গত কয়েক মাসে দেশজুড়ে পেট্রোল-ডিজেলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। অক্টোবরের শেষে সাধারণ সরষের তেলের পাইকারি দাম ১২০ থেকে বাড়তে বাড়তে ১৬০ টাকা ছাড়িয়েছিল। খুচরো দোকানে এই দাম আরও কিছুটা বেশি ছিল।
এ বছরের ফলন গত বছরের তুলনায় বেশি হওয়া সত্ত্বেও সরষের দাম অক্টোবরে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। তবে গত কয়েকদিনে ভোজ্যতেলের দাম কমছে। একই সঙ্গে বিদেশি বাজার থেকে প্রাপ্ত ইঙ্গিত অনুযায়ী ভোজ্যতেলের দাম আরও কমতে পারে বলে মনে করছে বণিক মহল।
সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (SEA) জানিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই ভোজ্যতেলের দাম কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা দাম কমেছে। আগামী কয়েক মাসে ভোজ্যতেলের দাম প্রতি কেজিতে আরও ৩ থেকে ৪ টাকা কমবে।
এ বছরের সরষের ফলন সর্বকালের সর্বোচ্চ ৭৭ লাখ ৬২ হাজার হেক্টরে পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। এর ফলে আগামী মরসুমে সরিষার তেলের জোগান বাড়বে ৮ থেকে ১০ লাখ টন।
সরষের তেল ছাড়া অন্যান্য সমস্ত ধরনের ভোজ্য তেলের অধিকাংশই এখনও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশের মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তার উপর ওই সব তেলের উপর কেন্দ্রীয় আমদানি শুল্ক চাপে। সব মিলিয়ে সূর্যমুখী, সয়াবিন, রাইস ব্রান— সব ধরনের ভোজ্য তেলের দামই বেড়ে গিয়েছিল যা এবার ধাপে ধাপে কমতে চলেছে।
এর আগে সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (SEA)-এর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জুন মাস থেকে ভারতে পাম তেলের আমদানি প্রায় ২৪ শতাংশ কমেছে। ফলে কমতে চলেছে ভোজ্যতেলের দামও।
ভারত বিশ্বের বৃহত্তম ভোজ্যতেলের আমদানিকারক দেশ। ২০২০ সালের জুনে মোট ৫,৬৪,৮৩৯ টন পাম তেল ভারতে আমদানি করা হয়েছিল। যেখানে, ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত ভারতে ৭,৬৯,৬০২ টন পাম তেল আমদানি করা হয়েছে।
সলভেন্ট এক্সট্র্যাক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (SEA) জানিয়েছে, দেশীয় বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ মজুদ থাকার কারণে উদ্ভিজ্জ তেলের আমদানি বিগত কয়েক মাসে বেশ কিছুটা কমেছে। পাম তেলের পাশাপাশি সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেলের আমদানিও গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০-২২ শতাংশ কমেছে। সব মিলিয়ে শীঘ্রই আরও কমতে পারে ভোজ্যতেলের দাম।