HS Exam 2023 Biology Last Minute Suggestion: উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের অধিকাংশ বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের একটা ভীতি কাজ করে। কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখে ছাঁকা অনুশীলন আর তার কৌশলগত সঠিক প্রয়োগে জীববিদ্যায় ৯০% নম্বর তোলাই যায়। এমনটাই মত মালদা রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের শিক্ষক মাধবচন্দ্র বর্মণ।
উচ্চমাধ্যমিক বিজ্ঞান বিভাগের অধিকাংশ বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের কাছে ভীষণ কৌতুহল যে, এই বুঝি কোনও বিষয়ে কঠিন প্রশ্ন হবে! এই পরীক্ষার ওপর ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে। আমি জীববিদ্যার প্রশ্ন নিয়ে কিছু আলোচনা করছি, আশা করি তোমাদের সকলের পরীক্ষা ভাল হবে এবং ৯০% নম্বর পেতে খুব অসুবিধা হবে না।
জীববিদ্যায় ৭০ নম্বর লিখিত পরীক্ষা, বাকি ৩০ নম্বর থাকবে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা। ৭০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ১ নম্বরের প্রশ্ন-উত্তর করতে হবে ১৮টি, যার মধ্যে ১৪টি MCQ ও ৪টি অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন। MCQ তে কোনও বিকল্প প্রশ্ন থাকছে না এবং অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের কোনও কোনওটিতে বিকল্প প্রশ্ন থাকতে পারে। শ্রেণি শিক্ষকের পড়ানো মনোযোগ সহকারে শোনা, টেক্সট বই পড়া ও বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান থাকলেই ১ নম্বরের প্রশ্নের সঠিক উত্তর করা কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। বাকি থাকল দুই নম্বরের পাঁচটি প্রশ্ন, তিন নম্বরের নটি প্রশ্ন ও ৫ নম্বরের তিনটি প্রশ্ন। কোনও কোনও প্রশ্নের বিকল্প প্রশ্ন থাকবে।
আরও পড়ুন: উচ্চমাধ্যমিকে বাংলায় লেটার পেতে কী লিখবে-কীভাবে লিখবে? সাজেশন বিশিষ্ট শিক্ষিকার
জীববিদ্যার মোট পাঁচটি ইউনিট রয়েছে। এরমধ্যে ইউনিট ১, ইউনিট ২ ও ৫ থেকে পাঁচ নম্বরের একটি করে প্রশ্ন থাকবে। প্রতিটি ইউনিট থেকে দুই নম্বর ও তিন নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। ইউনিট ১-এর বিষয়বস্তু হল রিপ্রোডাকশন বা প্রজনন। ইউনিট ১-এ যে যে বিষয়ের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার সেগুলি হল-
স্ত্রী লিঙ্গধরের বা ফিমেল গ্যামেটোফাইট এর উৎপত্তি, একটি পরিণত ডিম্বকের গঠন, ইতর পরাগযোগ সংক্রান্ত কৌশল, পরাগ গর্ভকেশর প্রতিক্রিয়া, ভ্রূণের বিকাশ (মনো কট এবং ডাইকট), অ্যা পো মিক্সিস, পার্থেনো কারপি এবং পার্থেনোজেনেসিস, ফল ও বীজ গঠনের তাৎপর্য, শুক্রাশয়ের আণুবীক্ষণিক গঠন, উজেনেসিস/ স্পার্মাটোজেনেসিস, শুক্রানুর গঠন চিত্র, মানুষের নিষেক প্রক্রিয়া, ব্লাস্তুলা ও গাস্ট্রুলা পার্থক্য, গ্রাফিয়ান ফলিকলের চিত্র, হেপাটাইটিস বি লক্ষণ, রোগ বিস্তার ও প্রতিকার, এ আর টি (আই ভি এফ, জি আই এফ্ টি, জেড আই এফ্ টি), সার্জিক্যাল মেথড অফ বার্থ কন্ট্রোল( টিউবেক টমি, ভাসেকটমি), জন্ম নিয়ন্ত্রণে হরমোন ঘটিত পদ্ধতি।
জেনেটিক্স অ্যান্ড ইভোল্যুশন:
জিন ও ক্রোমোজোমের সমান্তরাল আচরণ, মেন্ডেলের স্বাধীন বিন্যাস সূত্রটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে ব্যাখ্যা, পলিজেনিক উত্তরাধিকার উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা, মৌমাছির লিঙ্গ নির্ধারণের পদ্ধতি, থ্যালাসেমিয়ার কারণ, লক্ষণ ও তার বংশগতি, ডাউন সিনড্রোমের ক্যারিওটাইপ, উৎপত্তির কারণ ও নিদানিক বৈশিষ্ট্য, টেস্ট ক্রস ও ব্যাক ক্রস এর ধারণা, ট্রান্সক্রিপশন পদ্ধতি ব্যাখ্যা, হারসে ও চেজের পরীক্ষার সাহায্যে ডিএনএ জেনেটিক বস্তু প্রমাণ কর, হিউম্যান জিনোম প্রজেক্ট, ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং এর মূলনীতি ,পদ্ধতি ও প্রয়োগ ডিএনএ প্রতিলিপি করন পদ্ধতি, ডিএনএ প্রতিলিপি করনে বিভিন্ন উৎসেচকের ভূমিকা, প্রাকৃতিক নির্বাচন ও নয়া ডারউইনবাদ, বায়োজেনেটিক সূত্র, ভিযোজনগত বিকিরণ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেলানিজম, জেনেটিক ড্রিফট এর ব্যাখ্যা, হোমোইরেকটাস ও ক্রমাগনাম মানুষের বৈশিষ্ট্য।
জীববিদ্যা ও মানব কল্যাণ:
ম্যালেরিয়ার প্রকারভেদ, রোগের বিস্তার, প্রতিকার ও নিয়ন্ত্রণ, ম্যালেরিয়ার জীবাণুর জীবন চক্র, মদ্যপানের শ্রেণীবিভাগ, কুফল ও চিকিৎসা পদ্ধতি, ক্লোন নির্বাচন, পলিপ্লয়েডির ব্যবহার, সোমেটিক হাইব্রিডাইজেশন
সিঙ্গেল সেল প্রোটিন, পোল্ট্রি পাখির রোগ ও প্রতিকার, সিউএজ ট্রিটমেন্ট, বায়ো গ্যাসের উপাদান, উৎপাদন ও ব্যবহার, পেস্টের জৈবিক নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, কোষভিত্তিক ও রসভিত্তিক অনাক্রমতার পার্থক্য, T লিম্ফোসাইট এবং B লিম্ফোসাইট, সক্রিয় এবং নিষ্ক্রিয় অনাক্রমতা।
জৈব প্রযুক্তি ও তার প্রয়োগ:
জৈব প্রযুক্তিবিদ্যার মূলনীতি, BT শস্য উৎপাদন পদ্ধতি, ট্রান্সজেনিক উদ্ভিদ ও প্রাণী, TI প্লাসমিড
পি বি আর ৩২২, আদর্শ ক্লোনিং ভেক্টরের বৈশিষ্ট্য, বায়ো পেটেন্ট, গোল্ডেন রাইস, জেল ইলেকট্রোফোরেসিস
বায়োসেফটি, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জৈব প্রযুক্তির প্রয়োগ, জিন থেরাপি (SCID), প্যালিনড্রোমিক সিকুয়েন্স উইথ রেস্ট্রিকশন এনজাইম, মিনি স্যাটেলাইট ও তার গুরুত্ব, রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ টেকনোলজিতে ডিএনএ লাইগেজ, রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ উৎসেচকের ভূমিকা।
বাস্তুবিদ্যা ও পরিবেশ:
পপুলেশন বৃদ্ধির J ওস আকৃতির লেখচিত্র, প্যাটার্ন অফ পপুলেশন, বাস্তুতান্ত্রিক সংগঠনের মাত্রা (বায়োটিক কমিউনিটি, ল্যান্ডস্কেপ, বায়োম), হ্যাবিটেড ও নিচ মৃত্তিকা প্রোফাইল, ইউরি হ্যালাইন ও স্টেনো হ্যালাইন মাছ, হ্যালোফাইট, হেলিওফাইট ও সিওফাইট উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য, উদাহরন: কমেনসালিসম ও আমেন্সালিসম বয়স ভিত্তিক পিরামিড, বাস্তু তন্ত্রের শক্তি প্রবাহের বৈশিষ্ট্য, ফসফরাস চক্র, উদ্ভিদ পর্যায়ক্রম, খাদ্যশৃংখল ও খাদ্যজাল, হটস্পট অঞ্চল, বায়োসফিয়ার রিজার্ভ, সংরক্ষণে জেএফএম ও পবর এর ভূমিকা আলোক রাসায়নিক ধোঁয়া, আর্সেনিক দূষণ ও প্রতিককার, জলাভূমিকে প্রকৃতির বৃক্ক বলে কেন, তেজস্ক্রিয় দূষণের ধারণা, অম্ল বৃষ্টি, ইউট্রোফিকেশন, বায়ো ম্যাগনিফিকেশন, চিপকো আন্দোলন, সাইল্যান্ট্ ভ্যালি আন্দোলন, ন্যাটালিটি ও মটালিটির পার্থক্য, বায়োটিক পোটেনশিয়াল, PAN, cryo প্রিজারভেশন, জিন ব্যাংক, বাঘ ও গন্ডারের ইন সিটু সংরক্ষণ, মানুষের উপর শব্দ দূষণের প্রভাব, গঙ্গা দূষণের কারণ ও প্রতিকার।
উল্লেখিত বিষয়গুলি পাঠ্য বই থেকে ভাল করে পড়ে নিতে হবে। কোনও টপিক বা স্কিম্যাটিক ডায়াগ্রাম (schematic diagram) থাকলে তা নোটবুকে নোট করে নিতে হবে। মনযোক সহকারে উল্লেখিত বিষয়গুলি বারবার পড়ে ও বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারনা তৈরি করে নিলে, আশা করি সকলের পরীক্ষা ভাল হবে।