'রথযাত্রা লোকারণ্য, মহা ধুমধাম'-এই কথাটি বোধহয় পুরীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার রথ টানা ঘিরে প্রতিবছরই পুরীতে ভিড় জমান লাখো লাখো মানুষ। এবছরও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না। পুরীর জগন্নাথ মন্দির এক বিস্ময় বটে। প্রাচীন এই মন্দিরের পরতে পরতে রয়েছে নানা রহস্য। যার কিনারা এই প্রযুক্তি আর বিজ্ঞানের যুগেও হয়নি। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের এমনই সব অলৌকিক কাহিনি, যা শুনলে গায়ে কাঁটা দেয়।
প্রচলিত বিশ্বাস, জগন্নাথদেব না চাইলে নাকি, পুরীতে গিয়ে জগন্নাথ মন্দিরে কেউ যেতে পারেন না। যুগ যুগ ধরে এই বিশ্বাসই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ভক্তকূলে। বছরের প্রতিটি দিনই পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ভক্তদের ঢল লেগেই থাকে। জগন্নাথ মন্দির ঘিরে জনমানসে কৌতূহলেরও অন্ত নেই।
রথযাত্রায় জেনে নেওয়া যাক, পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের এই রহস্যগুলি...
* পুরীর সুবিশাল জগন্নাথ মন্দিরের কখনও কোনও ছায়া পড়ে না মাটিতে। সূর্য আকাশে যে অবস্থানেই থাকুক না কেন, কখনওই মন্দিরে ছায়া পড়ে না। কিন্তু কেন? এই উত্তর এখনও জানা যায়নি।
* জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তিগুলি কাঠের তৈরি। প্রতি ৮, ১২ ও ১৯ বছর পর পর ওই মূর্তিগুলি বদলে ফেলা হয়। যে রীতিকে বলা হয় নব কলেবর। কোনও পূর্ণবয়স্ক নিম গাছের মধ্যে শুভ লক্ষণ দেখে বিগ্রহের মূর্তি তৈরির জন্য চিহ্নিত করা হয়। তারপরে চূড়ান্ত গোপনীয়তায় ২১ দিনের মধ্যে মূর্তি নির্মাণ করা হয়।
* জগন্নাথ মন্দিরের চূড়ায় যে ধ্বজা ওড়ে, তা সব সময় হাওয়ার উল্টোদিকে ওড়ে। মন্দিরের এক সেবায়েত মন্দিরের চূড়ায় উঠে ওই ধ্বজা পরিবর্তন করেন রোজ। বলা হয়, এক দিনের জন্যও এই প্রথা না করলে ১৮ বছরের জন্য মন্দির বন্ধ রাখতে হবে।
* জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদ তৈরির ঘটনাও বেশ বিস্ময়কর। ৭টি মাটির পাত্র একটির উপর আর একটি চাপিয়ে রান্না করা হয়।
* পুরীর মন্দিরে ঢুকলে সমুদ্রের আওয়াজ শোনা যায় না। অথচ মন্দিরের কাছেই সমুদ্র। কথিত রয়েছে, সমুদ্রের গর্জনে সুভদ্রার বিশ্রাম নষ্ট হত, তাই তাঁর অনুরোধেই মন্দিরের ভিতর সমুদ্রের গর্জন প্রবেশ করবে না বলে জানান জগন্নাথদেব।
* পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের উপর দিয়ে কিছু ওড়ে না। এমনকি, পাখিও ওড়ে না। এর কোনও ব্যাখ্যা আজও পাওয়া যায়নি।
*পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের কাছে দিনে ও রাতে সমুদ্রের হাওয়া উল্টোদিকে বয়।