ফ্যাক্ট চেক: ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর বিরুদ্ধে নাবালিকা পাচারের অভিযোগ! ভাইরাল প্রতিবেদনটি AI দিয়ে তৈরি

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে ভাইরাল প্রতিবেদনের ভিডিওটি কোনও আসল ঘটনার নয়। পুরো ভিডিওটি এআই দ্বারা তৈরি। সেই সঙ্গে ধীরেন্দ্রকষ্ণ শাস্ত্রীর আশ্রম থেকে নাবালিকা পাচারের কোনও অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যায়নি।

Advertisement
ফ্যাক্ট চেক: ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর বিরুদ্ধে নাবালিকা পাচারের অভিযোগ! ভাইরাল প্রতিবেদনটি AI দিয়ে তৈরি

গত ৭ ডিসেম্বর কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ অনুষ্ঠানে যোগদান করেছিলেন বাগেশ্বর ধামের ধর্মগুরু ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী। এই ঘটনার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রতিবেদনের ক্লিপ বেশ ভাইরাল হতে শুরু করেছে। এই ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, বাগেশ্বর বাবা হিসেবে পরিচিত ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর আশ্রম থেকে নাকি নাবালিকা পাচারের অভিযোগ উঠেছে।

ভাইরাল এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কোনও এক সংবাদ সঞ্চালিকা বলছেন, ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর আশ্রম থেকে নাবালিকা শিশুদের পাচারের ঘটনা সামনে এসেছে। ইনিই সেই বাবা যে সবাইকে হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখাতেন এবং সবার ভবিষ্যৎও বলতেন। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকজন নাবালিকা শিশুকে উদ্ধার করেছে। ধীরেন্দ্র এবং তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করা হয়েছে।

কথিত প্রতিবেদনের ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “বাগেশ্বর বাবা ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রীর আশ্রম থেকে নাবালিকা বাচ্চাদের পাচার করার অভিযোগ উঠেছে। নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেসব সাধু,সন্ন্যাসীরা নতুন ভাবে গজিয়ে উঠেছে তারা সবাই পাখণ্ডী/নাবালিকা পাচারকারী/ধর্ষক। এদেরকে নিয়েই নরেন্দ্র মোদি সংসার করছে।”

আজতক ফ্যাক্ট চেক অনুসন্ধান করে দেখেছে ভাইরাল প্রতিবেদনের ভিডিওটি কোনও আসল ঘটনার নয়। পুরো ভিডিওটি এআই দ্বারা তৈরি। সেই সঙ্গে ধীরেন্দ্রকষ্ণ শাস্ত্রীর আশ্রম থেকে নাবালিকা পাচারের কোনও অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া যায়নি।

সত্য উদঘাটন

তথাকথিত প্রতিবেদনের ভাইরাল ভিডিওটি ভালোভাবে লক্ষ্য করলেই সেখানে বেশ কিছু বড় অসঙ্গতি নজরে পড়ে, যা থেকে অনুমান করা যায় যে ভিডিওটি এআই দ্বারা তৈরি। প্রথমত, কথিত প্রতিবেদনটি ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর বিষয়ে হলেও প্রতিবেদনের প্রথমেই অন্য কোনও ব্যক্তিকে গেরুয়া বস্ত্র পরে দেখানো হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, ভিডিওতে থাকা হিন্দি লেখার বর্ণগুলি কোনওটা অস্পষ্ট, কোনও বর্ণ আবার আজগুবি, যার অস্তিত্বই নেই। তৃতীয়ত, ভিডিওতে যে পুলিশের গাড়ি দেখা যাচ্ছে তার উপর, যে বিকন বা সাইরেন লাইট লাগানো রয়েছে, তা পিছনের দিকে। এই ধরনের লাইট ভারতীয় পুলিশের কোনও গাড়িতে দেখা যায় না।

Advertisement

এই বিষয়গুলি থেকে অনুমান করা যায় যে ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই দ্বারা তৈরি করা হয়ে থাকতে পারে। হাইভ মডারেশনের মতো এআই যাচাইকারী টুলের সহায়তায় ভিডিওটি সার্চ করা হলে দেখা যায়, এই ভিডিওটিকে ৯৯.৮ শতাংশ এআই দ্বারা তৈরি বলে ফলাফল আসছে।

ভাইরাল ভিডিওগুলি থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে তা খোঁজা হলে ওই একই ভিডিও একটি ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে পাওয়া যায়। @news_wala_hi_kehde_ ইউজারনামের ওই হ্যান্ডেল খতিয়ে দেখলে এই ধরনের অসংখ্য ভিডিও আমাদের চোখে পড়ে, যা সবগুলি মূলত এআই দ্বারাই নির্মিত।


বাগেশ্বর ধামের ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর আশ্রমে কোনও ধরনের নাবালিকা পাচারে অভিযোগ নিয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করা হলে এই সংক্রান্ত কোনও বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তবে গত অগস্ট মাসে লখনউয়ের এক অধ্যাপক সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ তুলেছিলেন যে ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর আশ্রম থেকে নারীপাচারের ঘটনা ঘটছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই অভিযোগ তোলার পরই পাল্টা ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী ক্যামেরার সামনে এসে সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দেন। সেই সঙ্গে বাগেশ্বর ধামের তরফ থেকে ওই অভিযোগকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়।

ফলে সবমিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছে যে এআই নির্মিত একটি প্রতিবেদন পোস্ট করে ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর আশ্রমে নাবালিকা পাচারের অভিযোগের খবর প্রচার করা হচ্ছে, যা আসলে ভিত্তিহীন।

ফ্যাক্ট চেক

Social Media Users

দাবি

এই ভিডিও প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, বাগেশ্বর ধামের ধর্মগুরু ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর আশ্রমে নাবালিকা পাচারের অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

ফলাফল

এই সম্পূর্ণ ভিডিওটি এআই দ্বারা নির্মিত। বাগেশ্বর ধামের ধর্মগুরু ধীরেন্দ্র শাস্ত্রীর আশ্রমে নাবালিকা পাচারের অভিযোগের কোনও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

ঝুট বোলে কাউয়া কাটে

যত বেশি কাক তত বেশি মিথ্যে

  • কাক: অর্ধসত্য
  • একাধিক কাক: বেশির ভাগ মিথ্যে
  • অনেক কাক: সম্পূর্ণ মিথ্যে
Social Media Users
আপনার কী মনে হচ্ছে কোনও ম্যাসেজ ভুয়ো ?
সত্যিটা জানতে আমাদেরসংখ্যা73 7000 7000উপর পাঠান.
আপনি আমাদেরfactcheck@intoday.com এ ই-মেইল করুন
POST A COMMENT
Advertisement