দোল উৎসব আর হোলি মিলিয়ে বেশ উৎসবের আমেজ ছিল দেশজুড়ে। আর উৎসবের আমেজ দেদার মেতেছিলেন সুরাপ্রেমীরাও। যার প্রমাণ মিলেছে দোলের সপ্তাহে মদ বিক্রিতে।
গায়ে দোলের রং মেখে, করোনার আতঙ্কে মুখ ঢেকে তবুও হাজার হাজার সুরাপ্রেমী লাইন দিয়েছেন মদের দোকানের সামনে। গত নভেম্বর থেকেই পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী এক ধাক্কায় অনেকটাই কমেছে মদের দাম।
দোলের সপ্তাহে রেকর্ড পরিমাণ মদ বিক্রি হয়েছে এ রাজ্যে, লাভও হয়েছে তেমনই। গত বৃহস্পতিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বাংলায় মদ বিক্রি হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকার।
দোলের সপ্তাহের শেষ চারদিনের হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিন গড়ে ৫০ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে বাংলায়। এর মধ্যে আবার দোলের দিন বিকেল পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত মদের দোকান বন্ধ ছিল।
দোলের দিন বিকেল পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত মদের দোকান বন্ধ থাকায় সে ভাবে বিক্রি না হলেও বৃহস্পতিবার এ রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ মদে বিক্রি হয়েছে।
গতবারের থেকে অনেকটাই আশানুরূপ বিক্রি বলেই দাবি আবগারি দপ্তরের। দোলের সপ্তাহের শেষ চারদিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মদ বিক্রি হয়েছে বৃহস্পতিবার।
রাজ্যের আবগারি দপ্তর সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার বাংলায় মোট মদের বিক্রি ৭০ কোটি টাকার গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে। ফলে দোলের দিন বিকেল পর্যন্ত দোকান বন্ধ থাকলেও সে ক্ষতি পুষিয়ে গিয়েছে বিক্রেতাদের।
মাঝ-নভেম্বর থেকে এ রাজ্যে মূলত ভারতে তৈরি হওয়া বিলিতি মদের দাম কমিয়েছে রাজ্য আবগারি দফতর। রম, হুইস্কি, ভদকা বা বিয়ার— সবেরই দাম বেশ কিছুটা করে কমেছে। ফলে বিক্রিও বেশ কিছুটা বেড়ে গিয়েছে।
করোনাকালে অন্য অনেক ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়লেও মদ বিক্রি ফুলেফেঁপে উঠেছে রাজ্যে। গত দেড় বছরে মদ বিক্রির পরিমাণ ভেঙেছে পুরোনো সব রেকর্ড। রাজ্যে এহেন বিপুল পরিমাণ মদ বিক্রিতে লাভবান হয়েছে রাজ্য সরকারও।
২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে মদ বিক্রির পরিমাণকে অনেকটাই পিছনে ফেলেছে গত দেড় বছরের মদ বিক্রি। ২০২০-র জুন মাস থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মদ বিক্রির থেকে রাজ্যের আয় হয়েছে ২৩ হাজার কোটি টাকা।
জানা গিয়েছে, দেশি মদ বিক্রি করেই রাজ্য আবগারি দফতর সবথেকে বেশি আয় করেছে। ২০২২-এর জানুয়ারি মাসে সমীক্ষায় দেখা যায়, রাজ্যে গত দেড় মাসে যত মদ বিক্রি করা হয়েছে, তার মধ্যে ৩৫ শতাংশই দেশি মদ। দেশি মদের পর সবথেকে বেশি বিক্রি হয়েছে বিয়ার।