হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, ৪ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে শ্রাবণ মাস। যা চলবে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, এই বছরের শ্রাবণ মাসটি অত্যন্ত বিশেষ। এবার শ্রাবণ মাস ৫৯ দিনের। চলবে ২ মাস। এর পাশাপাশি শ্রাবণ মাসে শিবরাত্রির পাশাপাশি আটটি শ্রাবণ সোমবারও রয়েছে। জ্যোতিষীদের মতে, প্রায় ১৯ বছর পরে এই যোগ তৈরি হয়েছে। জানেন কি শিবলিঙ্গে জল অর্পণের পর জলকে আঙুল দিয়ে স্পর্শ করে শরীরের কিছু অংশে লাগালে জন্মকোষ্ঠীতে শনি, রাহু-কেতু ও অন্যান্য গ্রহের অবস্থান ঠিক হয়ে যায়। সেই সঙ্গে সুখ-সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্য লাভ হয়।
শ্রাবণ মাসে নিয়মিত শিবলিঙ্গে জল অর্পণ করলে সৌভাগ্য প্রাপ্তি হয়। বেলপাতা, ধুতুরো, ভাং, আকন্দ ফুল, দুধ, দই ইত্যাদি নিবেদন করলে মহাদেব দ্রুত প্রসন্ন হন। সেই ব্যক্তি সুখ ও সমৃদ্ধি লাভ করেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক,শিবপুরাণ অনুসারে শিবলিঙ্গ থেকে প্রবাহিত জল শরীরের কোন অংশে প্রয়োগ করা শুভ বলে মনে করা হয়।
শিবকে দেওয়া জল স্পর্শ করান শরীরের তিনটি অংশে- শিবপুরাণ অনুসারে, শিবলিঙ্গে জল নিবেদনের পর সেই জল নিজের আঙুলে নিয়ে চোখ, গলা এবং কপালে লাগান।
শিবলিঙ্গের জল অঙ্গে লাগালে কী উপকার? শিব পুরাণ অনুসারে, শরীরের তিনটি অঙ্গ অর্থাৎ চোখ, মাথা এবং গলা অপরিহার্য। এই তিনটি স্থানে শিবলিঙ্গে নিবেদিত জল দিলে নয়টি গ্রহের দোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি কোষ্ঠীতে শনি, মঙ্গল, রাহু, কেতু, বুধ,শুক্র, সূর্য ও বৃহস্পতির অবস্থান শক্তিশালী হয়। যে কারণে কোনও ব্যক্তি সর্বক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করেন। সমাজে সম্মান পান। সেই সঙ্গে সম্পদ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে, গ্রহদের রাজা সূর্যের স্থান কপালে। এর পাশাপাশি চোখ ও রক্তে মঙ্গলের প্রভাব রয়েছে। জিহ্বা, দাঁত ও মুখের অগ্রভাগে বুধের প্রভাব। মাথা ও মুখের অগ্রভাগ থাকে রাহুর নিয়ন্ত্রণে। গলা থেকে হার্ট পর্যন্ত রয়েছে কেতুর প্রভাব।
কীভাবে শিবলিঙ্গে জল নিবেদন করবেন? শিবলিঙ্গে জল নিবেদনের সময় মনে রাখবেন আপনার মুখ যেন উত্তর দিকে থাকে। একটি তামা, ব্রোঞ্জ বা রুপোর পাত্রে জল নিয়ে ডানদিকে জল অর্পণ করুন। যা গণেশের স্থান বলে বিবেচিত হয়। ডান দিকে জল নিবেদনের পর বাম দিকে জল নিবেদন করুন। এটি কার্তিকের স্থান।
জলাভিষেক কেন শিবের প্রিয়?
দেব-অসুরের সমুদ্র মন্থনের সময় যে বিষ উঠেছিল তা নিয়েছিলেন শিব। এর প্রভাবে শরীরে বিরাট তাপ তৈরি হয়। দেব-দেবীরা জল ঢেলে দেহের তাপ শীতল করেছিলেন।
শিবের প্রিয় জিনিস- বেলপাতা, ধুতরো, ভাং, আকন্দ ফুল, অক্ষত, শ্বেত চন্দন খুব পছন্দ করেন ভোলেনাথ।