Open Book Exam Benefits: কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (CBSE) ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণিতে চালু করতে চলেছে ওপেন বুক পরীক্ষা। অর্থাৎ পরীক্ষার হলে বই বা নিজস্ব নোট সঙ্গে নিয়ে বসতে পারবে পড়ুয়ারা। বোর্ডের দাবি, এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের মুখস্থ নির্ভরতা কমিয়ে বোধগম্যতা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা বাড়াবে।
এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জুন মাসে CBSE-এর গভর্নিং বডির সভায়, যা শিক্ষকদের বড় অংশের সমর্থন পায়। উদ্যোগটি এসেছে জাতীয় শিক্ষা নীতি (NEP) ২০২০ এবং জাতীয় পাঠ্যক্রম কাঠামো (NCFSE) ২০২৩–এর নির্দেশনা অনুযায়ী।
ওপেন বুক পরীক্ষা কীভাবে হবে
নবম শ্রেণিতে ভাষা, গণিত, বিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞানে প্রতি সেশনে তিনটি করে কলম-কাগজ পরীক্ষা হবে। এই পরীক্ষায় বই বা নোট থেকে ধারণা নিয়ে উত্তর লিখতে হবে, তবে হুবহু কপি করলে নম্বর মিলবে না—প্রশ্ন এমনভাবে তৈরি হবে যাতে বিশ্লেষণ, তুলনা ও যুক্তি প্রয়োগ জরুরি হয়।
পরীক্ষাগুলি স্কুলেই হবে এবং অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের অংশ হিসেবে প্রাপ্ত নম্বর যোগ হবে বাকি লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে। CBSE জানাচ্ছে, বই হাতে থাকলেও নকলের সুযোগ কম, কারণ সময়ের মধ্যে উত্তর সাজাতে ও লিখতে যথেষ্ট পরিকল্পনা ও বোঝাপড়া প্রয়োজন।
পরীক্ষা পরিচালনার ধরন
ওপেন বুক পরীক্ষা সাধারণত দুইভাবে হয়—
অফলাইন মোডে: স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাকক্ষে বসে, বই ও অনুমোদিত রেফারেন্স ব্যবহার করে উত্তর লেখা।
অনলাইন মোডে: নির্দিষ্ট পোর্টালে লগ ইন করে পরীক্ষা দেওয়া, যেখানে নির্ধারিত সময় শেষে সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ আউট করে দেয়।
স্কুল স্তরে CBSE অফলাইন পদ্ধতিতেই পরীক্ষা নেবে।
সুবিধা ও লক্ষ্য
NCFSE বলছে, ওপেন বুক পরীক্ষায় মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ, প্রাসঙ্গিকতা বোঝা ও তা থেকে সিদ্ধান্ত টানার ক্ষমতা যাচাই করা। এর মাধ্যমে—
মুখস্থ করার চাপ কমবে
সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা বাড়বে
তথ্য খোঁজার ও বিশ্লেষণের অভ্যাস তৈরি হবে
মানসিক চাপ হ্রাস পাবে
পাইলট পরীক্ষার ফলাফল
ওপেন বুক পদ্ধতির কার্যকারিতা যাচাই করতে CBSE আগে পাইলট পরীক্ষা নেয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর ১২% থেকে ৪৭%-এর মধ্যে ছিল, যা প্রমাণ করে যে অনেকেরই বই থাকা সত্ত্বেও সঠিকভাবে উত্তর দেওয়ার দক্ষতা কম। শিক্ষকরা মনে করেন, নিয়মিত অনুশীলন হলে এই দক্ষতা বাড়বে।
আগের অভিজ্ঞতা
CBSE-এর জন্য ওপেন বুক নতুন নয়। ২০১৪ সালে চালু হয়েছিল ওপেন টেক্সট বেসড অ্যাসেসমেন্ট (OTBA), যেখানে নির্দিষ্ট সময় আগে রেফারেন্স ম্যাটেরিয়াল দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হত। তবে ২০১৭-১৮ সালে তা বাতিল হয়, কারণ এটি প্রত্যাশিতভাবে সমালোচনামূলক ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারেনি।