প্রেমানন্দ মহারাজ জ্যোতিষশাস্ত্রে একজন ব্যক্তির স্বভাব, ভবিষ্যৎ, কর্মজীবন, বিবাহ এবং জীবনের অন্যান্য অনেক দিক বোঝার জন্য জন্মছক বা কোষ্ঠী বিচার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। যা একজন ব্যক্তির জন্ম তারিখ, সময় এবং জন্মস্থানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, গ্রহগুলির অবস্থান এবং গতি জীবনের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। এই কারণেই অনেকে বিবাহ, কর্মজীবন, স্বাস্থ্য বা অন্যান্য বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একটি জন্মছক প্রস্তুত করা অপরিহার্য বলে মনে করেন। কিন্তু প্রায়শই প্রশ্ন ওঠে, কোষ্ঠী বিচার করা কি সত্যিই প্রয়োজনীয়? প্রেমানন্দ মহারাজ তাঁর বক্তৃতায় এই বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন।
কোষ্ঠী বিচার করা আবশ্যক
প্রেমানন্দ মহারাজ বলেন, 'ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতিতে বিবাহের ক্ষেত্রে কোষ্ঠী বিচার করা কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। কারণ এটি গুণাবলীর সঙ্গে মিল রাখতে সাহায্য করে।' তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, 'আজকের দিনে যখন প্রেম বিবাহ এবং লিভ ইন সম্পর্ক সাধারণ, মানুষ কোষ্ঠী মেলানোকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয় না। তা সত্ত্বেও জন্মছক তৈরি করা আবশ্যক কারণ এটি শাস্ত্রীয় ব্যবস্থার অংশ।'
কোষ্ঠী মিলিয়েও কেন ঝগড়া?
প্রবচন দেওয়ার সময়ে এক ব্যক্তি প্রেমানন্দ মহারাজকে প্রশ্ন করেছিলেন, 'কোষ্ঠী মিলে গেলেও দম্পতিদের মধ্যে ঝগড়া কেন হয়?' এ প্রশ্নের জবাবে প্রেমানন্দ মহারাজের জবাব ছিল,'কোষ্ঠী মিলে গেলেই শান্তি আসবে এমনটা নয়। শান্তি তখনই আসে যখন বিচারধারা একে অপরের সঙ্গে মিলে যায়। ঝগড়া হয় না যখন জীবনসঙ্গীরা ধৈর্য, সমঝোতা এবং একে অপরকে সম্মান করে। পত্নী কখনও কটূ কথা বললে, স্বামীকে শান্ত থাকতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। নয়তো তর্কের মাধ্যমে কখনও সমাধানে পৌঁছতে পারবে না তারা।'
ঝগড়া করে সমাধান পাওয়া যায় না
প্রেমানন্দ মহারাজ এ-ও জানান, দাম্পত্য জীবন সফল কোষ্ঠী বিচারের উপর নির্ভর করে না। বরং বিচার বিবেচনায় মিল এবং একে অপরের ভুল-ত্রুটি শুধরে দেওয়ার ধৈর্যের উপর নির্ভর করে। জীবনসঙ্গীদের একে অপরের ভুল খুঁজে বের করার বদলে একে অপরকে সহযোগিতা করা উচিত। বুদ্ধি দিয়ে বিবেচনাকরা উচিত। একে অপরকে বোঝা উচিত। কোষ্ঠী মার্গ দর্শন করাতে পারে কিন্তু সম্পর্ক মজবুত হয় নিজেদের মধ্যে ব্যবহার এবং সম্মান কতটা রয়েছে, তার উপর নির্ভর করে।'