অল্পের জন্য ট্রেনটা মিস করলেন। পরে শুনলেই সেই ট্রেনেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। অথবা বাড়ির ছাদ ধসে পড়ল। অথচ আপনি বেঁচে গেলেন। ভয়ানক প্রাণঘাতি রোগ থেকেও মিরাকল ঘটিয়ে ফিরে এলেন। বিমান ধ্বংস হয়ে সকলের মৃত্যু হল। কিন্তু একজন অক্ষত রইলেন। জীবনে চলার পথে কখনও না কখনও মানুষ এমন ভয়ানক অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন। অল্পের জন্য, মৃত্যুকে প্রায় ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন কেউ কেউ। কিন্তু এই Near Death Experience এর অর্থ কী? আধ্যাত্মিক দিক থেকে কি এর কোনও তাৎপর্য আছে?
অনেকে মনে করেন ঈশ্বরের আশীর্বাদের ফলেই এভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে অনেকে ফিরে আসেন। কিন্তু সেখানেই প্রশ্ন উঠছে, তবে কি যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা কী ঈশ্বরের আশীর্বাদধন্য নন?
সম্প্রতি বৃন্দাবনের প্রেমানন্দ মহারাজকে এই প্রশ্নই করেছিলেন তাঁর এক ভক্ত। তিনি বলেন, এর সঙ্গে ঈশ্বরের করুণা বা কোনও লক্ষণের কোনও ব্যাপার নেই। বরং পুরোটাই আমাদের ভাগ্য।
ঈশ্বরের প্রেমে কোনও পক্ষপাত নেই
প্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, যদি আমরা ধরেই নিই যে, কেবলমাত্র ঈশ্বরের বিশেষ কৃপাতেই কেউ বেঁচে আছেন, তাহলে এর অর্থও এই হবে যে, যিনি দুর্ঘটনায় যারা মারা গিয়েছেন তিনি ঈশ্বরের আশীর্বাদপ্রাপ্ত নন। আর সেটা হলে তো ঈশ্বরের ভালবাসা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে ঈশ্বরের প্রেম সকলের জন্যই সমান এবং নিরপেক্ষ।
জীবন ও মৃত্যু ভাগ্য এবং বয়সের ব্যাপার
প্রেমানন্দ মহারাজের মতে, যে ব্যক্তি কোনও বড় দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান, তিনি বাকি জীবনটা বাঁচার সুযোগ পান। তবে, যাঁদের মৃত্যু হয়, তার অর্থ হল, তাঁদের আয়ু শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে এটিকে কখনই ঈশ্বরের কারও প্রতি বেশি বা কম আশীর্বাদ আছে, এমনভাবে ভাবা উচিত নয়।
ঈশ্বরের নাম জপ করাই সবচেয়ে বড় শক্তি
প্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করার পরিবর্তে, আমাদের ঈশ্বরের নাম জপের উপর মনোনিবেশ করা উচিত। কারণ জীবন বা মৃত্যুর পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, একমাত্র ঈশ্বরই প্রকৃত সমর্থন এবং শক্তি প্রদান করেন।