
গত সোমবার লোকসভাতে “Health Security se National Security Cess Bill, 2025” পাস হয়েছে। নতুন এই আইন অনুযায়ী, পান মসলা ও সিগারেটের মতো স্বাস্থ্য-ক্ষতিকর পণ্যে বাড়তি সেস ধার্য করা হবে। সংস্থার দাবি, এই অতিরিক্ত রাজস্বের ব্যবহার হবে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও জাতীয় নিরাপত্তার খাতে।
বিল পাসের সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেন, “কারগিল যুদ্ধের সময় বাজেটের অভাবে সেনাবাহিনী সঠিক অস্ত্র ও গুলি পায়নি। আমরা কোনোভাবেই পুনরায় সেই ভুল করতে চাই না।” নতুন সেস থেকে আসা অর্থ হবে , সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন, স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন।
তাঁর মন্তব্য, বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ শুধু ভূ-রাজনৈতিকভাবে নয়, প্রযুক্তিমূলকভাবে। স্পেস, সাইবার, প্রিসিশন হঠকারী অস্ত্রের যুগে দেশকে প্রস্তুত রাখতে হলে অর্থায়ন বাড়ানো জরুরি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, সেস ধরা হবে শুধু “ডেমেরিট” পণ্যে অর্থাৎ সিগারেট ও পান-মসলার মতো স্বাস্থ্য-ক্ষতিকর পণ্যে।
বিলের প্রস্তাবনায় রয়েছে, সেস আরোপ থেকে রাজস্ব সংগ্রহ হবে সংযোজিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। যেকোনো দ্রব্যকে বাদ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ সাধারণ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে ট্যাক্স বাড়বে না। সংসদ সদস্যদের বক্তব্য ছিল, যাতে সাধারণ মানুষ অযথা বোঝা না অনুভব করে।
তবে বিল পাসের সময়ই বিরোধী দলের সদস্যরা আপত্তি তুলেছেন। তাঁদের মতে, পান-মসলা ও সিগারেটে এমন সেস লাগালে ওই পণ্যের কালোবাজার বাড়বে, নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে। এক সদস্য প্রশ্ন করেছিলেন, “গুটখা এবং পান-মসলা তো এখন জনপ্রিয়। চিকিৎসা এবং প্রচার বন্ধ করার মাধ্যমে কি সমাজ বদলায়? অন্যদের মত, সেস বাড়িয়ে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বলবৎ হবে না, বরং সামাজিক দুর্বল শ্রেণির মানুষ ক্ষিপ্ত হবে। সেস যদি বাস্তবিকভাবে সফল হয়, তবে সেটা শুধু ট্যাক্স বৃদ্ধি নয়, একটা যথাযথ জননিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নীতি হিসেবে কাজ করতে হবে।
বিল পাসের পর বাজারে ইতিমধ্যেই প্রভাব পড়েছে। অনেক পান-গুটখা প্রস্তুতকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। অর্থাৎ আগামী মাস থেকেই এসব পণ্য সাধারণ ক্রেতার জন্য আরও ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, সিগারেট ও পানের মতো পণ্যে সেস বাড়ানো হলে ধূমপান ও গুটখা ব্যবহার কমতে পারে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে জনস্বাস্থ্যের ভালো ফল পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, সেস থেকে পাওয়া অর্থ যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয়, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও সামরিক সক্ষমতা, তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সংক্ষেপে বলা যায়, নতুন সেস বিল স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও নিরাপত্তার এক মিশ্র নীতি। সরকারের পরিকল্পনা সফল হলে, হতে পারে ধূমপান-গুটখা কমে জনগণের স্বাস্থ্য উন্নত হবে, এবং উন্নত বাজেট সামরিক ও জনস্বাস্থ্য খাতে কাজে লাগবে।