Dollar vs Gold: এই প্রথম আমেরিকাকে বড়সড় ধাক্কা, ডলারের শেষের শুরু? ট্যারিফের পাল্টা টের পাচ্ছেন ট্রাম্প

সোনা কেনায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির হুড়োহুড়ি আমেরিকার জন্য বড় ধাক্কা হয়ে উঠেছে। প্রায় ৩০ বছর পর এমন ঘটনা ঘটল, যখন বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভে সোনার গুরুত্ব মার্কিন ট্রেজারিকে ছাড়িয়ে গেল।

Advertisement
এই প্রথম আমেরিকাকে বড়সড় ধাক্কা, ডলারের শেষের শুরু? ট্যারিফের পাল্টা টের পাচ্ছেন ট্রাম্পসোনার মজুত বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি
হাইলাইটস
  • ১৯৯৬ সালের পর প্রথমবার
  • সোনার পরিমাণ আমেরিকার ট্রেজারির থেকে বেশি
  • বছরে ১,০০০ টন সোনা কেনা হচ্ছে

ভারত সহ একাধিক দেশের উপর ট্যারিফ চাপিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বড় ভুল করেছেন, তা এবার হাড়ে হাড়ে টের পেতে হবে আমেরিকাকে। ট্যারিফের বদলা হিসেবে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি যে পদক্ষেপ করছে, তা বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে হোয়াইট হাউসকে। তথাকথিত মার্কিন ডলারের একাধিপত্যকে। 

সোনার দাম ইতিমধ্যেই আকাশছোঁয়া। রোজই রেকর্ড হারে বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে শুরু করে ভারতের ঘরোয়া বাজার, সোনার দাম বাগে আসছে না।  বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি সোনা কেনা বাড়িয়ে দিয়েছে। চিন থেকে শুরু করে ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI), গোল্ড রিজার্ভ বাড়াচ্ছে। আর এই জায়গাতেই খেলা ঘুরছে। মার্কিন ডলারের একাধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ! গত ৩০ বছরে এই প্রথমবার বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলিতে সোনার পরিমাণ আমেরিকার ট্রেজারির থেকে বেশি।

আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে। ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতির জেরে বিশ্ব অর্থনীতি ব্যাপক ভাবে পরিবর্তন হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতির ছবিটা বদলাচ্ছে। ট্রাম্পের ট্যারিফ নীতি সেই আগুনে ঘি ঢেলেছে। সারা দুনিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি এখন সোনা কেনাকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে। টানা কেনাবেচার ফলে তাদের রিজার্ভে সোনার পরিমাণ বেড়েই চলেছে। এই প্রবল চাহিদার জেরে আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম উঠে গিয়েছে প্রতি আউন্সে ৩,৫৯২ ডলারে, যা সর্বকালীন রেকর্ড। শুধু ২০২৫ সালেই সোনার দামে ৩৬ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি হয়েছে।

১৯৯৬ সালের পর প্রথমবার

সোনা কেনায় কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলির হুড়োহুড়ি আমেরিকার জন্য বড় ধাক্কা হয়ে উঠেছে। প্রায় ৩০ বছর পর এমন ঘটনা ঘটল, যখন বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি রিজার্ভে সোনার গুরুত্ব মার্কিন ট্রেজারিকে ছাড়িয়ে গেল। বর্তমানে সোনা বিদেশি মুদ্রা রিজার্ভের ২০ শতাংশ জায়গা দখল করেছে, যেখানে ইউরোর শেয়ার ১৬ শতাংশ। শুধু তাই নয়, ১৯৯৬ সালের পর এবারই প্রথমবার মার্কিন ট্রেজারিকেও পেছনে ফেলল সোনা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

বছরে ১,০০০ টন সোনা কেনা হচ্ছে

২০২২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত টানা প্রতি বছর সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কগুলি ১,০০০ টনেরও বেশি সোনা কিনছে, যা ২০২০ সালের আগে গড় কেনার দ্বিগুণ। আগে এই পরিমাণ ছিল গড়ে ১০০ টন। ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, এখন সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কগুলির হাতে মোট ৩৬,০০০ টনেরও বেশি সোনা আছে। চিন তার ডলার নির্ভরতা কমাতে এবং বৈচিত্র্য আনার জন্য সোনা কিনছে, যেখানে তাদের মোট রিজার্ভে সোনার ভাগ এখন ৭ শতাংশ। ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রেও সোনার ভাগ ২০২১ এর ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ১০ শতাংশেরও বেশি হয়েছে।

Advertisement

কেন এত সোনা কেনা হচ্ছে?

এর পেছনে একাধিক কারণ আছে। ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ থেকে শুরু করে রাশিয়া-ইউক্রেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ভয়, সবই প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি, আমেরিকার ঋণ এখন ৩৭ ট্রিলিয়ন ডলারে (অগাস্ট ২০২৫ পর্যন্ত), আর ২০২৫ সালেই ডলারের দাম ১০ শতাংশের বেশি পড়ে গিয়েছে। বৈশ্বিক রিজার্ভের ৪৬ শতাংশ জুড়ে থাকা ডলারের দুর্বলতা বিশ্বজুড়ে আস্থার সঙ্কট তৈরি করছে। ফলে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকছে সবাই।

ইউরোপ্যাকের চিফ ইকনোমিস্ট পিটার শিফ জানিয়েছেন, মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ দুর্বল হয়ে পড়ায় সোনা ও বন্ডের চাহিদা আরও বেড়েছে। আমেরিকায় চাকরির সংখ্যা কমছে, সুদের হার কাটছাঁটের সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে। এসব মিলিয়ে সোনার দামের উত্থান থামার কোনও লক্ষণ নেই। অন্যদিকে বাণিজ্য যুদ্ধ আর বাড়তে থাকা ঋণ পরিস্থিতিকে আরও ঘোরাল করছে।

ভারতে ২০২৬ নাগাদ ১.২৫ লক্ষ টাকা হতে পারে ১০ গ্রামের সোনা

গোল্ডম্যান স্যাক্সের অনুমান, যদি মার্কিন ট্রেজারি মার্কেটের (৩০ ট্রিলিয়ন ডলার) মাত্র ১ শতাংশও সোনায় বিনিয়োগ হয়ে যায়, তবে দাম ৫,০০০ ডলার প্রতি আউন্স পর্যন্ত উঠতে পারে, যা বর্তমান দামের থেকে আরও ৪৩ শতাংশ বেশি। ভারতের ICICI ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬-এর মাঝামাঝি সময়ে দেশে সোনার দাম পৌঁছে যেতে পারে ১.২৫ লক্ষ টাকা প্রতি ১০ গ্রামে। 

POST A COMMENT
Advertisement