হিয়ারিং কবে শুরু? পশ্চিমবঙ্গের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। এবার শুরু হবে হিয়ারিং পর্ব। ২০০২ সালে SIR-এ যাঁদের নাম নেই, যাঁদের কোনও আত্মীয়ের সঙ্গেই লিঙ্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি তাঁদেরই কেবলমাত্র এই হিয়ারিং পর্বে ডেকে পাঠানো হবে, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। খসড়া তালিকায় নাম থাকলেও ডাক পড়বে অনেকেরই। দেখাতে হবে নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট করে দেওয়া ১১টি নথির মধ্যে যে কোনও একটি।
ইতিমধ্যেই প্রায় ৫৮ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছে ভোটার তালিকা থেকে। কমিশনের খাতায় যাঁরা মৃত, স্থায়ী ভাবে স্থানান্তরিত, যাঁদের খুঁজে পাওয়া যায়নি বা এনিউমারেশন পর্বে অনুপস্থিত থেকেছেন, মূলত তাঁদের নামই আপাতত বাদের তালিকায়। এনিউমারেশন পর্বে যাঁরা নিয়ম মেনে অংশ নিয়েছেন, তাঁদের সকলেরই নাম রয়েছে খসড়া তালিকায়। তা সত্ত্বেও হিয়ারিং পর্বে যেতে হবে অনেককেই।
কাদের ডাকা হবে হিয়ারিংয়ে?
> যাঁদের ম্যাপিং সম্ভব হয়নি, তাঁদের ডাকা হবে হিয়ারিংয়ে। এই সংখ্যাটা প্রায় ৩০ লক্ষ।
> ২০০২ সালের SIR-এর লিঙ্ক হয়নি, অথচ ২০২৬-এর খসড়ায় নাম আছে, তাঁদের ডাকা হবে।
> কমিশনের logical discrepancy তালিকায় নাম আছে যাঁদের, ডাক পাবেন তাঁরা। এই সংখ্যাটা প্রায় ১ কোটি ৬৭ লক্ষ।
> প্রোজেনি ম্যাপিং ও সেল্ফ ম্যাপিংয়ে নাম থাকলেও ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
> এনিউমারেশন ফর্মে যদি বাবা-ছেলের বয়সের তফাত সন্দেহজনক হয়, প্রোজেনি ম্যাপিংয়ে যদি গরমিল থাকে, ডাক পড়বেই।
> জেন্ডার মিসম্যাচ হলেও ডাক পড়বে হিয়ারিংয়ে।
নতুন করে আবেদন করবেন কীভাবে?
যে ৫৮ লক্ষের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের কেউ যদি ভোটার হিসেবে আবেদন করতে চান, অর্থাৎ এনিউমারেশন পর্বে কোনও কারণে অনুপস্থিত থেকেছেন বা স্থানান্তরিত সংক্রান্ত তথ্য ভুল বলে মনে করছেন, জীবিত থাকার পরেও মৃত তালিকায় নাম উঠেছে, এরকম ভোটাররা ৬ নম্বর ফর্মের সঙ্গে ডিক্লেরেশন ফর্ম ও সাপোর্টিং ডকুমেন্ট দিয়ে নতুন করে আবেদন করতে পারবেন।
SIR হিয়ারিংয়ে কী কী নথি দেখাতে হবে?
> কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকারের কর্মী হিসাবে কাজ করেছেন অথবা পেনশন পান এমন পরিচয়পত্র।
> ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, LIC, স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া যে কোনও নথি।
> বার্থ সার্টিফিকেট
> পাসপোর্ট
> মাধ্যমিক বা তার পরের শিক্ষাগত যোগ্য়তার সার্টিফিকেট
> রাজ্য সরকারের অধীনস্থ কোনও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া বাসস্থানের সার্টিফিকেট
> ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট
> জাতিগত সার্টিফিকেট
> জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (শুধু অসমের ক্ষেত্রে)
> স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া ফ্য়ামিলি রেজিস্টার
> সরকারের দেওয়া ল্য়ান্ড অথবা হাউস অ্য়ালটমেন্ট সার্টিফিকেট
কবে হিয়ারিংয়ের নোটিশ?
হিয়ারিংয়ের জন্য ভোটারের কাছে নোটিশ যাওয়া শুরু হবে ১৭ ডিসেম্বর, বুধবার থেকে। সেই নোটিশ BLO নিয়ে যাবেন বলেই খবর। তবে মেসেজ বা ফোনের মাধ্যমে হিয়ারিংয়ের জন্য ডাকা হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
কবে, কোথায় হিয়ারিং হবে?
২৩ ডিসেম্বর থেকে হিয়ারিং শুরু হবে। প্রতিটি বিধানসভার জন্য একজন করে ERO, ১০ জন AERO আছেন। এই ১১ জন আধিকারিক হিয়ারিং টেবিলে থাকতে পারেন।
প্রতিদিন কতজনের হিয়ারিং?
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, প্রথমে প্রতিদিন ৫০ জন করে ডাকার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে যে সংখ্যক হিয়ারিংয়ে ডাক পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে, তাতে প্রতিদিন ৫০ জন করে ডাকলে এই পর্ব শেষ করা মোটে সহজ হবে না। তাই ৫০টা দ্বিগুণ হয়ে ১০০ হতে পারে।