রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে। পরবর্তী শুনানির দিন ১৫ মার্চ। মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, সেদিনই রাজ্য সরকারের দায়ের করা এসএলপি-মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হবে। তবে তার আগেই বকেয়া ডিএ-সহ একাধিক দাবিতে পথে নামছেন সরকারি কর্মী, শিক্ষক-সহ সর্বস্তরের কর্মীরা। আর রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে সেই আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
মঙ্গলবার ২৪ জানুয়ারি ডিএ-নিয়ে মামলাকারী সংগঠন সরকারি কর্মচারী পরিষদ নব মহাকরণের বিপরীতে অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। সেই অবস্থান বিক্ষোভেই যোগ দেবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সরকারি কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্যও রাখার কথা শুভেন্দু অধিকারীর। সূত্রের খবর, একাধিক বিধায়ক এই সভায় যোগ দিতে পারেন।
সরকারি কর্মচারী পরিষদের এই অবস্থান বিক্ষোভে যোগ দেবে সংগ্রামী ঐক্য মঞ্চের সদস্য সংগঠনগুলোও। পাশাপাশি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে যে সব আন্দোলনকারীরা অবস্থান-আন্দোলন করছেন, তাঁরাও যোগ দেবেন। ডিএ-র মামলাকারী আর এক সংগঠন ইউনিটি ফোরামও অবস্থান বিক্ষোভে যোগ দেবে।
আরও পড়ুন : নেতাজি-কথা : সুভাষের মহানিষ্ক্রমণের কথা জানতেন একজন মাত্র মহিলা
প্রসঙ্গত, বকেয়া ডিএ নিয়ে বিভিন্ন সভা থেকে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্য সরকার লাখ লাখ সরকারি কর্মীকে তাঁদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। কিছুদিন আগেই উলুবেড়িয়ার সভা থেকে তিনি বলেন, 'ডিএ পাবেন রাজ্যের সরকারি কর্মীরা। শুধু অর্ডার হওয়া বাকি।' ত্রিপুরার মতো ছোটো রাজ্য ডিএ দিতে পারলে রাজ্য সরকার কেন পারবে না সেই প্রশ্নও তুলেছিলেন তিনি। 'ত্রিপুরা একটা ছোট্ট রাজ্য়। সেখানকার সরকার-মুখ্যমন্ত্রী ডিএ দিতে পারেন। শুধু সরকারি কর্মীদের নয়, রাজ্য সরকারের শিক্ষক-পুরকর্মী-পেনশনারদেরও দিয়েছে। ত্রিপুরা আয়তনে আমাদের রাজ্যের একটা জেলার সমান। সেখানকার সরকার দিতে পারল অথচ আমাদের রাজ্য দিচ্ছে না। এই সরকারের লজ্জা লাগা দরকার।' বলেন তিনি।
এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর অবস্থান-বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত সরকারি কর্মীরা। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সভা থেকে কী বার্তা দেবেন সেই দিকে তাকিয়ে অনেকেই। সরকারি কর্মীদের একাংশের আশা, শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতি ডিএ আন্দোলনকে অন্য মাত্রা দেবে।
এই বিষয়ে আয়োজক সংগঠন সরকারি কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল বলেন, 'ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মীদের পাশে আছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গতবার রাজ্য বাজেটের দিনও তিনি ডিএ-র দাবিতে সরব হয়েছিলেন। তবে মঙ্গলবার তাঁর উপস্থিতি সরকারি কর্মীদের আরও উজ্জীবিত করবে। চাপ বাড়বে সরকারের উপর। এই সরকার ডিএ নিয়ে টালবাহানা করছে। সময়ের অপব্যয় করছে। তাই আইনি লড়াইয়ের পাশাপাশি কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করাটাও জরুরি বলে মনে করছি আমরা। সেজন্যই এই অবস্থান বিক্ষোভ। শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী, সরকারি কর্মী সবাই এই অবস্থানে যুক্ত হবেন।'
তবে শুধু ডিএ-ই নয়, মঙ্গলবারের এই অবস্থান বিক্ষোভ থেকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, পেনশন, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা প্রদান-সহ নানান দাবি তোলা হবে।