Jagannath Dev Favourite Food: রোজ সকালে পুরীর মন্দিরে কেন খিচুড়ি খান জগন্নাথদেব? রইল সেই রেসিপিও

২৭ জুলাই জগন্নাথ রথযাত্রা। রথযাত্রা উপলক্ষে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে এই শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। এখানে প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথকে বিষ্ণুর দশম অবতার মনে করা হয়। পুরাণে জগন্নাথ ধামকে মর্ত্যের বৈকুন্ঠ অর্থাৎ স্বর্গ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ধর্মের চারটি পবিত্র ধামের মধ্যে অন্যতম পুরী। জগন্নাথ মন্দিরে সকালে জগন্নাথকে খিচুড়ির বালক ভোগ নিবেদন করা হয়। এর পিছনে একটি পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে।

Advertisement
রোজ সকালে পুরীর মন্দিরে কেন খিচুড়ি খান জগন্নাথদেব? রইল সেই রেসিপিওএই খিচুড়ি দিতেই হবে জগন্নাথদেবকে

২৭  জুলাই জগন্নাথ রথযাত্রা। রথযাত্রা উপলক্ষে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে এই শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। এখানে প্রতিষ্ঠিত জগন্নাথকে বিষ্ণুর দশম অবতার মনে করা হয়। পুরাণে জগন্নাথ ধামকে মর্ত্যের বৈকুন্ঠ অর্থাৎ স্বর্গ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ধর্মের চারটি পবিত্র ধামের মধ্যে অন্যতম পুরী। জগন্নাথ মন্দিরে সকালে জগন্নাথকে খিচুড়ির বালক ভোগ নিবেদন করা হয়। এর পিছনে একটি পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে। 

 পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ভগবানকে খিচুড়ি দেওয়া হয়। এই গল্পটি একজন মায়ের ভালবাসার সঙ্গে সম্পর্কিত। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে,  কর্মাবাই ছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পরম উপাসক, যিনি জগন্নাথ ধাম  পুরীতে থাকতেন এবং ভগবানকে তার পুত্রের মতো ভালোবাসতেন। আজও কেন ভগবানকে খিচুড়ি দেওয়া হয়, এর পেছনে কর্মাবাইয়ের ভালবাসার সঙ্গে  সম্পর্কিত একটি গল্প আছে। 

বৃদ্ধার মনে হত সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই জগন্নাথ দেবের খিদে পেয়ে যায়। তাই তিনিও খুব সকালে ঘুম থেক উঠে স্নান না করেই খিচুড়ি রান্না করতে বসতেন। সকাল সকাল বালক রূপ ধরে জগন্নাথদেব কর্মাবাইয়ের পর্ণকুটিরে যেতেন এবং সেই খিচুড়ি খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করতেন। এই খিচুড়ির স্বাদ ছিল তাঁর বড়ই প্রিয়। এভাবেই চলছিল। একদিন এক সাধু, কর্মাবাইকে স্নান না করেই খিচুড়ি রান্না করে জগন্নাথদেবকে ভোগ নিবেদন করতে দেখেন। তিনি কর্মাবাইকে নিষেধ করে বলেন যে প্রভুর ভোগ রান্না এবং নিবেদনের আগে বিশুদ্ধ হওয়া জরুরি। পরদিন সাধুর কথামতো কর্মাবাই স্নান সেরে নিয়ম মেনে যখন জগন্নাথ দেবকে খিচুড়ি ভোগ দেন। তখন বেলা গড়িয়ে মন্দিরে দুপুরের ভোগের সময় হয়ে গিয়েছিল। এদিকে সকাল থেকে কিছু না খেতে পেয়ে জগন্নাথও ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েন। কর্মাবাইয়ের খিচুড়ি হতেই গপ গপ করে সেই খিচুড়ি খেয়ে মন্দিরে ফেরেন। পুরোহিতরা দেখলেন যে জগন্নাথ দুপুরে কিছু খাচ্ছেন না। তাঁর মুখে খিচুড়ি লেগে রয়েছে। জগন্নাথকে তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাধুর কীর্তির কথা বলেন। তাঁর মুখে সমস্ত কথা শুনে মন্দিরের পুরোহিতেরা লজ্জিত এবং অনুতপ্ত হন এবং কর্মাবাঈয়ের কাছ ক্ষমা প্রার্থনা করে বলেন যে, তিনি যেন আগের মতোই সকালে স্নানের আগেই জগন্নাথের জন্য খিচুড়ি রান্না করে ভোগ নিবেদন করেন। এরপর একদিন দেখা যায় জগন্নাথ দেব খুব কাঁদছেন। তাঁর খিদে পেয়েছে। পুরোহিতরা তাঁকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন যে প্রভুর 'মা' কর্মাবাই মারা গেছেন। তাই তাঁকে খিচুড়ি রেঁধে খাওয়ানোর কেউ নেই। এরপর রাজার নির্দেশে পুরী মন্দিরের বাল্যভোগে সেই খিচুড়ি রান্না শুরু হয়। জগন্নাথ দেবের কথা মতো সেই খিচুড়ির নাম হয় ‘কর্মাবাই খিচুড়ি’। 

Advertisement

আপনিও চাইলে এবারের রথযাত্রায় তৈরি করতে পারেন জগন্নাথদেবের প্রিয় সেই ‘কর্মাবাই খিচুড়ি’। রইল রেসিপি-

উপকরণ
গোবিন্দভোগ চাল- ১ কাপ,‌ গোটা মুগডাল- ১ কাপ, জল- ৬ কাপ, ঘি- ৩ টেবিল চামচ, কাঁচকলা- ১টি, কুমড়ো- ১ কাপ (ডুমো করে কাটা), বরবটি- ১ কাপ, নারকেল কোরা- ১ কাপ, দারচিনি, লবঙ্গ এবং ছোট এলাচ- ১ টেবিল চামচ, তেজপাতা- ২টি, শুকনো লঙ্কা- ২টি, গোলমরিচ- ১ টেবিল চামচ, গোটা জিরে- ১ চা চামচ, আদা- ১ চা চামচ, কাঁচা লঙ্কা- ২-৩টি, সন্ধব লবণ- স্বাদ অনুযায়ী, হলুদ গুঁড়ো- আধ চা চামচ, গুড়- ১ কাপ, কাজুবাদাম- ৩ টেবিল চামচ।

প্রণালী
প্রথমে চাল এবং ডাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন। সব সবজি ধুয়ে ডুমো করে কেটে রাখুন। এ বার কড়াইতে ঘি গরম করুন। এর মধ্যে কাজু এবং কিশমিশ ভেজে তুলে রাখুন। ওই ঘিয়ের মধ্যেই ফোড়ন হিসেবে দিয়ে দিন গোলমরিচ, শুকনো লঙ্কা, জিরে গুঁড়ো এবং গোটা গরম মশলা। এর মধ্যে ভিজিয়ে রাখা চাল এবং ডাল দিয়ে দিন। বেশ খানিকক্ষণ নাড়াচাড়া করে কেটে রাখা সবজিগুলি দিয়ে দিন। আরও একটু নাড়াচাড়া করে নুন, হলুদ দিয়ে দিন। এবার পরিমাণমতো জল দিয়ে সেদ্ধ করতে দিন। মাঝেমধ্যে নাড়াচাড়া করতে থাকুন। সব সবজি সেদ্ধ হয়ে এলে নারকেল কোরা দিয়ে নেড়ে নিয়ে উপর থেকে ঘি ছড়িয়ে নামান। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিত্যভোগের অন্যতম সেরা পদ এই কর্মাবাইয়ের খিচুড়ি।

POST A COMMENT
Advertisement