'স্যর আমার দাদু মারা গিয়েছেন, কাল একটা ছুটি লাগবে।' 'স্যর, এইমাত্র খবর এল একমাত্র পিসিমা মারা গেলেন, ছুটি নেব।' প্রায়শই এইরকম মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে অফিস কামাই করে বসেন কর্মীরা। তাদের সাফাই, বস প্রাপ্য ছুটি দেয় না অগত্যা ছলচাতুরির আশ্রয় নিতেই হয়। তবে এ কাজ করা কি সঠিক? নিজের বিবেকের কাছে কি ঠিক থাকা যায়? এই নিয়েই এবার ব্যাখ্যা দিলেন জনপ্রিয় প্রেমানন্দ মহারাজ।
বৃন্দাবনের প্রেমানন্দ মহারাজের কাছে বেশিরভাগ সময়েই নিজেদের নিত্যনতুন সমস্যার সমাধান খুঁজতে হাজির হন ভক্তরা। সম্প্রতি এক ব্যক্তি তাঁর অফিসের একটি সমস্যা নিয়ে মহারাজের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তির প্রশ্ন ছিল, 'আমি একটি প্রাইভেট সংস্থায় কর্মরত। ছুটি পাওয়া যায় না। তাই আজ পিষেমশাই মারা গিয়েছেন, কাল দিদা মারা গিয়েছেন বলে ছুটি নিয়ে নিই। এমনটা করা কি আমার ভুল হচ্ছে?'
প্রেমানন্দ মহারাজ তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, 'সর্বদা কি মিথ্যা বলেই ছুটি পাওয়া যায়? সত্যি বললে কি ছুটি পাওয়া যায় না?' জবাবে বেসরকারি সংস্থার ওই কর্মী বলেন, 'সত্যি বললে ছুটি পাওয়া যায় না। মিথ্যে বললে সঙ্গে সঙ্গে ছুটি দিয়ে দেয় বস। আজও আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছি মিথ্যে বলেই।'
প্রেমানন্দ মহারাজ এরপর বলেন, 'এটা কলিযুগের প্রভাব। মিথ্যে দিয়েই লেনদেন হয়। উঠতে বসতে মানুষ মিথ্যে বলে। কলিযুগেরই একটি প্রভাব হল মিথ্যে কথা বলা। কিন্তু অসত্য কথা বলা পাপ। মিথ্যে বলা উচিত নয়। সত্যের থেকে বড় কিছু হয় না। যার হৃদয় সৎ তার সঙ্গেও ভালই হয়।' তাঁর সংযোজন, 'যত সমস্যার সঙ্গেই লড়তে হোক না কেন, আমরা যেন সৎ পথে থাকার চেষ্টা জারি রাখি। মিথ্যে এড়িয়ে চলতে পারি। ভজন, ভগবানের ধামে আসার জন্য মিথ্যে বলাটা মিথ্যে হয় না।'
প্রেমানন্দ মহারাজের কথায়, অনেক সময়েই সাংসারিক নানা কাজের জন্য মিথ্যে বলে আমরা পার পেয়ে যাব এমনটা ভেবে থাকলেও আদতে তা হয় না। মিথ্যে আমাদের নাগপাশের মতো জড়িয়ে ফেলে।