে  বড়মার প্রতিমা। কাঠামোর নিচে লাগানো বিশেষ চাকার দ্বারাই, পুজো শেষে এই প্রতিমা টেনে নিয়ে গিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে। সুউচ্চ ২১ ফুটের মূর্তির পাশাপাশি, বড়মার সারা গায়ে পড়ানো স্বর্ণালংকার দেখতেও বিশেষ উৎসাহ লক্ষ্য করা যায় ভক্তদের মধ্যে। পুজোর কদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ দণ্ডী কাটেন মায়ের আশীর্বাদ লাভে। 

 

আরও পড়ুন

এবার নৈহাটির বড়মার পুজোর ১০১ তম বর্ষ
গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নতুন করে বড়মার মন্দির। সেখানে বসেছে মায়ের কষ্টি পাথরের প্রতিষ্ঠিত মূর্তি। নৈহাটি বড়মার পুজো নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপণার অন্ত নেই। নৈহাটির বড়মার পুজোর কথা সর্বজনবিদিত। পুরাণ মতে, কালীর রয়েছে বিভিন্ন রূপ। কোথাও শ্যামাপুজো, কোথাও শ্মশানকালী, কোথাও চামুণ্ডাকালী পূজিত হন। দেবীর বিভিন্ন রূপ বহু জায়গায় নানা নামে আরাধনা করা হয়। কালীপুজোয় দক্ষিণেশ্বর, ঠনঠনিয়া, লেক কালীবাড়ি, তারাপীঠ, কামাখ্যা, কালীঘাট থেকে শুরু করে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে কালী মন্দিরে দীপান্বিত অমাবস্যায় বিশেষপুজোর আয়োজন করা হয়। বাংলায় আরও এক বিখ্যাত ও জাগ্রত দেবী কালী হলেন নৈহাটির বড়মা। এক অমোঘ টানে প্রতি বছর হাজার হাজার ভক্ত মানত করেন, পুজো দেন, ভিড় করেন একঝলক শুধু দেখার জন্য। নৈহাটির অরবিন্দ রোডের ধর্মশালা বড় কালী ঠাকুরকেই স্থানীয়রা বড়মা বলে ডাকেন। সেই থেকেই চারিদিকে ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর কাহিনি।

Advertisement

বড়মা কেন নাম? 
অনেকেই শনিঠাকুরকে বড় ঠাকুর বলে থাকেন। গ্রহরাজ ও গ্রহের অধিপতি বলে তাঁকে বড়ঠাকুর বলে অনেকেই ডাকেন। তেমনি নৈহাটির বড়মার নামকরণ হয়েছে এক বিশেষ কারণে। এই কালী মূর্তির আকারে ও উচ্চতায় বিরাট, প্রায় ২১ ফুটের কাছাকাছি উচ্চতা। প্রায় ধরুন ১৪ হাত উঁচু একটি কালীমূর্তি। এই কারণে এই দেবীকে বড়মা বলে ডাকেন সকলে। কালীপুজোর সকাল থেকেই এই ঐতিহ্যবাহী পুজোয় হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয়। অনেকে দণ্ডি কাটেন, মনোবাসনা পূরণ করার জন্য গঙ্গাস্নান করে প্যান্ডেলে দণ্ডি কাটেন। তবে এই পুজো আগে এত জনপ্রিয় ছিল না। রাস্তার ধারে রক্ষাকালী মূর্তিতেই পুজো করতেন একদল যুবক। আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে, ভবেশ চক্রবর্তী ও তাঁর চার বন্ধু মিলে নবদ্বীপে ভাঙা রাস দেখতে যান। সেখানে গিয়ে বড় বড় মূর্তি দেখে চোখ ওঠে কপালে। বিস্মিত হয়ে বড় বড় মূর্তি দেখে নৈহাটিতে একটি রক্ষাকালী মূর্তিকে বিশালাকার মূর্তি গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কথিত আছে, এই পুজো ভবেশ চক্রবর্তী স্থাপন করেছিলেন, তাই এই দেবীকে ভবেশ কালীও বলা হয়। প্রথমে সকলে ভবেশ কালীই বলে ডাকতেন, তারপর বিশালাকার মূর্তিকে বড়মা বলে অভিহিত করেন।

 

বড়মায়ের একটি স্থায়ী মন্দির রয়েছে
নৈহাটিতে বড়মায়ের একটি স্থায়ী মন্দির রয়েছে। সেখানে নিয়মিত পুজো হলেও পূর্বে যে জায়গায় রক্ষাকালী পুজো করা হত কালীপুজোয়, সেখানেই প্রতিবছর মৃন্ময়ী রূপে প্রতিষ্ঠা করা হয়, সেখানেই পুজো করা হয়। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় খুঁটিপুজো করা হয়। তারপর স্থানীয়দের মতে, এই পুজো সার্বজনীন হলেও কারও কাছ থেকে কখনও চাঁদা বা দক্ষিণা নেওয়া হয় না। দেবীর গায়ের গয়না থেকে ভোগ, পুজোর সামগ্রী,পুজোর সমস্ত খরচ করে থাকেন সাধারণ ভক্তরা।

 ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী বড়মা অত্যন্ত জাগ্রত
 সাধারণ রূপে দেবী রক্ষাকালী রূপে পরিচিত। তাঁর সেই রূপ যেন অগণিত ভক্তের কাছে আক্ষরিক অর্থেই বাস্তবোচিত হয়ে উঠেছে। নৈহাটি স্টেশন থেকে পশ্চিমদিকে ঋষি অরবিন্দ রোড ধরে গঙ্গার দিকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই বড়মার পুজো। নৈহাটির বড়মায়ের গায়ে গয়না দেখলে অবাক হতে হয়। কারণ গোটা মূর্তিই সোনা-রূপার বিভিন্ন আকারের গয়নায় মোড়া থাকেন। শোনা যায়, বড় মা সোনা ও রূপা ছাড়া আর কোনও ধাতুর অলঙ্কার পরেন না। তাই ভক্তরাই মনোবাসনা পূরণ করার জন্য বিভিন্ন সময় সোনা ও রুপোর গয়না মানত হিসেবে দিয়ে থাকেন। হিসেব বলছে, প্রায় দেড় কোটি টাকার গয়না পড়েন বড় মা। প্রতিবছর কালীপুজোয় সেই গয়না পরিয়ে পুজো করা হয়। স্বর্ণালঙ্কারে সেজে ওঠেন বড়মা।

 

১০০ কেজির সোনার গয়না পরেন বড়মা
পুজোর দিন ১০০ কেজির সোনার গয়না পরানো হয় বড়মাকে। থাকে কড়া নিরাপত্তা। বড়মার পুজো শুরু না হলে নৈহাটির কোন পুজো শুরু হয় না।একদিন নয়, টানা পাঁচদিন ধরে চলে বড়মার উপাসনা। নিরঞ্জনের দিন দেবীমূর্তিকে ফুলের সাজে সাজিয়ে গোটা এলাকায় বিশাল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। স্থানীয়দের মতে, বড় মায়ের বিসর্জন না হওয়া পর্যন্ত নৈহাটির অন্য কোনও কালীমূর্তিকে বিসর্জন করা যায় না। আয়োজন করা হয় আলোর কার্নিভালও।

Advertisement

Advertisement