টাকাপয়সার অভাবে অনেকে লেখাপড়া ছেড়ে দেয়। আবার একই কারণে অনেকে গল্পের বই কিনতে পারে না। তা পড়ার ইচ্ছা যতই থাক। এই সমস্য়া দূর করতে উদ্যোগী হল বীরভূমের যমজ দুই ভাই। সবার কাছ থেকে চেয়ে তাঁরা তৈরি করেছেন বুক ব্যাঙ্ক।
এই কাজ সেরে ফেলেছেন সুজয় এবং বিজয় ঘোষাল। তাঁরা যমজ। আর দু'জনেই পড়ুয়া। তাঁদের বাড়ি বীরভূমের ময়ূরেশ্বরে। লেখাপড়ার সূত্রে থাকেন শান্তিনিকেতনে। আর সেখানে গড়ে তুলেছেন বুক ব্যাঙ্ক।
এ কাজে এগিয়ে এসেছেন তাঁদের শিক্ষক, বন্ধুবান্ধবরা। বিভিন্ন রকমের বই সেখানে রয়েছে। নিখরচায় তা পড়া যেতে পারে। ফেসবুকে বই দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন তাঁরা। সাড়াও পেয়েছেন বেশ। তাঁরা যেমন বই পেয়েছেন, তেমন অনেকে আর্থিক ভাবেও সাহায্য করেছেন।
সুজয় বলেন, "অর্থের অভাবে অনেক ছেলেমেয়ে বই পড়া থেকে বিরত থাকে। লেখাপড়া করতে পারে না। আর এখন অনেকে বই পড়া থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। তাই তাদের জন্য এ কাজ করেছি।"
তিনি আরও বলেন, "এই বুক ব্যাঙ্কে স্কুলের বই যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে গল্পের বইও। অনেক বই সেখানে সংগ্রহ করতে পেরেছি। বই পড়ার অভ্যাস যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে এই ব্যাঙ্ক কাজ দেবে।"
বীরভূমের বল্লভপুরে 'আমার কুটির' নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সে কাজে সাহায্য করেছে। তারা নিখরচায় ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখায়। ওই দুই ভাই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্ম নিয়ে লেখাপড়া করছেন।
বুক ব্যাঙ্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে ফেসবুকে আবেদন করেছিলেন। অনেক শিক্ষক এগিয়ে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও সাহায্য করেন। অনেকে টাকাও দিয়েছেন।
পঠনপাঠনের এলাকার পর এবার নিজের এলাকায়ও একই কাজ করতে চলেছেন তাঁরা। ১৫ অগস্ট ময়ূরেশ্বরের রামনগরে লাইব্রেরি করবেন বলে ঠিক করেছেন। সেখানে বীরভূমের ইতিহাস সংক্রান্ত বই রাখার চেষ্টা করছেন।
বুক ব্যাঙ্কের ভাণ্ডার
সেখানে পাওয়া যায় গল্পের বই, পাঠ্য বই। সেখান থেকে বই নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এক সপ্তাহের জন্য। আবার বসে পড়াও যেতে পারে। কে, কে, কী বই নিয়ে গেল, তা খাতায় লিখে রাখা হত। বইয়ের নম্বর দেওয়া রয়েছে।
দিব্যি শুরু হয়ে গিয়েছিল সেই কাজ। তবে এখন করোনার জন্য সব বন্ধ। পুরোটাই নিখরচায়। সদস্য হওয়া বলে কিছু নেই। দুশোর ওপর পাঠ্য এবং গল্প। বাংলা। ছোট থেকে বড়- যে কেউ বই নিতে পারবেন। ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ হচ্ছে তাঁদের ভাণ্ডার।