চিনের পরিবর্তে এশিয়ায় উন্নয়নের পরবর্তী গ্রোথ ইঞ্জিন হয়ে উঠবে ভারত। মরগান স্ট্যানলির এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী এশিয়ার সার্বিক বৃদ্ধিতে এই মহাদেশের ৪টি বড় অর্থনীতি সবচেয়ে বেশি অবদান রাখবে। মরগান স্ট্যানলি রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স এবং মালয়েশিয়ার মতো উদীয়মান অর্থনীতিগুলি এশিয়ায় বৃদ্ধির পরবর্তী ঢেউয়ের নেতৃত্ব দেবে। এই চারটি দেশ ২০১৭ সালের মধ্যে এশিয়ার মোট নমিনাল জিডিপিতে ৫৩ শতাংশ অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ২০১৯ সালের আগে ছিল মাত্র ৩৩ শতাংশ।
এই পরিবর্তনের প্রধান কারণ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, নীতিগত অগ্রাধিকার এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা। মরগান স্ট্যানলির রিপোর্ট অনুসারে, ১৯৮০ সালে এশিয়ার নমিনাল জিডিপি ছিল প্রায় ২.১ ট্রিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০২৪ সাল নাগাদ এটি প্রায় ৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং ২০২৭ সাল নাগাদ এই সংখ্যা ৩৯ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। এই তথ্য অনুযায়ী, এশিয়া সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনৈতিক অঞ্চল হতে যাচ্ছে। যাইহোক, এই বৃদ্ধি ঐতিহাসিক রেকর্ডের তুলনায় সামান্য ধীর হতে পারে। তরুণ জনসংখ্যার ভিত্তিতে এই উন্নয়নের নেতৃত্বে ভারতের নাম সবার আগে আসে।
এ ছাড়া দেশের নীতিও উন্নয়ন ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করছে। ভারত গত কয়েক বছরে তার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে অসাধারণ উন্নতি করেছে এবং সেই কারণেই এটি দেশের এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠছে। এছাড়াও, ভারত সরকার 'মেক ইন ইন্ডিয়া', 'স্টার্টআপ ইন্ডিয়া'-এর মতো অনেকগুলি স্কিম শুরু করেছে, যা দেশকে বিশ্ব স্তরে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে চিনের অর্থনীতি, যা পূর্বে এশিয়ায় উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি ছিল, তা শ্লথ হয়ে যাচ্ছে। এর জনসংখ্যা দ্রুত বুড়ো পাচ্ছে, যা এর কর্মশক্তির উপর চাপ বাড়াচ্ছে এবং এটি এর অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
যেখানে ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং অন্যান্য তরুণ অর্থনীতি নতুন শক্তি নিয়ে আবির্ভূত হচ্ছে। ভারত এবং অন্যান্য উদীয়মান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির তরুণ জনগোষ্ঠী তাদের একটি শক্তিশালী শ্রমশক্তি সরবরাহ করে। এসব দেশের সরকার এখন এমনভাবে নীতি তৈরি করছে যাতে তারা শুধু দেশের নয়, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদেরও আকৃষ্ট করতে পারে। অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুব জনসংখ্যার অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি উদ্ভাবন, উদ্যোক্তা এবং উৎপাদনশীলতাকে উন্নত করে।